রাজশাহীতে নতুন জায়গায় হবে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি -শাহরিয়ার

রাজশাহীতে নতুন জায়গায় হবে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি -শাহরিয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মানুষের মনে ক্ষোভ জেগেছিলো, চরের জমি অধিগ্রহণ করে একাডেমি বানানোর সিদ্ধান্ত তারা মানতেই পারছিলেন না।

সম্প্রতি রাজশাহী শহরলাগোয়া পদ্মা নদীতে জেগে ওঠা চরে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণ করার জন্য শ্রীরামপুর এলাকায় ১শ একর জমি অধিগ্রহণ করে কারা কর্তৃপক্ষ।

নোটিস দিয়ে জানানো হয়, শহর রক্ষাবাঁধ পেরিয়ে নদীর অভ্যন্তরে নতুন জেগে ওঠা চরে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।

যদিও ওই জমির মালিক সরকার, কিন্তু প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হতে পারে, নাব্যের পরিবর্তন হয়ে বন্যার মতো দুর্যোগ সৃষ্টি হতে পারে। শহর রক্ষাবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্নের সৃষ্টি হবে।

এছাড়া পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি হবে। এসব কারণ উল্লেখ করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন পরিবেশবাদীরা। তাদের সাথে একাত্মতা জানান চিকিৎসক, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিরা।

তারা পদ্মার চরে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণের উদ্যোগ বন্ধসহ ৭ দফা দাবিতে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেন গত সপ্তাহে।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে ঐক্যবদ্ধভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে স্বাধীনতা চর্চা কেন্দ্র, পরিবেশবাদী সংগঠন রাজশাহীবাসী ও তারুণ্যের শক্তি।

তারা কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জায়গা অন্যত্র নির্ধারণ, ভবিষ্যতে পদ্মা নদীর চরে অবকাঠামো নির্মাণ রোধ করা, বাঁধের উপর ও নদীর অভ্যন্তরের সব স্থাপনা উচ্ছেদ এবং বাঁধের উপর যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানান।

সেইসাথে রাজশাহীবাসীর বিনোদন, শরীর চর্চা ও খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত রাখা, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বাঁধসংলগ্ন এলাকায় বনায়ন, শতবর্ষী গাছপালা না কাটা পদ্মা নদী ও আশপাশের অংশকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা ও সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

রাজশাহীবাসীর এই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারকে বিষয়টি নিয়ে ভাবতেই হয়েছে। অবশেষে সরকারের সিদ্ধান্ত গেছে জনতার পক্ষেই। গত রাতে সাড়ে বারোটার দিকে রাজশাহীর কৃতী সন্তান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি ফেসবুকে জানান, পদ্মার চরে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি হবে না।

প্রতিমন্ত্রী লিখেছেন, ‘রাজশাহীতে যারা বেড়ে উঠেছেন তাদের পদ্মা নদীর সাথে একাটা আত্মার সম্পর্ক আছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অধীন কোন প্রতিষ্ঠান জনগণের চাওয়ার বিপরীতে কোন সিদ্ধান্ত নেবে না।

একই সাথে এখানকার প্রতিটি রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলোও আমাদের অনেক গর্বের। প্রয়োজনে তাদের দেখভাল করাও সকলের কর্তব্য।

নতুন কিছু করতে চাইলে তার জন্য সঠিক জায়গা খুজে দেয়া আমাদের জনপ্রতিনিধিদের দ্বায়িত্ব। কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি রাজশাহীতেই হবে, নতুন কোন স্থানে।

মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিবের সাথে আমার কথা হয়েছে। প্রয়োজনীয় পরামর্শ তাকে আমি দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ সেই অনুযায়ী কাজ হবে।’ প্রতিমন্ত্রীর এই স্ট্যাটাসে রাজশাহীর মানুষ আনন্দিত।

ফেসবুকে তারা অভিনন্দন জানিয়েছেন সরকারের সিদ্ধান্তকে। ধন্যবাদ জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে ।

 মতিহার বার্তা ডট কম – ২৬ মে ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply