স্ত্রী-সন্তান হত্যা: ২০ বছর কনডেম সেলে থাকার পর মুক্ত জাহিদ

স্ত্রী-সন্তান হত্যা: ২০ বছর কনডেম সেলে থাকার পর মুক্ত জাহিদ

স্ত্রী-সন্তান হত্যা: ২০ বছর কনডেম সেলে থাকার পর মুক্ত জাহিদ

অনলাইন ডেস্ক: পারিবারিক কলহে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা মামলায় ২০০০ সালের জুন মাসে শেখ জাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দেন বাগেরহাট আদালত। ২০ বছর কনডেম সেলে থাকার পর আপিল বিভাগের রায়ে সোমবার সন্ধ্যায় অবশেষে মুক্তি পেলেন শেখ জাহিদ।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় খুলনা জেলা কারাগারের সামনে জাহিদকে দেখতে উৎসুক মানুষ ও গণমাধ্যমকর্মীরা ভিড় করেন। এ সময় আবেগে কেঁদে ফেলেন জাহিদ।

জানা যায়, খুলনা জেলার রূপসা থানার নারিকেল চানপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ জাহিদ। ১৯৯৭ সালে বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার রহিমার সঙ্গে বিয়ে হয় তার। ১৯৯৭ সালের ১৬ জানুয়ারি বাগেরহাটের ফকিরহাট থানায় মামলা করেন তার শ্বশুর ময়েনউদ্দিন শেখ। মামলায় রহিমা খাতুন (২৮) ও তার দেড় বছরের মেয়ে রেশমা খাতুনকে ঘুমের মধ্যে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, শেখ জাহিদ তার স্ত্রী ও কন্যাকে হত্যার পর পালিয়ে গেছেন। পারিবারিক কলহের জেরে তাদের হত্যা করেন জাহিদ। এ মামলায় বাগেরহাটের আদালত ২০০০ সালের ২৫ জুন এক রায়ে একমাত্র আসামি শেখ জাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার আগে জাহিদ আত্মসমর্পণ করেন।

নিম্ন আদালতের রায় অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে পাঠানো হয় ডেথ রেফারেন্স। হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে বিচারপতি বদরুল হক ও বিচারপতি মিজানুর রহমান ভুঁইয়ার হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০০৪ সালের ৩১ জুলাই রায় দেন। এরপর এ রায়ের বিরুদ্ধে কারাগার থেকে ২০০৭ সালে আপিল বিভাগে জেল আপিল করেন জাহিদ।

চলতি মাসে মামলাটি নজরে পড়ে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চের। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয় সর্বোচ্চ আদালত। নিযুক্ত করা হয় শেখ জাহিদের আইনজীবী। কিন্তু মামলার শুনানি করতে গিয়ে আপিল বিভাগ দেখেন নানা অসঙ্গতি। বিষয়টি আদালতের সামনে তুলে ধরলে দীর্ঘ শুনানি শেষে গত ২৫ আগস্ট প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ জাহিদকে খালাস দেন।

রায়ে বলা হয়, স্ত্রী ও কন্যা হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ার কারণে খালাস দেয়া হল শেখ জাহিদকে।

খুলনা জেলা কারাগারের জেলার তারিকুল ইসলাম বলেন, বিকালে বাগেরহাট থেকে বিশেষ বার্তা বাহকের মাধ্যমে জাহিদের খালাসের কাগজপত্র আসে। এরপর এগুলো যাচাই-বাছাই করে সন্ধ্যার পর তাকে মুক্তি দেয়া হয়।

খুলনার জেল সুপার ওমর ফারুক যুগান্তরকে বলেন, জাহিদের মামলা তার পরিবারের পক্ষ থেকে দেখাশুনা করতেন না। বিষয়টি তিনি আমাকে জানান। এরপর একজন ডেপুটি জেলার এবং ঢাকার একজন লিগ্যাল এইড কর্মকর্তার পরামর্শে তার মামলার কাগজপত্রগুলো পুনরায় সচল করা হয়। অবশেষে জাহিদ কনডেমে থাকা অবস্থায় আপিলে খালাস পেয়েছেন।

মতিহার বার্তা ডট কম – ৩১ আগষ্ট ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply