আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আর কিছু ক্ষণের অপেক্ষা। চাঁদের মাটিতে নামতে রওনা হবে ভারত। এর আগে চাঁদের মাটি ছুঁয়েছিল আর তিনটি দেশ। রাশিয়া (সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন), আমেরিকা ও চিনের পরেই তালিকায় ভারত থাকবে চার নম্বরে।
এই প্রথম চাঁদের মাটিতে ‘পা’ ছোঁয়াচ্ছে ভারত। ইসরোর ‘চন্দ্রযান-২’ রওনা হচ্ছে সোমবার ভোর রাতে। ভারতীয় সময় রাত ২টো ৫১ মিনিটে। যাচ্ছে চাঁদের সেই দক্ষিণ মেরুর মুলুকে, যেখানে এর আগে নামতে পারেনি আর কোনও দেশ। ভারতের এই পদক্ষেপ তাই বিশ্বে প্রথম। চন্দ্রযান-২-এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক বাঙালির নামও। যিনি বানিয়েছেন চন্দ্রযান-২-এর সাতটি অ্যান্টেনা।
অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ন মহাকাশ কেন্দ্র (এসডিএসসি) থেকে রবিবার ভোর রাত ২টো ৫১ মিনিটে অত্যন্ত শক্তিশালী, সর্বাধুনিক ‘জিএসএলভি-মার্ক-৩’ রকেটের পিঠে চেপে রওনা হবে চন্দ্রযান-২। যাতে থাকবে একটি ‘অরবিটার’। যা চাঁদের বিভিন্ন কক্ষপথে থেকে প্রদক্ষিণ করবে। চন্দ্রযান-২-এ থাকবে একটি ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। থাকবে একটি রোভারও। যার নাম- ‘প্রজ্ঞান’। যা চাঁদের পিঠে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে-চরে বেড়াবে। ভারতের আগে মাত্র তিনটি দেশ রোভার পাঠাতে পেরেছে চাঁদে। রাশিয়া (সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন), আমেরিকা ও চিন।
ইসরো সূত্রের খবর, উৎক্ষেপণের প্রায় দেড় মাস পর সেপ্টেম্বরে (৫ গভীর রাত ও ৬ ভোর রাতের মধ্যে) চাঁদের পিঠে পা ছোঁয়াবে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। নামার সঙ্গে সঙ্গেই সেই ল্যান্ডার থেকে বেরিয়ে আসবে খুবই ছোট একটি রোভার ‘প্রজ্ঞান’। যার ওজন মাত্র ২০ কিলোগ্রাম। আর চন্দ্রযান-২-এর সার্বিক ওজন ৩ হাজার ৮৫০ কিলোগ্রাম। ল্যান্ডারটি নেমে আসার সময় চন্দ্রযান-২-এর অরবিটারটি চাঁদের পিঠ (লুনার সারফেস) থেকে থাকবে মাত্র ১০০ কিলোমিটার উপরে।
ভারতের চন্দ্রাভিযান সম্পর্কে এগুলি জানেন তো?
চন্দ্রযান-২ পাঠানোর উদ্দেশ্য, চাঁদের পিঠের বালিকণায় মিশে রয়েছে কোন কোন মৌল ও খনিজ পদার্থ আর তা রয়েছে কী পরিমাণে, তা জানা। সেই মৌল বা খনিজগুলি নিষ্কাশনের যোগ্য কি না, তা যাচাই করা। যে স্বপ্নটা প্রথম দেখেছিলেন ভারতের প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, দক্ষিণ মেরুর দিকেই চাঁদের অন্দরে এখনও বয়ে চলেছে জলের ধারা। উল্কাপাত বা অন্য কোনও মহাজাগতিক বস্তু আছড়ে পড়ায় সেখানে একটি বিশাল গর্ত (ক্রেটার) তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এর ফলে চাঁদের অন্দরে মৌল বা খনিজ বা জলের খোঁজতল্লাশের কাজটা সহজতর হয়ে উঠতে পারে।
ভারতের প্রথম চন্দ্রাভিযান হয়েছিল ২০০৮ সালে। চাঁদের কক্ষপথে গিয়েছিল চন্দ্রযান-১। চাঁদে জলের অন্যতম উপাদান হাইড্রক্সিল আয়নের হদিশ দিয়েছিল চন্দ্রযান-১।
মতিহার বার্তা ডট কম ১৫ জুলাই ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.