মতিহার বার্তা ডেস্ক : উদ্বোধন হয়েছে রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটে নতুন বিরতিহীন ট্রেন ‘বনলতা এক্সপ্রেস’। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ট্রেনটি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মূলত বাংলাদেশে আনার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এই অত্যাধুনিক ট্রেনটি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রেনটি সুবিধা সমূহ প্রশংসা কুড়িয়েছে নিন্দুকেরও। ঢাকা-রাজশাহী রুটের যাত্রীরা যেন অপেক্ষায় ছিলেন কবে চালু হবে এই ট্রেনটি।
জানা যায়, এই ট্রেনের ব্যবহৃত ব্রডগেজ কোচসমূহ এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এর অর্থায়নে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য মিটারগেজ ও ব্রডগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা হয়েছে। দ্রুতগতির বিরতিহীন আধুনিক এ ট্রেন পরিচালনার ফলে রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণের নিরাপদ আসা-যাওয়া সহজ, দ্রুত ও আরামদায়ক হবে।
এর কোচসমূহের অন্যতম নতুন বৈশিষ্ট্য হল- বায়ো-টয়লেট সংযোজন। ট্রেনটিতে রয়েছে প্রতিবন্ধী যাত্রীদের হুইল চেয়ারসহ চলাচলের সুবিধার্থে টয়লেট ও প্রবেশ উভয় জায়গায় থাকছে প্রশস্ত দরজা এবং নির্ধারিত আসনের সুবিধা। প্রতিটি কোচ স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি, যা এটিকে মরিচা মুক্ত রাখবে। অত্যাধুনিক যাত্রী সুবিধা সম্বলিত এবং আরামদায়ক আসন ব্যবস্থা। প্রতিটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচে আধুনিক ও উন্নতমানের রুফ মাউন্টেড এয়ার কন্ডিশনার ইউনিট এবং এয়ার কার্টেইনের ব্যবস্থা রয়েছে।
ট্রেনটিতে রয়েছে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এলইডি লাইট। চলাচলরত অবস্থায় ধর্মীয় উপাসনার জন্যে রয়েছে ওযুখানা ও নামাজ ঘর। সুইং ডোর এর পরিবর্তে রয়েছে নিরাপদ স্লাইডিং ডোর। যাত্রীদের জন্য আধুনিক ও মানসম্মত চেয়ার, বার্থ, স্টেয়ার, পার্সেল রেক, টিভি মনিটর হ্যাঙ্গার, ওয়াই-ফাই রাউটার হ্যাঙ্গার, মোবাইল চার্জার এর ব্যবস্থা রয়েছে। রুফ রাইডার কর্তৃক পথের অনাকাঙ্ক্ষিত ট্রেন থামানো রোধে বিশেষভাবে ডিজাইনকৃত অ্যালার্ম চেইন পুলিং সিস্টেম। খাবার গাড়ির অত্যাধুনিক ডাইনিং সুবিধাদি রয়েছে ট্রেনটিতে।
১২ টি কোচ দ্বারা ট্রেনটি চলবে। এর মোট আসন সংখ্যা ৯২৮। এর মধ্যে এসি চেয়ার ১৬০টি, শোভন চেয়ার ৬৪৪ টি, খাবার গাড়ীতে আসন ১০৮ টি এবং পাওয়ার কারে ১৬ টি। শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন চলবে ট্রেনটি। ট্রেনটি রাজশাহী থেকে সকাল ৭ টায় ছেড়ে ঢাকা পৌঁছাবে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে, যা ঐ রুটে চলাচলরত অন্যান্য ট্রেনের তুলনায় বেশ দ্রুত। ঢাকা থেকে ছাড়বে বেলা ১টা ১৫ মিনিটে এবং রাজশাহী পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৬টায়।
এই ট্রেনের ভাড়া একই রুটে চলমান ট্রেনের ভাড়ার তুলনায় নন-স্টপ সার্ভিস চার্জ ১০% বেশি আরোপিত হবে। এছাড়া ট্রেনটিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রথম নিজস্ব ক্যাটারিং এন্ড ট্যুরিজম সার্ভিসেস (বিআরসিটিএস) দ্বারা খাবার সরবরাহ করা হবে। খাবারের ১৫০ টাকাসহ শোভন চেয়ারের মূল্য ৫২৫ টাকা এবং এসি চেয়ারের মূল্য ৮৭৫ টাকা।
সব মিলিয়ে আধুনিক এই ট্রেনটি ট্রেন ভ্রমণের এক নতুন অভিজ্ঞতা দিবে যাত্রীদের, এমনটিই প্রত্যাশা সকলের।
মতিহার বার্তা ডট কম – ২৬ এপ্রিল, ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.