নিরাপত্তাহীনতায় বাগমারার ব্যবসায়ী মকসেদ : দোষিদের শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন-বিক্ষোভ

নিরাপত্তাহীনতায় বাগমারার ব্যবসায়ী মকসেদ : দোষিদের শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন-বিক্ষোভ

নিরাপত্তাহীনতায় বাগমারার ব্যবসায়ী মকসেদ : দোষিদের শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন-বিক্ষোভ
নিরাপত্তাহীনতায় বাগমারার ব্যবসায়ী মকসেদ : দোষিদের শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন-বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার কনোপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো: মকসেদ আলী প্রামাণিক। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। এছাড়া রাজনৈতিকভাবে তিনি ক্ষমতাসীন দল আ‘লীগের কনোপাড়া ১ নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের অব্যাহত ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে তিনি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করে রাখতে তাকে নানাভাবে ঘায়েল করার চেষ্টা করছে প্রতিপক্ষরা। এলাকায় লীজ নেয়া একটি দিঘিতে মাছ চাষের জন্য প্রায় কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন তিনি। কিন্তু দিঘির মাছ উঠিয়ে বিক্রি করতে পারছেন না। এতে করে তিনি বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এর সুষ্ঠু প্রতিকার ও ন্যায় বিচার পেতে এবং দোষিদের শাস্তির দাবিতে রোববার দুপুরে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন।

উপজেলার বিন্দুরি দিঘি সংলগ্ন কনোপাড়া এলাকায় রাস্তায় এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে এলাকার অনেক নারী-পুরুষ অংশ নেন। মানববন্ধনকালে এলাকাবাসী দোষিদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এসময় তারা শেখ মুজিবের বাংলায় জেএমবির ঠাঁই নাই, অবিলম্বে জেএমবি সদস্য মান্নানের বিচার চাই করতে হবে, অবিলম্বে দোষিদের গ্রেফতার কর করতে হবে প্রভৃতি শ্লোগান দেন এবং বিক্ষোভ করেন।

ভুক্তভোগী মকসেদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, কনোপাড়া এলাকায় অবস্থিত একটি দিঘি রয়েছে। এই দিঘিটি আমি তিন বছরের জন্য লীজ নিয়েছি। দিঘিতে মাছ চাষের জন্য প্রায় কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। এখন দিঘি থেকে মাছ উঠিয়ে বাজারে বিক্রি করার সময়। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ষড়যন্ত্রের কারণে দিঘি থেকে মাছ উঠাতে পারছি না। সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই মহলটি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে দিঘির ওপর স্থগিতাদেশ জারি করিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে কনোপাড়া এলাকার দিঘির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। পুলিশি পাহারা বসানো হয়েছে। এরফলে দিঘিতে চাষ করা মাছ উঠিয়ে বিক্রি করতে পারছি না। এতে ব্যবসায়িকভাবে বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি। প্রতিপক্ষের লোকজন দিঘিতে বিষ প্রয়োগে করে চাষ করা মাছ মেরে ফেলতে পারে বলেও আশংকা প্রকাশ করেন মকসেদ আলী।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমিসহ এলাকার আরো অনেক কৃষক ও ব্যক্তিবর্গ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এরআগে আমার ওপর হামলা করা হয়েছে। এতে আমি মারাত্মকভাবে আহত হয়ে দীর্ঘদিন চিকি’সা নিয়ে কোনো রকমে চলাচল করতে পারছি। এছাড়া হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এক চোখ দিয়ে এখনও দেখতে পাই না। নিরাপত্তাহীনতার কারণে এলাকার অনেক মানুষ হাটে-বাজারে যেতে পারেনা। নিজ এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যেতে ভয় পান তারা। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কবে এ অবস্থার অবসান হবে। আমরা কবে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবো। স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে পারবো।

মকসেদ আলী আরো বলেন, স্থানীয় আব্দুল মান্নান নামের এক ব্যক্তির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধানে এই সমস্যা জিইয়ে রয়েছে। তার পেশি শক্তির কাছে এলাকাবাসী অসহায়। তিনি বলেন, আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে থানায় বর্তমানে ১৩টি মামলা চলমান রয়েছে। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় পৌর মেয়র আব্দুল মালেকের ফুফাতো ভাই হন আব্দুল মান্নান। তাই তিনি অপরাধ করেও পার পেয়ে যান।
তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল মান্নানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে জানতে মোবাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। ফলে এ ব্যাপারে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, কনোপাড়া শুধু নয়, গোটা বাগমারাতে এখন জেএমবি ও সর্বহারা বলতে কেউ নেই। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি দাবি করেন, স্থানীয় আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে জেএমবির সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ সঠিক নয়। এখন কেউ জেএমবি নেই।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কনোপাড়ার দিঘি নিয়ে অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে। এছাড়া উভয়পক্ষের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশংকায় নিষেধাজ্ঞা, ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

মতিহার বার্তা ডট কম – ১৯ জুলাই, ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply