নিজস্ব প্রতিবেদক : বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) মেকানিক্যাল ফোরম্যান ও কোম্পানীটির শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম শিকদারকে কর্তৃপক্ষ বরখাস্ত করলেও স্বস্তিতে নেই সংশ্লিষ্টরা।
আবুল কাশেম শিকদারের দাপটে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ জিইয়ে রয়েছে। গুরুতর বিভিন্ন অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হলেও কোম্পানীটির উর্ধ্বতন দু’একজন নেতার ইশারায় তিনি তার কর্মকা- অব্যাহত রেখেছেন।জানা গেছে, গত বছরের ২ জুলাই আবুল কাশেম শিকদারকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ।
ওই বরখাস্ত আদেশে বলা হয়, গত বছরের ১৮ এপ্রিল আবুল কাশেম শিকদারের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগপত্র গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। পরে অভিযোগপত্রটির একটি কপিসহ তাকে প্রথম কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়।এই নোটিশের জবাব দাখিল করেন তিনি।
কিন্তু তার বক্তব্য কর্তৃপক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির সামনে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের প্রমাণাদিসহ বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য শুনানীর সুযোগ করে দেয়া হয়েছিল।
কিন্তু তিনি ওই শুনানীতে অনুপস্থিত ছিলেন।এরপর গঠিত তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ যথাযভাবে তদন্ত করে। তদন্ত শেষে কমিটি একটি প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করে এবং এই তদন্তে তিনি দোষী প্রমাণিত হন।
এতে আরো বলা হয়, দ্বিতীয় দফায় তাকে আবারো কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি জবাব দেননি। তাই বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ২৩ (১) (খ) ধারা অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।এই আদেশ গত বছরের ৩ জুলাই থেকে কার্যকর করার কথা বলা হয়।
একইসঙ্গে আইন অনুযায়ী তার দেনা-পাওনা বুঝে নেয়ার জন্যও তাকে বলা হয়। তার বরখাস্ত আদেশে স্বাক্ষর করেন কোম্পানীর উপ-মহাব্যবস্থাপক (এইচআর) মোহাম্মদ ছানা উল্লাহ। সূত্র মতে, কোম্পানীর উপ-মহাব্যবস্থাপক জাফর সাদিককে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এই কমিটিই তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করে।ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এই প্রতিবেদনের এক স্থানে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রেরিত প্রতিবেদনের উল্লেখ করে বলা হয়, আবুল কাশেম শিকদার চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন লোকের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নেন।তার বিরুদ্ধে কয়লা খনিতে থার্ডপার্টির অধীনে চাকরি এবং থার্ড পার্টিতে কর্মরত অনেকের নিকট চাকরি স্থায়ী করার কথা বলে ২০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকা গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে।
তিনি একজন মাতাল, নারী ও জুয়ায় আসক্ত। তার বিরুদ্ধে খনি এলাকায় মাদকদ্রব্য বিস্তার ও জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগ রয়েছে। তিনি খনি কর্তৃপক্ষকে আন্দোলনের হুমকি দিয়ে নিয়োগসহ বিভিন্ন অনৈতিক দাবি আদায়ে তৎপর থাকেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নারীর শ্লীলতাহানি করার অভিযোগও রয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে কোম্পানীর এমডি ফজলুর রহমান বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ ব্যাপারে জানতে কয়েকদিন ধরে মোবাইলে অভিযুক্ত আবুল কাশেম শিকদারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
মেসেজ দেয়া হলেও কোনো উত্তর দেননি।পরে গতকাল রবিবার (২৬ মে ২০১৯) বিকাল সোয়া ৩টার দিকে তার ছেলে পরিচয়ে একজন কল রিসিভ করে বলেন, এখন তার বাবার সাথে কথা বলা যাবে না। পরে যোগাযোগ করতে হবে।
মতিহার বার্তা ডট কম – ২৭ মে ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.