মাসুদ রানা রাব্বানী : বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) একটি প্রকল্পের আওতায় পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি কালভার্ট নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কালভার্ট নির্মাণ কাজ চলমান থাকা অবস্থায় এতে বড় ধরণের ফাটল দেখা দেয়। এ নিয়ে হৈ-চৈ শুরু হলে সাময়িক বন্ধ থাকে নির্মাণ কাজ। পরবর্তীতে দুদকের একটি টিম সরেজমিনে তদন্ত করে এই কালভার্ট নির্মাণ কাজে প্রাথমিকভাবে অনিয়মের সত্যতা পায়।
জানা গেছে, গত জানুয়ারির শেষ দিকে রাজশাহীর বাঘা পৌরসভার মশিদপুর এলাকায় পদ্মা নদীর বাঁধের রাস্তায় পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি কালভার্ট নির্মাণে কাজ শুরু করে বিএমডিএ। এতে ব্যয় ধরা হয় অতিরিক্ত ৬ লাখ টাকাসহ মোট ৪২ লাখ টাকা। পরে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে কালভার্ট নির্মাণ কাজ চলমান থাকা অবস্থায় এতে বড় ধরণের ফাটল দেখা দেয়। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে বিএমডিএ’র অভ্যন্তরেও তোলপাড় শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিকে সাময়িক বন্ধ রাখা হয় কাজ। পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি টিম সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে এই কালভার্ট নির্মাণ কাজে প্রাথমিকভাবে অনিয়মের সত্যতা পায়।
অভিযোগ রয়েছে, বিএমডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক নাজিরুল ইসলামের সাথে যোগসাজসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তড়িঘড়ি করে ফাটল দেখা দেওয়া স্থানে প্লাস্টার করে কালভার্ট নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করে।
বিএমডিএ’র একটি সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আগেই ১৮ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। আর নির্মাণ কাজ চলমান থাকা অবস্থায় অনিয়মের অভিযোগ উঠায় ও এতে ফাটল দেখা দিলে অবশিষ্ট টাকা আটকে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম জানান, খবর পেয়ে দুদকের একটি টিম সরেজমিনে তদন্ত করে এই কালভার্ট নির্মাণ কাজে প্রাথমিকভাবে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় নিম্নমানের এই নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে বলে দুদক টিমের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে অনুসন্ধানের অনুমোদন চেয়ে দ্রুত কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে।
কালভার্ট নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএমডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক নাজিরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তেমন কিছু নয়। এটি আসলে বড় করে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিএমডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ ও নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা এ ধরণের অনিয়মের কোনো সত্যতা পাননি। তিনি জানান, এরই মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে বিএমডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ বলেন, প্রকল্পের কাজ শুরু করার সময়ে সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু যখন অনিয়ম ও ফাটল ধরা পড়ে তখন সেখানে আমি যাইনি। এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।
আর বিএমডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তবে যারা এই প্রকল্পের সাথে সরাসরি যুক্ত তাদের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
মতিহার বার্তা ডট কম –১২ মার্চ ২০২০
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.