নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগরী এলাকার তালাইমারী বালুঘাট অবৈধ বালুমহাল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এনিয়ে আজ বুধবার দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান চলছে বলে নিশ্চিত করেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। এছাড়া ওই ঘাটে অবৈধ বালু কারবারিদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়।
রাজশাহী জেলা প্রশাসেনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত আমান আজিজ বলেন, আট জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, নগরীর বুলনপুর এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে আনোয়ার হোসেনের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ শুনানি শেষে রাজশাহীর জেলা প্রশাসককে ফের এ আদেশ দেন।
আদেশপ্রাপ্তির দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতের আদেশ কার্যকর করা হয়েছে এ মর্মে তা একটি হলফনামার মাধ্যমে আদালতকে অবহিত করার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই রিট মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে আগামি ৯ জুলাই। রিট দাখিলকারী আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব ও মোহাম্মদ আমান উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রিটকারী নগরীর বুলনপুরের আনোয়ার হোসেন অভিযোগে বলেন, তিনি রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পবা এলাকার একটি বৈধ বালুমহালের ইজারাদার। জেলা প্রশাসন থেকে তিনি কয়েক কোটি টাকা নিলাম ডেকে বালুমহালটি পেয়েছেন। একই সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টু পদ্মার ১২০ একর আয়তনের চরশ্যামপুর ও খিদিরপুর বালুমহাল দুটির নিলামকারী বৈধ ইজারাদার। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতা বেন্টু নিজের দুটি বৈধ বালুমহাল ছাড়াও ইজারাবহির্ভুত এলাকা নগরীর তালাইমারীতে নতুন বালুঘাট খুলে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন।
ফলে তিনি বালু ব্যবসায় চরম আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। একাধিকবার উচ্চ আদালত নির্দেশ দিলেও আওয়ামী লীগ নেতা তার বালুঘাটটি বন্ধ করেনি বলে আনোয়ারের অভিযোগ। তিনি আরও জানান তালাইমারীর অবৈধ বালুঘাটটি বন্ধে তিনি হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করেছিলেন গত মে মাসে।
দুইতরফা শুনানি শেষে গত ১৩ মে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রাজশাহীর জেলা প্রশাসনকে তালাইমারী বালুঘাট বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসন গত ৩ জুন ইজারাবহির্ভূত এলাকা তালাইমারী এলাকা থেকে বালু উত্তোলন বন্ধসহ বালুঘাটটি বন্ধের জন্য আওয়ামী লীগ নেতা বেন্টুকে একটি চিঠি দেন।
আনোয়ার হোসেনের আরও অভিযোগ, জেলা প্রশাসনের চিঠি পাওয়ার পরও আজ অবধি তালাইমারী বালুঘাটটি বন্ধ করা হয়নি। ফলে তিনি আবারও হাইকোর্টে পৃথক রিট দাখিল করেন। সর্বশেষ উচ্চ আদালত তালাইমারীসহ পদ্মার সকল অবৈধ বালুঘাট বন্ধের আদেশ দিয়েছেন।
আনোয়ার হোসেনের আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব জানান, আদালত তালাইমারীসহ পদ্মার সকল অবৈধ বালুঘাট বন্ধের পাশাপাশি আদালতের আদেশ অনুযায়ী বন্ধ করা হয়েছে মর্মে হলফনামা দাখিল করতেও আদেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসককে। জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে তারা আদালত অবমাননার রুল চাইবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
মতিহার বার্তা ডট কম ২৪ জুলাই ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.