আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ২৪ ঘণ্টায় ক্রমশ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের দিকে এগিয়ে যাবে নিম্নচাপটি। এই সময়ের মধ্যেই ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে এটি।
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং দক্ষিণ আন্দামান সাগরের সংযোগস্থলে অবস্থিত নিম্নচাপ ক্রমশ ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে নিম্নচাপটি চেন্নাই থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে এবং পন্ডিচেরির ৭৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ক্রমশ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের দিকে এগিয়ে যাবে নিম্নচাপটি। এই সময়ের মধ্যেই ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে এটি। ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিগজাউম’। নামটি মায়ানমারের দেওয়া। ‘মিগজাউম’ চলতি বছরে বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া চতুর্থ ঘূর্ণিঝড় হতে চলেছে।
হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস এই যে, আগামী সোমবার সন্ধ্যায় তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ‘মিগজাউম’। এর জেরে দক্ষিণ ভারতের বিস্তীর্ণ অংশে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। এমনিতেই তামিলনাড়ুর বড় অংশে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। আগামী বুধবার অবধি বর্ষণ চলতে পারে। শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত পন্ডিচেরি, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে ভারী বৃষ্টি হতে পারে অন্ধ্রপ্রদেশের রায়লসীমা অঞ্চল এবং ওড়িশার সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলাগুলিতেও।
তবে ‘মিগজাউম’-এর সরাসরি কোনও প্রভাব পড়ছে না বাংলায়। তবে পরোক্ষ প্রভাব থাকছে। আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আছড়ে পড়ার পর একটা অক্ষরেখা তৈরি হতে পারে। যার ফলে আগামী মঙ্গল ও বুধ বার (৫ ও ৬ ডিসেম্বর) দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়া জেলার কোনও কোনও অংশে হালকা বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের গভীরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। আন্দামান, তামিলনাড়ু এবং ওড়িশা থেকে যে মৎস্যজীবীরা ট্রলার নিয়ে ইতিমধ্যেই গভীর সমুদ্রে গিয়েছেন, তাঁদের শুক্রবারের মধ্যে উপকূলে ফিরে আসতে বলা হয়েছে।
সম্ভাব্য দুর্যোগের মোকাবিলায় উপকূলবর্তী স্থানগুলিতে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে উপকূলরক্ষী বাহিনীকে। মোতায়েন রাখা হচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদেরও। ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সাত জেলাকে সতর্ক করেছে ওড়িশা প্রশাসন। এই জেলাগুলি হল বালেশ্বর, ভদ্রক, কেন্দ্রাপাড়া, জগতসিংহপুর, পুরী, খুরদা এবং গঞ্জাম। রাজ্যের ত্রাণ এবং উদ্ধার সংক্রান্ত দফতরের বিশেষ কমিশনার সত্যব্রত সাহু ওই সাত জেলার জেলাশাসকদের সতর্ক করে জানিয়েছেন, আগামী কয়েক দিন সমুদ্র ভয়াল রূপ ধারণ করতে পারে। রাজ্যের বিস্তীর্ণ অংশে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাতও হতে পারে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.