জানা গেছে, প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন উপায়ে স্থানীয় অসাধু জেলেরা ইলিশ শিকার করে তা স্বল্প মূল্যে বিক্রি করছে। তবে বেশির ভাগ জেলে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সময় অনুদান না পাওয়ার দাবী করেছেন। তারা সংসারের খরচ জোগাতে নিরুপাই হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীতে নেমেছেন বলে জানিয়েছেন।
আরো জানা গেছে, এবার জেলেদের মা ইলিশ বিক্রি করতে কোনো রকম ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে না। প্রতিটা জেলের মোবাইল নাম্বারই বিভিন্ন গ্রাহকে দেওয়া আছে। মোবাইলের মাধ্যমে পেমেন্ট করলেই গ্রাহকদের কাছে ইলিশ পাঠানো হচ্ছে। এতে ধরা পড়ার ঝামেলাও কম বলে জানান এসব অসাধু জেলেরা।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর ও উপজেলা প্রশাসন সার্বিক চেষ্টা করছে। ৮ই অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত চারঘাট উপজেলাধীন পদ্মা নদীতে ৬ টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৩১,৫০০ মিটার কারেন্ট জাল। যার মূল্য প্রায় ৬ লক্ষ টাকা। এছাড়াও ২২টি অভিযান পরিচালনা করেছে চারঘাট উপজেলা মৎস্য অফিস। এতকিছুর পরেও থেমে নেই মা ইলিশ শিকার।
রাওথা গ্রামের বাশার আলী জানান, জেলে তালিকায় প্রকৃতদের নাম নেই। যারা সরকারের সাহায্য পায় তারা প্রকৃত জেলে না। অনেক সময় চেয়ারম্যান-মেম্বার তাদের পছন্দের লোককে ওই সরকারি সহায়তার চাল দেয়। এ কারণে বাধ্য হয়ে নিষেধাজ্ঞা না মেনে ইলিশ ধরে পানির দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
চারঘাট ইউনিয়নের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম জানান, বাসা পর্যন্ত মহিলা ও বাচ্চাদের মাধ্যমে বাজারের ব্যাগে ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের এক হালি ইলিশ ১ হাজার থেকে ১৬ শ টাকার বিনিময়ে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। তবে কেউ ক্যাশ নিতে চায় না। মোবাইলের মাধ্যমে আগে পরিশোধ করতে হয়। এরপর মাছ বাসায় পৌঁছে যায়।
মৎস্য ব্যবসায়ী আকতার জানান, গত তিন হলো নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। তাই দাম কিছুটা কম। তবে আগে মোবাইলে টাকা পরিশোধ করতে হয়। দাম সম্পর্কে তিনি বলেন, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের প্রতি কেজি ইলিশ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা এবং কেজি সাইজের ইলিশ ৬শ থেকে ৭শ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিনিয়র চারঘাট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের অভিযান সব সময়ই চলমান আছে। আজকেও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। কোনো জেলে নিষেধ অমান্য করে নদীতে নামলে তার জেলের কার্ড বাতিল করা হবে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে চারঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ নাজমুল হক জানান, উপজেলাতে ৬৬৩ জন ইলিশ আহোরনকারী জেলে আছে। এর মধ্যে অনুদান পেয়েছে ২৭৯ জন জেলে। আমরা উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকের কাছে আরো বেশি বরাদ্দের জন্য আবেদন জানিয়েছি। আর মা ইলিশ সংরক্ষণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকম অভিযান চলমান আছে বলে জানান তিনি।
মতিহার বার্তা ডট কম – ২৪ অক্টোবর ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.