আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ৫৫ ঘণ্টার লড়াই শেষ৷ ঘরের ছেলে ফিরে এলেন ঘরে৷ তবে এই যুদ্ধ এখানেই শেষ নয়৷ দেশে ফিরেও এক অন্য পরীক্ষার মুখে বসতে হবে তাঁকে৷ ঠিক যেন রাবণের লঙ্কাপুরী থেকে ফিরে অগ্নিপরীক্ষার মুখে পড়তে হয়েছিল সীতাকে৷
তাঁর সাহসিকতা এখন লোকের মুখে মুখে৷ তিনি উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান৷ যিনি শত্রুর পাক জমিনে হামলা করতে গিয়ে পাক সেনার হাতে বন্দি হন৷ পাক সেনা তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয়৷ শুরু হয় অভিনন্দনের অন্য লড়াই৷ এই লড়াই কখন থামবে জানতেনও না তিনি নিজেও৷ তবুও ভেঙে পড়েননি৷ প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি।
এবার দেশে ফিরে অগ্নিপরীক্ষার মুখে অভিনন্দন৷ দু’দিনের বেশি সময় শত্রুদের সঙ্গে ও তাদের মাঝে কাটিয়ে এসেছেন তিনি৷ যেহেতু অভিনন্দন যুদ্ধবন্দি ছিলেন সেহেতু বায়ুসেনার নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে কিছু পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে৷ কি সেই পরীক্ষা জেনে নেওয়া যাক৷
প্রথমেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে ভারতীয় বায়ুসেনার ইনটেলিজেন্স ইউনিটের কাছে৷
এরপর কিছু মেডিক্যাল ও ফিটনেস পরীক্ষা করা হবে তাঁর৷
পুরো শরীরের স্ক্যানিং হবে৷ অনেক সময় যুদ্ধবন্দি সেনা অফিসারদের শরীরে মাইক্রোচিপ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়৷ সেই চিপের মাধ্যমে সেই দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য আদায় করে শত্রু দেশ৷ তাই এই স্ক্যানিং খুব জরুরি৷
বায়ুসেনার এই উইং কমান্ডারকে সাইকোলজিক্যাল পরীক্ষাও দিতে হবে৷ বন্দি থাকাকালীন অনেক ট্রমা ও মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে৷ তাঁর মুখ থেকে তথ্য আদায় করতে অনেক নৃশংস পন্থা অবলম্বন করতে পারে পাকিস্তান৷ তাই এই পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি৷
বায়ুসেনার অফিসারকে র বা আইবির আধিকারিকদের জেরার মুখে পড়তে হতে পারে৷ সাধারণত বায়ুসেনার আধিকারিকদের গুপ্তচর বা কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থা জেরা করতে পারে না৷ কিন্তু অভিনন্দনের কেসটি আলাদা৷ তিনি পাকিস্তানে দু’দিনের বেশি সময় ছিলেন৷
সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা- নিজের অফিসারদের অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে অভিনন্দনকে৷ অফিসারদের কাছে নিজের বিশ্বস্ততার প্রমাণ দিতে হবে৷ তাঁকে প্রমাণ দিতে হবে তিনি এখনও ভারতীয় বায়ুসেনার একজন বীর অফিসার৷ ছলে বলে ভয় দেখিয়ে পাকিস্তান তাঁকে চর বানাতে পারেনি৷
বায়ুসেনার এক অফিসার জানিয়েছে, এর কোনও একটি পরীক্ষায় ফেল করলে ককপিটে আর বসা হবে না উইং কমান্ডারের৷ তাঁকে ডেস্কের কাজে বসিয়ে দেওয়া হতে পারে৷ তবে এখনই এই সব বলার সময় আসেনি৷
বায়ুসেনা আশাবাদী যেরকম সাহসের পরিচয় দিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ জয় করে দেশে ফিরেছেন সেই একই ভাবে এই পরীক্ষাগুলিতেও সসম্মানে পাশ করে যাবেন৷
মতিহার বার্তা ডট কম ০১ মার্চ ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.