অনলাইন ডেস্ক: নদ-নদীর সুরক্ষায় নদীর গুরুত্ব সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে সচেতন করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন বিশিষ্টজনেরা। তারা বলেছেন, বর্তমান প্রজন্ম আগের নদী দেখেনি, ফলে তাদের মধ্যে নদী রক্ষার ব্যাপারে তাদের তেমন মাথা ব্যথা নেই। তারা নদীর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে না। তাই নতুন প্রজন্মকে সচেতন না করতে পারলে জীবন-জীবিকার জন্য অপরিহার্য এই নদী টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
আজ রবিবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর খিলগাঁওয়ের ত্রিমোহনীতে বালু নদীর পাড়ে ‘নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিবন্ধকতা ও সুযোগসমূহ’ শীর্ষক নদী বিষয়ক সংলাপে এ সব কথা বলেন তারা। ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিলের সঞ্চালনায় সংলাপে আলোচক ছিলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের প্রধান মীর মোহাম্মদ আলী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৭৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আকবর হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ওমর আলী এবং সাবেক ইউপি সদস্য নদী কর্মী জান্নাতি আক্তার রুমা।
সংলাপে শরীফ জামিল বলেন, ‘ঢাকার চারপাশের নদীগুলো দূষণে জর্জরিত। এই দূষণ নিয়ন্ত্রণে আমরা দীর্ঘ তিন বছর যাবৎ নদী নিয়ে নদীর পাড়ে বসে নদী সম্পৃক্ত লোকদের নিয়ে আলোচনা করি।
ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে বালু নদী দূষণমুক্ত হবে বলে আশা করি।’
সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আগে মানুষের নদীর সাথে সম্পৃক্ততা থাকলেও বর্তমান প্রজন্ম নদীর সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত নয়। মানুষ নদীতে মাছ ধরত, গোসল করত, রান্নাবান্নাসহ আরো বিভিন্ন কাজে নদীর প্রয়োজনীয়তা থাকায় সেসময় নদী আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। বর্তমান সময়ে আমরা নদীকে একটি ময়লা ফেলার স্থান হিসেবে চিন্তা করছি।
তাই বর্তমান প্রজন্মকে নদীর কাছে নিতে হবে, আরো বেশি বেশি নদীর সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে, যাতে তাদের সাথে নদীর সহজাত সম্পর্ক তৈরি হয়।’
ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আকবর হোসেন বলেন, ‘এই বালু নদী রক্ষা একদিনেই সম্ভব নয়। আমরা প্রত্যাশা করি এই দেশে হয়ত আমরা নদী রক্ষার ক্ষেত্রে একদিন সফলতা পাব। নদী রক্ষায় যারা দয়িত্বশীল তাদেরকে নদীর কাছে নিয়মিত আসতে হবে। নিজেরা এসে নদীর অবস্থা নদী দেখতে হবে।
’
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ওমর আলী বলেন, ‘আগে নদীর পানি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করলেও এখন এই পানি ব্যবহারের উপযোগী নেই। মানুষ ও কলকারখানার বর্জ্যতে এই নদী এখন ব্যাপকভাবে দূষিত। এই নদী দূষণের ক্ষেত্রে সকলেই দায়ী। নদীতে যারা বর্জ্য ছাড়েন তাদের ব্যাপারেও আমাদের সোচ্চার থাকতে হবে। নদী রক্ষায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
নদী কর্মী জান্নাতি আক্তার রুমা বলেন, ‘আগে নদীর পরিষ্কার পানি দেখেছি বলেই দূষিত পানি দেখলে আমাদের খারাপ লাগে। ২০০১ সালে বালু রক্ষা আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়। তখন নারীদের অংশগ্রহণ বেশি ছিল, কারণ এই নদী দূষণের কারণে নারীরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। এই আন্দোলনে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।’
সংলাপে স্থানীয় পরিবেশ কর্মীসহ নদী পাড়ের মানুষরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.