মতিহার বার্তা ডেস্ক : বিরোধী দলকে দমন করতে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম আনছে সরকার, কিন্তু মানুষকে বাঁচানোর কোন পরিকল্পনা নেই। আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার দায় সম্পূর্ণ সরকারের বলে মন্তব্য করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। সকালে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে মর্মান্তিক মৃত্যুর শোক কাটতে না কাটতেই বনানীর এফআর টাওয়ারের আগুনে পুড়ে মৃত্যুর ট্র্যাজেডি দেশবাসীকে শোকে বেদনায় নির্বাক করে দিয়েছে।
বিএনপি এ নেতা বলেন, জবাবদিহিবিহীন সরকার থাকার কারণেই মৃত্যুর মিছিল থামছে না। এরা বিভিন্ন দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সঠিক সংখ্যাটিও প্রকাশ করে না। এরা ক্ষমতার মোহে এতটাই পাগল যে, মানুষের নিরাপত্তা দেয়ার কথা বেমালুম ভুলে যায়।
দেশে সুশাসন থাকলে এই অব্যবস্থাপনা চলতো না বলে মন্তব্য করেন রিজভী। তিনি বলেন, ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা হয়নি, উঁচু তলার ভবনগুলোর কোনো নির্গমন পথ নেই, ভবনগুলোতে অগ্নিপ্রতিরোধক ব্যবস্থা নেই।
তিনি আরও বলেন, ভবন তদারকির দায়িত্ব সরকারের। ২২ তলার আগুন নেভাতে পারছে না, উন্নয়নের বুলির নামে তারা ধোয়া তুলছে বলেও জানান। পুরনো আমলের সরঞ্জাম দিয়ে চলছে, আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই।
ফায়ার সার্ভিস আধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত করলে এত বড় ঘটনা ঘটে না। আগুনে পুড়ে মানুষ মরার দায় সম্পূর্ণ সরকারের। এবং ক্ষমতাশীলরা জড়িত আছে বলেই বিল্ডিং কোড মানা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
‘সবই সেকেলে ও মান্ধাতার আমলের। হেলিকপ্টারের সঙ্গে ঝোলানো বালতিতে হাতিরঝিল থেকে পানি নিয়ে বিল্ডিংয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে সেই বালতির সব পানি ফুটো তলানি দিয়ে ঝরে গেছে।
অথচ উন্নত দেশে আগুন নেভাতে ও মানুষ উদ্ধারে কত আধুনিক সরঞ্জাম ও ব্যবস্থাপনা দেখতে পাওয়া যায়।’
রিজভী বলেন, গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে দমন করার জন্য কত যে আধুনিক মারণাস্ত্র নিয়ে আসা হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। নিয়ে আসা হয়েছে সর্বাধুনিক বিপজ্জনক টিয়ারশেল, স্মোক গ্রেনেড, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট, গোলমরিচ-স্প্রেসহ নানা ধরনের আধুনিক অস্ত্র।
তিনি বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য, মানুষ হত্যার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে ৩০ হাজার আধুনিক মারণঘাতি ১২ বোর শর্টগান। শর্টগানের জন্য ৩০ লাখ কার্তুজ আমদানি করা হয় হাজার কোটি টাকা শ্রাদ্ধ করে।
‘স্বীকারোক্তি আদায় বা নির্যাতনের জন্য আনা হয়েছে ইলেকট্রিক চেয়ার ও ইলেকট্রিক শক দেয়ার অত্যাধুনিক ডিভাইস। বিরোধী দলের ফোনে আড়িপাতার জন্য বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত যন্ত্রপাতি নিয়ে আসা হয়েছে। গোপনে অডিও-ভিডিও করার উন্নতমানের ডিভাইস নিয়ে আসা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলার বিভিন্ন বাহিনীকে হেলিকপ্টার দেয়া হয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে।’
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, মানুষ হত্যার জন্য ব্যয়বহুল আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে কিন্তু মানুষ বাঁচানোর জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতির কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। যে সরকার দাবি করে মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠিয়ে মহাকাশ জয় করেছে, অথচ মানুষ বাঁচানোর জন্য সেই সরকারের কোনো আগ্রহ নেই। দেশের জনগণ মনে করে এই আগুনে পুড়ে মানুষগুলো মরার দায় শেখ হাসিনার সরকারের।
মতিহার বার্তা ডট কম ৩০ মার্চ ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.