শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার!
রাজশাহীর বিখ্যাত আম রপ্তানি হচ্ছে বিশ্ব বাজারে

রাজশাহীর বিখ্যাত আম রপ্তানি হচ্ছে বিশ্ব বাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাহারি আর সুস্বাদু আমের কথা বললে সবার আগে আসে রাজশাহীর নাম। রাজশাহীর বিখ্যাত আম দেশের সব অঞ্চলে সমান সমাদৃত। দেশের চাহিদা মিটিয়ে এবার বিশ্ববাজারে অবস্থান করে নিয়েছে এই আম।

রাস্তার দুই ধারে সারিসারি আম বাগান। সুস্বাদু জাতের আমের কথা উঠলেই চলে আসে রাজশাহীর নাম। রাজশাহীর আমের মধ্যে বাঘা উপজেলার আম বিখ্যাত। বাঘা উপজেলার মাটি গুনগত আম চাষের জন্য উপযোগি। ফলে বাঘার আমের খ্যাতি দেশজুড়ে। এ উপজেলার আম চলতি মৌসুমে দেশের চাহিদা মিটিয়ে ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, নরওয়ে, পর্তুগাল, ফ্রান্স, রাশিয়া রপ্তানি করা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ২.৮ মেট্রিকটন হিমসাগর ও ল্যাংড়া আম রপ্তানি করা হয়েছে।

এছাড়া আগুরা সুপার সোপ ৫ মেট্রিকটন আম নিয়েছে। গত ৪ বছর থেকে শুরু হয়েছে এ উপজেলার আম রপ্তানি কার্যক্রম। হটেক্স ফাউন্ডেশন ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার মাধ্যমে এ আম রপ্তানির কাজ শুরু করা হয়েছে।

জানা যায়, আম রপ্তানির জন্য ৫০ জন বাগান মালিককে উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত করে সনদপত্র প্রদান করা হয়। এই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চাষিরা কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাগানে উৎপাদিত ও ক্ষতিকর রাসায়নিকমুক্ত ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের প্রতিটি আম ঢাকা বিএসটিআই ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি টিম বাগান পরিদর্শন করেন। ফলে এ উপজেলার আম বিদেশে রপ্তানি যোগ্য হিসেবে বিবেচিত করার পর থেকে আম রপ্তানি শুরু করা হয়েছে।

প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ মে গুটি আম, গোপালভোগ ২০ মে, রানিপছন্দ ২৫ মে, খেরসাপাত (হিমসাগর) ২৮ মে, লখনা ২৬ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আমরুপালি এবং ফজলি ১৬ জুন, আশ্বিনা ১৭ জুলাই থেকে আম চাষিরা গাছ থেকে পেড়ে রপ্তানী শুরু করেছে।

বাঘা উপজেলার আমের মধ্যে ফজলি, খেরসাপাত (হিমসাগর), গোপালভোগ, মহনভোগ, ল্যাংড়া বিখ্যাত। এই আমের নাম মানুষের সবার মুখে মুখে। এছাড়া বৌ-ভুলানি, রানি পছন্দ, জামাই খুশি, বৃন্দাবন, তুতাপরি, লোকনা, বোম্বাই, খেরসাপাত, দাউদ ভোগ, সেন্দুরি, আমরোপালি, আশ্বিনা, ব্যানানা, মল্লিকা, ক্ষুদি খেরসাপাত, কালীভোগসহ প্রায় শতাধিক জাতের আম রয়েছে। প্রতি বছর আম মৌসুমে এ উপজেলায় প্রায় লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়। বাঘা উপজেলায় কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ উপজেলায় আম বাগান রয়েছে ৮ হাজার ৩৬৮ হেক্টর। এ উপজেলার মানুষ প্রতি বছর আম মৌসুমে আয় করেন প্রায় চার থেকে পাঁচ’শ কোটি টাকা।

সোমবার (১০ জুন) গুটি আম পাইকারি হিসেবে প্রতিমণ সাড়ে ৮০০ থেকে সাড়ে ১২০০ টাকা, খেরসাপাত (হিমসাগর) সাড়ে ১৮০০ টাকা থেকে ২৪০০ টাকা, গোপালভোগ ১৮০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা, ল্যাংড়া ২০০০ টাকা থেকে ২৫ টাকা, লকনা সাড়ে ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আমের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা দরদাম করে পরিবারের জন্য অল্প পরিমাণে কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন।

বাঘার আম রাজধানী ঢাকা, নরসিংদী, ভৈরব, বরিশাল, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ফেনীসহ দেশের অন্যান্য স্থানে কেনাবেচা হয়। কিন্তু এখন এ আম আর দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বিদেশে রপ্তানি শরু হয়েছে। ফলে চাষিদের মধ্যে আম রপ্তানীর বিষয়ে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে।

কলিগ্রামের আম চাষি (লিড ফার্মার) আশরাফুদৌলাহ, আড়পাড়া গ্রামের মহসীন আলী বলেন, ইতিমধ্যে আম রপ্তানি শুরু হওয়ায় কিছুটা আমের দাম পেয়ে চাষিরা খুশি। তবে গতবারের চেয়ে এবার আমের চাহিদা রয়েছে।

রাজশাহীর কয়েকটি উপজেলার মধ্যে আম প্রধান উপজেলা হিসেবে বাঘার আম ব্যাপক পরিচিত। প্রতি বছর আমের এই মৌসুমে গ্রামে গ্রামে আমের বাজার গড়ে ওঠে। এইসব বাজারে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক আম ব্যবসায়ীরা ব্যস্ত সময় কাটান। ব্যবসায়ীরা চুক্তি মূল্যে বাগান কিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে আম চালান করেন। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বসে থাকে না। তারা আম ফেরি করে গ্রামে গ্রামে ক্রয় করেন। স্বল্প পরিসরে এগুলো নিকটতম বাজারে বিক্রি করে।

বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লা সুলতান বলেন, বাঘা উপজেলার মাটি আম চাষের জন্য উপযোগি। চলতি মৌসুমে ৩৩ মেট্রিকটন আম বিদেশে রপ্তানি করার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা রয়েছে। তবে ১ জুন থেকে খেরসাপাত (হিমসাগর) ১.৪ ও ল্যাংড়া ১.৪ মেট্রেকটন আম দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে।

বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, অনেক জায়গায় চাকরি করেছি, আমও খেয়েছি। কিন্তু বাঘার আমের স্বাদ ও গুণগতমান অতুলনীয়।

মতিহার বার্তা ডট কম – ১৪  জুন- ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply