স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ারের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগে হামলার চিকিৎসা অবহেলার ঘটনায় কর্মবিরতি পালন করছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১১টা থেকে এই কর্মবিরতি শুরু হয়। দুই দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্তও তারা কাজে যোগ দেননি। দুপুর আড়াইটার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী।
এর আগে বুধবার মধ্যরাতে রামেক হাসপাতাল, রাবি এবং নগর পুলিশের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষে ঘটনার তদন্তে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন হয়। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে বুধবার মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে ফিরে যান রাবি শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে আছেন। চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যায় আছি। আমার সব বিভাগীয় প্রধান ও ইউনিট প্রধানদের নিয়ে জরুরি সভা ডেকেছি। সেখানেই এনিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দুটি দাবি জানিয়েছে। সেগুলো হলো- হামলার ঘটনায় দোষীদের শাস্তি ও নিরাপদ চিকিৎসা দেওয়ার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় ব্লকের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান শিক্ষার্থী শাহরিয়ার। তিনি হলের ৩৫৪ নম্বর কক্ষে থাকতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলায়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে দ্রুত রামেক হাসপাতালে নেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আহত শাহরিয়ারকে জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর চিকিৎসক আইসিউতে নিতে বলেন। কিন্তু সেখানে নিতে চিকিৎসকের রেফারেন্স দিতে বলেন। পরে জরুরি বিভাগেই মারা যান ওই শিক্ষার্থী। এর প্রতিবাদ করায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। ওই সময় দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মীরা নীরব ভূমিকায় ছিলেন।
চিকিৎসকদের হামলায় চার রাবি শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের বাইরের ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতাল পরিচালকের দপ্তরে ভাঙচুর চালান। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গেও তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হলেও ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অভিযোগ, রাবি শিক্ষার্থীরাই তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ ঘটনায় দুই দফা দাবিতে তারা ধর্মঘট শুরু করেছেন। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজে ফিরবেন না।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.