শিরোনাম :
তরমুজ শুধু খেলে হবে না, গরমে মাখতেও পারেন লজ্জা ঢাকতে শেষমেশ গদি জড়িয়ে ছুটলেন উরফি! ভিডিয়ো ফাঁস হতেই চার দিকে শুরু শোরগোল কাফতান পরা মানেই কি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরে সিলমোহর? প্রশ্ন তুললেন পরিণীতি চোপড়া অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করে শ্রেণি বৈষম্য করেছে রাবি প্রশাসন! তানোর ইউএনও’র বিরুদ্ধে শিক্ষকের মামলা, তোলপাড় তরুণী সন্ধ্যা রানী হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন; সৎ ভাই ও তার বন্ধু গ্রেফতার রাজশাহী বিভাগীয় তায়কোয়ানদো এসোসিয়েশনের ইফতার ও দোয়া মাহফিল- ২০২৪ রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২১ মহানগরীর ছোটবনগ্রামে লোন দেওয়ার নামে প্রতারণা, প্রতারক তাওহীদ খান আটক নৌবাহিনীর প্রধানের সাথে রাসিক মেয়রের সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়
রাবি শিক্ষার্থীদের হামলা ও পুলিশের গ্রেফতার আতঙ্কে বিনোদপুর বাজার বন্ধ!

রাবি শিক্ষার্থীদের হামলা ও পুলিশের গ্রেফতার আতঙ্কে বিনোদপুর বাজার বন্ধ!

রাবি শিক্ষার্থীদের হামলা ও পুলিশের গ্রেফতার আতঙ্কে বিনোদপুর বাজার বন্ধ!
রাবি শিক্ষার্থীদের হামলা ও পুলিশের গ্রেফতার আতঙ্কে বিনোদপুর বাজার বন্ধ!

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের হামলার পর আতঙ্কে এখনো দোকান খুলতে পারছেন না বিনোদপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা। আন্দোলনে আগুন সন্ত্রাসের শিকার হয়ে পথে বসেছেন তারা। ফুটপাতে বসে প্রতিদিনের আয় দিয়ে যারা সংবার চালাতেন তাদের বাড়িতে এখন চূলা না জ্বলার উপক্রম। ব্যবসায়ী নেতাদের দাবি, এ ঘটনায় তাদের অন্তত আড়াই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ না দিলে মামলা করবেন তারা।
বিনোদপুর বাজার এলাকার একজন চা দোকানি মাহমুদা বেগম। একটি এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা কিস্তি নেওয়া আছে তার। স্বামী কাজ করতে পারেন না। সন্তানও ছোট। মা-ছেলে মিলে চায়ের দোকান চালান। শনিবার রাতের আগুনে পুড়ে গেছে তার আয়ের একমাত্র অবলম্বন দোকানটি। ফলে দুই দিন ধরে তার আয় রোজগার বন্ধ। ‘কিস্তির টাকা, সংসার খরচ কে দেবে? পুলিশ বলছে দোকান করা যাবে না। কোথায় যাব? কী খাবো’? ঘটনার ৪দিন পেরিয়ে গেছে। তবে স্বাভাবিক হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি। সবকিছুই যেন ঠিকঠাক আগের মতোই। কিন্তু আগুনে পোড়া বিনোদপুর বাজারের দোকানগুলোতে পোড়ানোর ক্ষত রয়েই গেছে। সব কিছু হারিয়ে পথে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে বিনোদপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায় পুলিশ মোতায়েন। কিন্তু কোনো দোকান খোলা নেই। গোটা বাজারই প্রায় ফাঁকা। ২-৪ দোকানী এসে তারা ঘুরেফিরে ধ্বংসস্তুপ দেখছেন আর হা-হুতাশ করছেন।
বিনোদপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির আকরাম আলী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপর নির্ভর করে আমাদের ব্যবসা। তারা আমাদের সন্তানের মতো। যখন বাসের চালক ও হেলপার কয়েকজন ছাত্র মারধর করছিল। তখন মানবিক কারণে তাদের রক্ষা করতে এগিয়ে যায় স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী। এটি কি আমাদের অন্যায় ? তাহলে কেন আমাদে গোটা বাজারে আগুন ধরিয়ে দিলো। ভাংচুর করলো। লুটপাট করলো ছাত্ররা। সিটি মেয়র, পুলিশ কমিশনার, ভিসি এরা সবাই নিজ চোখে দেখেছেন, ছাত্ররা কীভাবে আগুন সন্ত্রাস করেছে। ব্যবসায়ীরা কোনো সংঘর্ষে জড়ায়নি। চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। অথচ উল্টো পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধেই মামলা করলো। মামলা মাথায় নিয়ে তো কেউ দোকান খোলার সাহস পাচ্ছে না। পুলিশে গ্রেফতার করতে পারে। ছাত্ররা আবারো হামলা করতে পারে। এই আতঙ্ক সকল ব্যবসায়ীদের মনে।
তিনি আরো বলেন, ‘এতো বড় নৃশংস একটা ঘটনা ঘটে গেল। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আমাদের সাথে কোনো কথা বললেন না। একবার আলোচনার জন্যও ডাকলেন না। ছাত্রদের দেয়া আগুনে আমাদের অন্তত আড়াই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতিপুরণ বিশ্ববিদ্যালয় না দিলে আমরা মামলা করবো’।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। সবাইকে নিয়েই আমরা চলতে চাই। আগামীতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় করবো। সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ নেবো। উপাচার্যের মন্তব্য শিক্ষার্থীরা নয়, বহিরাগতরা জ্বালাও পোড়াও করেছে।
মহানগরীর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আর কেউ গ্রেফতার হয় নি। তবে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিনোদপুর বাজারে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত স্বাভাবিক।
উল্লেখ্য, বাস ভাড়া নিয়ে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে মোহাম্মদ পরিবহন নামে বাসের চালক ও হেলপারকে পেটায় একদল শিক্ষার্থী। এ ঘটনার দোকানীরা চালক ও হেলপারকে বাঁচাতে এগিয়ে আসছে শিক্ষার্থীদের সাথে বাগবিতন্ডা গুরু হয়। এরই জেরে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এসময় পেট্রোল বোমা মেরে পুড়িয়ে দেয়া হয় বিনোদপুর বাজারের শতাধিক দোকান। পুলিশের রাবার বুলেট ও ছোররা গুলি এবং ব্যবসায়ীদের ইটপাটকেলে আহত হয় আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলাদা মামলা করেছে। এ দুটি মামলায় অজ্ঞাত ৮০০জনকে আসামী করা হয়। অপরদিকে রেল লাইনে অগ্নি সংযোগ করে শিক্ষার্থীরা। ওই ঘটনায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বাদি হয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply