স্টাফ রিপোর্টার : ডাক্তার না হয়েও সকল রোগী দেখা, ওষুধ দেয়া অভিযোগ উঠেছে নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তিনি রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানাধিন হাদির মোড় নদীর ধারের বাসিন্দা।
তার একটি ফার্মেসী রয়েছে হাদির মোড়ে। গত প্রায় চার বছর যাবত রোগী দেখে ওষুধ দেয়া, ও প্রেসক্রিপশন লেখার কাজ করে আসছেন। এরই সুবাদে তিনি ওই এলাকায় ডাক্তার নজরুল ইসলাম বলেই জানেন।
জানা যায়, তিনি রাজশাহী থেকে এলএমএফপি কিংবা এমবিবিএস’ কোনো ডিগ্রীই নেই তার। তবু তিনি ডাক্তার। দৈনিক দুপুরের পর থেকে রোগী দেখেন। চিকিৎসা দেন ও প্রেসক্রিপশন লিখেন।
তিনি একটি ওষুধ কোম্পানীর সেলসম্যান রীতিমতো ডাক্তার সেজে চেম্বার খুলে বসেছেন “মা-বাবার দোয়া” নামে একটি ডাক্তারখানা এবং ফার্মেসী খুলে এমন কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে যৌন চিকিৎসার ক্ষেত্রে রয়েছে তার ব্যপক সুনাম।
রোগ নির্ণয়ের পর ব্যবস্থাপত্র দিয়ে চেম্বারের সাথেই তারই ওষুধের দোকান থেকে ওইসব রোগীদের কাছে ওষুধ বিক্রি করছেন। আবার রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কখনো কারও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হলে একটি সাদা কাগজে লিখে শহরের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার দিয়ে পাঠান। তবে এখানে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন নিতান্তই গরীব ও অশিক্ষিত। আর এসব মানুষ তাকে ‘গরীবের ডাক্তার’ বলেই জানেন। তাই অতি সহজেই দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের কাছ থেকে দু’হাতে টাকা কামাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, কথিত ডাক্তার নজরুল ইসলাম একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীতে কেমিস্ট লাইব্ররীর সেলস হিসেবে চাকরি করতেন। পরে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ডাক্তার বনে গেছেন।
প্রতিদিন দুপুুরের পর থেকে চেম্বারে বসে রোগীর চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি শিশুসহ সকল স্তরের রোগীর রোগ নির্ণয় করে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে তারই দোকান থেকে রোগীদের কাছে ওষুধ বিক্রি করছেন। রোগীরা জানিয়েছেন, তিনি সকল প্রকার অসুখের ওযুধ দিয়ে থাকেন।
নগরীর সাধুর মোড় থেকে আসা এক মহিলা রোগী বলেন, আমরা গরীর মানুষ, তাই এখানে কিছুটা কম টাকায় চিকিৎসা পাই। কখনো রোগ ভাল হয়, কখনো হয়না।
না হলে সরকারী মেডিকেলের আউটডোরে যাই। তবে কথিত ডাক্তার নজরুল ইসলাম চেম্বারে আসা এক রিক্সাচালক জানান, তার শিশুর পেট ব্যথা নিয়ে এখানে এসেছিলেন । কিন্তু একসপ্তাহ ধরে কোনো ফল পাননি। বাধ্য হয়ে শিশু বিশেষজজ্ঞকে দেখিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, নজরুল ইসলাম নিজে ব্যবস্থাপত্র লিখে তার প্রখাতী ফার্মেসীতেই ওষুধ কিনতে রোগীদের বাধ্য করেন। আর ওষুধ বিক্রিই তার আসল ব্যবসা।
এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, কথিত ডাক্তার নজরুল ইসলাম বলেন, আমি কোন ডাক্তার নই। আমার এখানে কোন রুগী দেখা হয়না। এটা মাত্র ওষুধের দোকান। দোকানে ট্রেড লাইসেন্স বা ড্রাগ লাইসেন্স আছে কি না ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লাইসেন্স নেই তবে করে নিব !
মতিহার বার্তা ডট কম – ১৪ জুলাই ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.