রাজশাহীতে আবাসন বাণিজ্যে পেশাজীবীরা, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

রাজশাহীতে আবাসন বাণিজ্যে পেশাজীবীরা, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

রাজশাহীতে আবাসন বাণিজ্যে পেশাজীবীরা, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে জমির দাম বাড়তে থাকায় ইচ্ছে থাকলেও অনেকে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় জমি কিনে বাড়ি করতে পারছেন না। তাই তারা কিনছেন ফ্ল্যাট। দিন দিন এ শহরেও বড় হচ্ছে ডেভলপারদের আবাসন ব্যবসা। তাদের ফ্ল্যাট বিক্রিতে সরকার পাচ্ছে রাজস্ব। কিন্তু ইদানিং রাজশাহীতে বিভিন্ন পেশাজীবীরাও এই আবাসন ব্যবসা শুরু করেছেন। বিভিন্ন পেশার মানুষ একত্রিত হয়ে গড়ে তুলছেন বহুতল ভবন। বিক্রি করছেন ফ্ল্যাট। এসব ফ্ল্যাট কেনাবেচা থেকে পুরোপুরি রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। তাদের আর্থিক লেনদেনের কোনরকম হিসাবই পাওয়া যাচ্ছে না।

রাজশাহী কর কমিশনারের কার্যালয়ের কর কমিশনার মুহাম্মদ মফিজ উল্যা বলেন, ডেভলপার কোম্পানি যদি ফ্ল্যাট বিক্রি করে তাহলে অবশ্যই তার রেজিস্ট্রি হয়। রেজিস্ট্রির সময়ই সরকার রাজস্ব পায়। কিন্তু কোন সাধারণ মানুষ বা অন্য পেশাজীবীরা যদি বহুতল ভবন করে ফ্ল্যাট বিক্রি করেন তাহলে সব সময় রেজিস্ট্রি না-ও হতে পারে। কখনও কখনও দেখা যায় রেজিস্ট্রি না করে স্ট্যাম্পে একটা লিখিত চুক্তির ওপর ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হয়। এতে রাজস্ব আদায় হয় না। এই ধরনের ফ্ল্যাট আবার ফাইলে তোলা হয় না। লুকায়িত সম্পদ হিসেবে এটা রাখার সুযোগ আছে। তবে যদি ফাইলে নথিভুক্ত করা হয় তাহলে সম্পদের ওপর কর আদায় হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইদানিং রাজশাহীতে চিকিৎসক, প্রকৌশলী কিংবা অন্য সরকারি-বেসরকারী কোন বিভাগের কর্মকর্তারা একত্রিত হয়ে বহুতল ভবন গড়ে তুলছেন। এসব ভবনের কিছু ফ্ল্যাট নিজের মালিকানায় রেখে বাকিগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। এগুলো বিক্রির সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রেজিস্ট্রি করা হচ্ছে না। যারা কিনছেন তারাও রেজিস্ট্রি করে নিচ্ছেন না। তারা শুধু স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তির ওপর ফ্ল্যাট কিনছেন। অবৈধ উপায়ে আয় করা অর্থ কাজে লাগাতে কোন কোন সরকারি কর্মকর্তা শুধু চুক্তির মাধ্যমেই এভাবে ফ্ল্যাট কিনছেন। চুক্তিপত্রে স্ত্রী বা সন্তানের নাম উল্লেখ করে ফ্ল্যাটের মালিকানা বুঝে নেয়া হচ্ছে। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

এদিকে পেশাজীবীরা এ ধরনের আবাসন ‘বাণিজ্যে’ নেমে পড়ায় ক্ষুব্ধ আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রাজশাহী রিয়েল অ্যাস্টেট অ্যান্ড ডেভেলপার্স অ্যাসোসিয়েশনের (রেডা)। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান কাজী বলেন, আমরা বিগত কয়েক বছর ধরে রাজশাহী মহানগরীর আবাসনখাত উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু পেশাজীবী মানুষ এবং কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে আমাদের ব্যবসা হুমকির মুখে পড়েছে। তাদের কারণে সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে। অথচ একটা ফ্ল্যাটের জন্য আমরা সরকারকে কমপক্ষে তিন থেকে চার লাখ টাকা রাজস্ব দিয়ে থাকি। তাই আমরা আশা করি সরকার এ ব্যাপারে শীঘ্রই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

মতিহার বার্তা ডট কম: ১৯ অক্টোবর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply