নিজস্ব প্রতিবেদক : শুক্রবার (৬ মার্চ) রাত ১০টা। রাজশাহীর পবা থানাধিন পারিলা ইউনিয়নের মাড়িয়া উত্তর পাড়ার সদ্য নির্মিত নতুন রাস্তার নির্মান কাজ চলমান। তাও আবার ২/৩ নং ইটের খোয়ার মিশ্রনে তৈরী হচ্ছে এ রাস্তা। দেখার কেউ নেই।
যাইহোক এ রাস্তা দিয়েই চলছে ১৫-২০টি সারিবদ্ধ ট্রাক্টর। রাস্তার ১২টা বাজিয়ে দেখা যায় ট্রাক্টর গুলি একটি আমবাগানের ভেতর প্রবেশ করছে। কিছুক্ষন পরেই দেখা গেল বাগানের ভেতর থেকে মাটি ভর্তি আরো ১০-১২টি ট্রাক্টর বেরিয়ে আসছে।
একটি ট্রাক্টর থামিয়ে চালকের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আম বাগানের ভেতর দিয়ে কিছুদুর এগিয়ে যান সেখানে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এই মাটি যাচ্ছে কোথায় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাটি নিয়ে যাচ্ছি ইট ভাটায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ের মতো উচু ঢিপি ভেকু মেশিন দিয়ে কেটে ট্রাক্টরে লোড দেয়া হচ্ছে। আর সেই মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়।
সেখানে উপস্থিত থেকে যারা এ অপকর্ম করছেন তাদের মধ্যে সানাউল্লার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুকুরের মালিক আনসার, মুনসুর, সাজ্জাদ ও সাইদুল। তবে পুকুর কাটতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফারদিন নামের এক ব্যক্তি। পুকুরের আয়তন সাত বিঘা। রাতের আধারে পুকুর কাটছেন দিনে কেন নয় ? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পবা থানা মিট করে পুকুর কাটা হচ্ছে। থানা থেকে কর্মকতা বলেছেন রাতে কাজ করতে।
এ বিষয়ে মুঠো ফোনে পবা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)কে পুকুর কাটার বিষয়ে অবগত করলে তিনি বলেন, আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাচ্ছি তখন রাত ১০টা। রাত প্রায় সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেন এসআই আরিফ ও সঙ্গীয় ফোর্স। বাগানেসর ভেতর প্রবেশ করলেন। পুকুর মালিকদের সাথে আলাপচারিতা করলেন। মজার ঘটনা কোন ব্যবস্থা না নিয়েই তিনি ফিরে গেলেন।মুঠো ফোনে
জানতে চাইলে এসআই আরিফ বলেন, সরে জমিন দেখে গেলাম ওসি স্যারের সাথে যোগাযোগ করুন।
পুণরায় (ওসি) পবাকে ফোন দিয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সিদ্ধান্ত বা কি ব্যবস্থা নিলেন তাও বললেন না। ফোন রেখে দিলেন।
জমি রক্ষার স্বার্থে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট মুঠো ফোনে ফোন দিয়ে পুকুর কাটার বিষয়টি অবগত করা হলে তিনি বলেন, পদ্মায় বিয়ের নৌকা ডুবি ঘটনায় তিনি ব্যস্ত আছেন। পরে ফোন দেয়ার জন্য বলেন এই কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, গ্রামে তিন ফসলি জমি নষ্ট করে পুকুর খনন এবং ইট ভাটা নির্মান। আর রাজশাহী মহানগরীতে পুকুর ভরাটের প্রতিযোগীতা।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বার বার বলছেন, ফসলি জমি নষ্ট করে কোন প্রকার প্রজেক্ট বা কার্যক্রম নয়। তারপরও এ ধরনের কার্যক্রম কোন ক্রম থেমে নেই। বরং দিন দিন তা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে অসাধু এক শ্রেনীর ব্যবসায়ী, সরকার দলীয় নেতা, কাউন্সিলর ও চেয়ারম্যান। এরা সংশ্লিষ্ট থানা ম্যানেজ করেই এরুপ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে মহানগরীতে থাকবেনা পুকুর। আর গ্রামে থাকবে ফসলি জমি। নতুন প্রজম্নের ভবিষ্যৎ অন্ধকার এমনি মন্তব্য বিশিষ্ট জনের।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সূদৃষ্টি আর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল ও বিশ্লেষকরা।
মতিহার বার্তা ডট কম – ০৭ মার্চ , ২০২০
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.