রাজশাহীতে চিকিৎসকের ত্রুটিপূর্ণ অপারেশনে প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ

রাজশাহীতে চিকিৎসকের ত্রুটিপূর্ণ অপারেশনে প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ

রাজশাহীতে চিকিৎসকের ত্রুটিপূর্ণ অপারেশনে প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ
রাজশাহীতে চিকিৎসকের ত্রুটিপূর্ণ অপারেশনে প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর তানোরে চিকিৎসকের ত্রুটির্পূ অপারেশনের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃত প্রসূতির নাম মোসা: সুলতানা বেগম (২৩)। তিনি উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের (ইউপি) কাঁসারদীঘি গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ এপ্রিল দিবাগত রাতে প্রসব বেদনা হলে সুলতানা বেগমকে তানোর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু সেখানে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু নিউ মডার্ন হাসপাতালের মালিক সাহাদাৎ হোসেন উন্নত চিকিৎসার প্রলোভন দিয়ে তড়িঘড়ি করে প্রসূতিকে নিজের ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করান। পরে সেখানে চিকিৎসক ফরিদা ইয়াসমিন মুনমুনকে দিয়ে প্রসূতির অপারেশন করান। অপারেশনের পর বাচ্চা সুস্থ থাকলেও প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। এসময় প্রসূতির রক্ত লাগবে বলে তাকে রামেক হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন চিকিৎসক ফরিদা ইয়াসমিন। সে মোতাবেক রামেক হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই রোগীর মৃত্যু হয়। পরে রোগীর পরিবারের লোকজন মডার্ন ক্লিনিকে হট্টগোল শুরু করলে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টির আশংকা দেখা দেয়।

এসময় ক্ষুব্ধ লোকজন অভিযোগ করে বলেন, চিকিৎসকের ত্রুটিপূর্ণ অপারেশনের কারণে অতিরিক্ত রক্ষক্ষরণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ওই চিকিৎসকের কয়েকটি সনদ ভুয়া বলেও অভিযোগ করেন তারা। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে গভীর রাতেই দেনদরবারের মাধ্যমে ভুক্তভোগীর পরিবারের সাথে সমঝোতা করে নেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসক ফরিদা ইয়াসমিন মুনমুন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নিহতের পরিবারের লোকজন বলেন, যা হবার তা হয়েছে। এ বিষয়ে আপনাদের সাথে কথা বলে কি লাভ। অভিযোগ করলে পুলিশ কবর থেকে লাশ তুলে হাসপাতাল মর্গে পাঠাবে। কাটা ছেঁড়া করবে। তাই তারা এ বিষয়ে রিপোর্ট না করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানান।

জানতে চাইলে মডার্ন ক্লিনিকের পরিচালক সাহাদৎ হোসেন বলেন, চিকিৎসক ফরিদা ইয়াসমিন মুনমুন খুব ভালো ডাক্তার। তিনিই প্রসূতি রোগী সুলতানা বেগমের অপারেশন করেছিলেন। পরে রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে চিকিৎসক ফরিদা ইয়াসমিনের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীকে রামেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিকিৎসক ফরিদা ইয়াসমিন রাজশাহী নগরীর লক্ষীপুরে অবস্থিত বসুন্ধরা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও নিয়মিত রোগী দেখেন। এছাড়া তিনি নওগাঁ জেলার সাপাহারে সাইন ল্যাব নামে একটি ক্লিনিকে প্রতি শুক্রবার রোগী দেখেন।

তবে জানতে চাইলে চিকিৎসক ফরিদা ইয়াসমিন মুনমুন দাবি করে বলেন, আমি ওই রোগীর অপারেশন করিনি। এক প্রশ্নের জবাবে চিকিৎসক ফরিদা ইয়াসমিন তার সকল সনদই সঠিক বলে দাবি করেন। তবে এ প্রতিবেদককে পরে দেখা করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

এবিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, এ রকম কোন ঘটনার কথা তার জানা নেই। থানায় কেউ কোনো অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply