শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
ইতিহাসে জঘন্য ও বর্বরোচিত পিলখানা হত্যার দশ বছরেও এ মামলার বিচার কাজ হয়নি শেষ

ইতিহাসে জঘন্য ও বর্বরোচিত পিলখানা হত্যার দশ বছরেও এ মামলার বিচার কাজ হয়নি শেষ

মতিহার বার্তা ডেস্ক :ইতিহাসে জঘন্য ও বর্বরোচিত পিলখানা হত্যা মামলার বিচার চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলেও বিস্ফোরক আইনের মামলা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ১০ বছরে এ মামলার বিচার কাজ শেষ হয়নি। কবে বিচার কার্যক্রম শেষ হবে তা নির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারছেন না।

বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়া প্রসঙ্গে মামলার পাবলিক প্রসিকিউশন মোশারফ হোসেন কাজল যুগান্তরকে বলেন, বিস্ফোরক আইনে করা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এ পর্যন্ত শতাধিক সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছে। আগামী ৬ মার্চ এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ রয়েছে। আশা করছি এ বছরের মধ্যে এ মামলার রায় হবে।

২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার পিলখানায় বিদ্রোহী জওয়ানদের হাতে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। রক্তাক্ত সেই বিদ্রোহে বেসামরিক ব্যক্তিসহ মোট ৭৪ জন প্রাণ হারান। ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে জওয়ানদের বিদ্রোহ। প্রতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা ট্র্যাজেডি দিবস পালিত হয়।

বিডিআর বিদ্রোহের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। দুই কমিটির প্রতিবেদনে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার বিচার সেনা আইনে করার সুপারিশ করা হলেও উচ্চ আদালতের মতামতের পর সরকার প্রচলিত আইনে এর বিচার করে। নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারকে আর্থিক সুবিধাও দেয়া হয়।

সূত্র জানায়, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় অধিনায়কদের সামারি ট্রায়ালে সবচেয়ে বেশি লোকের সাজা হয়। এতে ১১ হাজার ২৬৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। তাদের মধ্যে ১০ হাজার ৯৭৩ জনের বিভিন্ন ধরনের সাজা হয়। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে আট হাজার ৭৫৯ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। বাকিরা প্রশাসনিক দণ্ড শেষে আবার চাকরিতে যোগদান করেন।

দ্বিতীয় পর্যায়ে বিশেষ আদালত গঠন করে ছয় হাজার ৪৬ জন জওয়ানকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। এসব মামলায় পাঁচ হাজার ৯২৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়। তাদের প্রত্যেককে চাকরিচ্যুত করা হয়। আর বেকসুর খালাসপ্রাপ্ত ১১৫ জন চাকরি ফিরে পান। বিচার চলার সময় পাঁচজনের মৃত্যু হয়।

বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় দুটি ফৌজদারি মামলা করা হয়। এর একটি ছিল খুনের মামলা আর অন্যটি বিস্ফোরক মামলা। খুনের মামলায় ৮৫০ জনের বিচার ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকার জজ আদালতে শেষ হয়। এতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

আর ২৭৮ জন খালাস পান। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে হাইকোর্ট রায় দেন। এদিকে, ফৌজদারি আদালতে দায়ের করা বিস্ফোরক মামলায় ৮৩৪ জন আসামি রয়েছে। এ মামলার শতাধিক সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। আগামী ৬ মার্চ নতুন দিন ধার্য রয়েছে।

হাইকোর্টে হত্যা মামলার সর্বশেষ অবস্থা : পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দফতরে বিদ্রোহের ঘটনায় সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার দায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির রায়ে ১৮৫ জনকে হাইকোর্ট যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। তিন থেকে ১০ বছরের সাজা হয়েছে ২২৮ জনের। সব মিলিয়ে অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন মোট ২৮৮ জন। অভিযুক্ত ৮৪৬ জন আসামির মধ্যে বাকি ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।

২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ সর্বসম্মত এ রায় দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সংখ্যার দিক দিয়ে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এ মামলায় হাইকোর্টের প্রায় ১০ হাজার পৃষ্ঠার রায় দু’দিন ধরে ঘোষণা করা হয়।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, আট বছর আগে সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে সংঘটিত বিদ্রোহের পেছনে ছিল ‘স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র’। জজ আদালতের মতো হাইকোর্টও বলেছেন, ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির মতো কাজে সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে জড়ানো ঠিক নয়।

একইসঙ্গে কর্মকর্তা ও সৈনিকদের মধ্যে পেশাদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা, অধস্তনদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক মানসিকতার পরিবর্তন এবং তাদের কোনো ক্ষোভ থাকলে তার প্রশমনের তাগিদ এসেছে হাইকোর্টের রায়ে। বিদ্রোহের আগে গোয়েন্দারা কেন তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছিল- তাও সরকারকে তদন্ত করে দেখার সুপারিশ করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি এখনও প্রকাশিত হয়নি।

জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সারোয়ার কাজল যুগান্তরকে বলেন, বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. শওকত হোসেন এ পর্যন্ত তার অংশের ১১৪১২ পৃষ্ঠার রায় লেখে অন্য বিচারপতির কাছে দিয়েছেন। অবশিষ্ট রায় লেখা শেষে প্রকাশ করা হবে। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পর সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে আপিলের সুযোগ পাবেন।

মতিহার বার্তা ডট কম ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

 

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply