এসএম বিশাল: বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) একটি প্রকল্পে অতিরিক্ত কার্যাদেশের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা লোপাট করার অভিযোগ উঠেছে।
নওগাঁ জেলায় খাস খাল/খাড়ী পুনঃখননের অতিরিক্ত কাজের কার্যাদেশ দিয়ে এই টাকা লোপাট করা হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রকল্পের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রকল্প পরিচালক চেষ্টা করলেও তার সহকারী প্রকৌশলীর কারণে তা সম্ভব হয়নি বলে সূত্র জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় খালের গতিপথ, ভৌত অবস্থা ও পানি নিষ্কাশনের কথা বিবেচনা করে আরো কিছু কাজ করা প্রয়োজন দেখা দেয়। সে কারণে চকপাকুড়িয়া হতে বারমাসিয়া অভিমুখি খালের কাজ করার জন্য সাত লক্ষ ৪০ হাজার ৩৮৪ টাকার অতিরিক্ত কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া পলাশবাড়ী খালের কাজ করার জন্য ১৬ লক্ষ ৫৩ হাজার ১৯০ টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়। আর বিল মনসুর খালের কাজের জন্য পৃথক পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১৫ লক্ষ ৬৩ হাজার ৭০৭ টাকা, ১৩ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯৫০ টাকা, ১৫ লক্ষ ৪৯ হাজার ৭৭ টাকা, ১০ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯৬৩ টাকা এবং ১৬ লক্ষ ৭০ হাজার ১৬০ টাকার অতিরিক্ত কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
বিএমডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক এটিএম মাহফুজুর রহমান এই কার্যাদেশ প্রদান করেন। গত বছরের ১৫, ২০ ও ২১ মে প্রকল্পের এই অতিরিক্ত কার্যাদেশ দেওয়া হয় এবং নূন্যতম ১৫ দিন ও সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার আদেশ দেয়া হয়।
বিএমডিএর একটি সূত্র জানায়, প্রকল্পের এই কাজগুলো দেখভালের দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন সহকারী প্রকৌশলী সানজিদা খানম মলি।
প্রকল্প পরিচালক প্রকল্পের এই কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত পেরে উঠেননি। প্রকল্প পরিচালক পুরো প্রকল্পের বেশির ভাগ কাজই নিজে তদারকি করলেও অতিরিক্ত কার্যাদেশ দেওয়া কাজগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়নে তদারকি ও দেখভালের দায়িত্ব দেন সহকারী প্রকৌশলী সানজিদা খানম মলিকে।
কিন্তু এই নারী প্রকৌশলী কর্তব্য কাজে অবহেলা করেন। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত কার্যাদেশ দেওয়া কাজগুলো সম্পন্ন না করেই পরষ্পর যোগসাজসের মাধ্যমে বিল তুলে নেয়া হয়। এতে কর্তৃপক্ষের বিপুল অংকের টাকা অপচয় হয়। পাশাপাশি প্রকল্পের কাজ কিছুটা অসম্পন্ন থেকে যায়। তবে প্রকল্প পরিচালক এর দায় এড়াতে পারেন না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্রটি আরো জানায়, প্রকল্প কাজে সহকারী প্রকৌশলী সানজিদা খানম মলির দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা নিয়েও যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিএমডিএতে একটি সি-িকেট বিভিন্ন উপায়ে কর্তৃপক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
আর এই সি-িকেটের অন্যতম একজন হলেন সহকারী প্রকৌশলী সানজিদা খানম মলি। সম্প্রতি নতুন নির্বাহী পরিচালক দায়িত্ব গ্রহণের পর এই সি-িকেটের কার্যক্রম বর্তমানে কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে। তবে সি-িকেটের কেউ কেউ নানা কৌশলে আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে বিএমডিএর প্রকল্প পরিচালক এটিএম মাহফুজুর রহমান দাবি করেন, প্রকল্পের কাজ সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। কোনো অনিয়ম হয়নি।
সহকারী প্রকৌশলী সানজিদা খানম মলি সব অভিযোগ অস্বীকার করে করেন, ‘আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সঠিক নয়। আর প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবেই করা হয়েছে। টাকা লোপাটের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মতিহার বার্তা ডট কম – ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.