শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার!
রাজশাহীতে বাড়ছে পদ্মার পানি, আশঙ্কার মধ্যে শহর রক্ষা বাঁধ

রাজশাহীতে বাড়ছে পদ্মার পানি, আশঙ্কার মধ্যে শহর রক্ষা বাঁধ

নিজস্ব প্রতিবেদক: উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মায় পানি বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে পানি বাড়ার হারটা খুব একটা বেশি নয়। গড়ে ৪০ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে প্রতিদিন। যদিও পদ্মায় পানি বাড়ার হার কম। তবে ফারাক্কা বাঁধ খুলে দিলে এই হারই বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে এ অঞ্চলের মানুষের জন্য। তখন হুমকির মুখে পড়তে পারে শহর রক্ষা বাঁধ। কারণ এভাবে পানি বাড়তে থাকলে কয়েকদিন পরেই পদ্মার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিশেষ করে নগরীর শ্রীরামপুরে পুলিশ লাইনের সামনের শহর রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। ৬৫ বছরের পুরনো এই বাঁধে দুই বছর আগে পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে ফাটল দেখা দিয়েছিলো। তারপর থেকে সংস্কারের মাধ্যমেই বাঁধটিকে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে ডিজাইন দেয়া সত্ত্বেও ৮ কোটি টাকার অভাবে নতুনভাবে তা তৈরি করা সম্ভবও হচ্ছে না। ফলে জিও ব্যাগ ফেলেই টিকিয়ে রাখা হয়েছে বাঁধটিকে।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় রাজশাহীতে পদ্মানদীর পানির উচ্চতা মাপা হয়েছে ১০ দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটার। বুধবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার। বৃহস্পতিবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ১১১১ দশমিক ৩৭ সেন্টিমিটার। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ পানির উচ্চতা ছিলো ১১ দশমিক ৭৭ সেন্টিমিটার। আর রাজশাহীতে পদ্মার পানির বিপদসীমা হচ্ছে ১৮ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মার পানির সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১৭ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার ছুঁই ছুঁই করলেও এর পর আর পদ্মার পানি বাড়েনি। ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে পানি কমতে শুরু করে।

রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল আলম জানান, প্রধানত রাজশাহীর এই অঞ্চলে পদ্মা ও মহানন্দার পানি বাড়ার মাধ্যমেই বন্যা হয়।

আর পদ্মার পানি কমা বা বাড়ার সম্পূর্ণটাই নিয়ন্ত্রণ হয় ভারতের ফারাক্কা বাঁধের মাধ্যমে। তবে বৃষ্টির পানিতে যেটুকু পানি বাড়ে তা অতি সামান্যই। আমরা খোঁজখবর নিয়ে শুনেছি, ইতোমধ্যে ফারাক্কার ১০৯টি গেটের মধ্যে কিছু গেট খুলে দিয়েছে। এইজন্য পদ্মায় পানি বাড়ছে।

এবছর এখন পর্যন্ত ভারতে কম বৃষ্টিপাত হচ্ছে। যদি ভারত ও চিনে বেশি বৃষ্টিপাত হয়, তাহলে ভারত ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয়। তখন একসাথে পদ্মায় দ্রুত পানি বেড়ে যায়। এমনও হয় একসাথে ৮০/৯০টি গেট খুলে দেয়। এবারও যদি তাই করে তাহলে পদ্মার পানি বিপদসীমা ছুঁতে পারে। এ মাসের শেষের দিকে তা হতে পারে।

সাহিদুল আলম আরো জানান, অবশ্য বেশি গেট খুলে দিলেও সমস্যা হয় না। যত না সমস্যা হয় গেট খুলে আবার দ্রুত বন্ধ করে নিলে। কারণ তখন দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় ভাঙন দেখা দেয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদী সংলগ্ন রাজশাহী শহরের পাশ দিয়ে ১১ কিলোমিটার শহর রক্ষা বাঁধ রয়েছে। তবে পঞ্চবটি থেকে তালাইমারী শহিদ মিনার পর্যন্ত এক কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধ নেই। আর নতুনভাবে বুলনপুর থেকে সোনাইকান্দি পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ কাজ করা হয়েছে।

তবে নগরীর শ্রীরামপুরে পুলিশ লাইনস একাডেমির সামনের শহর রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় বাঁধের তিন মিটার জায়গায় ফাটল দেখা দেয়।

তখন কোনোরকমে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করা হয়েছে। গতবছরও সেখানে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানো হয়েছে। এবারও সেখানে ভাঙনের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে পদ্মার পানি বিপদসীমা ছুঁলে বাঁধ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশরা এই বাঁধ নির্মাণ করেছিলেন। তারপর থেকে শুধুমাত্র মেইনটেন্যান্সের মাধ্যমেই বাঁধটিকে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। তবে ১৯৯৮ সালে শহর রক্ষা বাঁধের নিচের অংশ নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়েছিলো। এরপর আর সংস্কার ব্যতিত কোনো কাজ করা হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল) মহম্মদ আলী জানান, পুলিশ লাইনের সামনের শহর রক্ষা বাঁধের ১৫৫ মিটার জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

সে জায়গাটুকু সম্পূর্ণভাবে নির্মাণের জন্য ডিজাইন করে আমরা একটা প্রকল্প পাঠিয়েছিলাম মন্ত্রণালয়ে। ৮ কোটি টাকার প্রকল্প। কিন্তু তা পাস হয়নি। তবে প্রকল্প পাস না হলেও তাৎক্ষণিকভাবে আমরা মেরামতের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। যদি পদ্মার পানি বাড়া-কমার সাথে কোনোভাবে পদ্মার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাৎক্ষণিভাবে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারবো।

মতিহার বার্তা ডট কম  ১৩ জুলাই ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply