শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
আদালতে ‘খুনির’ সমর্থকদের আস্ফালন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা

আদালতে ‘খুনির’ সমর্থকদের আস্ফালন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা

আদালতে ‘খুনির’ সমর্থকদের আস্ফালন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা
আদালতে ‘খুনির’ সমর্থকদের আস্ফালন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা

অনলাইন ডেস্ক: ২২ বছর আগে খুন হন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আমজাদ হোসেন। রোববার (১৩ ডিসেম্বর) সেই খুনের মামলার রায় ঘোষণার দিন ছিল।

তবে এই রায় ঘোষণার আগে ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও সেই হত্যা মামলার প্রধান আসামি নেজামুদ্দিনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে আদালত প্রাঙ্গণে মহড়া দিয়ে কর্তব্যরত সাংবাদিকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।

পরে আদালতের রায়ে এই মামলায় নেজামুদ্দিন চেয়ারম্যানসহ ১০ আসামির ফাঁসির দণ্ডাদেশ হয়। এছাড়া মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে আরও পাঁচ আসামির এবং বেকসুর খালাস পেয়েছেন চারজন।

জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর আমজাদ হোসেন চেয়ারম্যান হত্যা মামলার রায়ের আগে পুলিশের সামনেই কর্তব্যরত সাংবাদিকদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালান চেয়ারম্যান নেজামুদ্দিনের সমর্থকরা। এ সময় তারা সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করার পাশাপাশি তাদের ক্যামেরা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন।

নেজামুদ্দিন সমর্থকদের দ্বারা লাঞ্ছিত সাংবাদিকরা হলেন- বেসরকারি টেলিভিশন সময় টিভির সিনিয়র রিপোর্টার পার্থ প্রতিম বিশ্বাস, যমুনা টিভির সিনিয়র রিপোর্টার হোসাইন জিয়াদ, জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক আবু আজাদ, ডিবিসি নিউজের রিপোর্টার শহীদুল সুমন, চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের ক্যামেরাপারসন আবু জাহেদ, দীপ্ত টিভির ক্যামেরাপারসন সায়মন আল মুরাদ, চ্যানেল আইয়ের ক্যামেরাপারসন মো. নবাব, ডিবিসি নিউজের ক্যামেরাপারসন পারভেজ, একাত্তর টিভির ক্যামেরাপারসন জহির, সময় টিভির ক্যামেরাপারসন আতিকসহ আরও অনেকে।

রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আমজাদ হোসেন চেয়ারম্যান হত্যা মামলার আসামিদের একটি পুলিশ ভ্যানে করে আদালতে নিয়ে আসা হয়। আসামিদের গাড়ি থেকে নামানোর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশসহ আসামিদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নেজামুদ্দিনের সমর্থকরা। এ সময় কর্তব্যরত সাংবাদিকরা ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে তারা সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে এসে ছবি তুলতে বাধা দেন এবং ক্যামেরা-মোবাইল কেড়ে নেয়ার চেষ্টা চালান।

আসামিদের আদালতের তৃতীয় তলায় নেয়ায় সময় পুলিশের সামনেই কর্তব্যরত সাংবাদিক, আইনজীবী ও উৎসুক জনতাকে লাঞ্ছিত করতে থাকে এই বাহিনী। এ সময় দ্বিতীয় তলায় দাঁড়িয়ে থাকা জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক আবু আজাদকে শারীরীকভাবে লাঞ্ছিত ও তার মোবাইল কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয়।

পরে তৃতীয় তলায় বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের সামনে আসামিদের ছবি তুলতে চাইলে দায়িত্বরত ক্যামেরাপারসনদের ওপর হামলে করেন চেয়ারম্যানের নেজামুদ্দিনের সর্মথকরা। প্রায় ২০ মিনিট ধরে তারা কর্তব্যরত সাংবাদিকদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দিয়ে সড়িয়ে নেয়।

ঘটনার সময় উপস্থিত টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এনামুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘আজ চাঞ্চল্যকর আমজাদ হোসেন চেয়ারম্যান হত্যা মামলার রায় ছিল। আসামিদের যখন নিয়ে আসা হচ্ছিল তখন আসামিদের সমর্থকরা পুলিশের সামনেই স্লোগান দিচ্ছিল। আমরা যখন তাদের ছবি নিতে যাই আসামিপক্ষের লোকজন মিছিল সহকার আমাদের সাংবাদিকদের ওপর আঘাত করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ সময় কেউ ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে, কেউ আইডি কার্ড ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে, আবার কেউ শার্টের কলার ধরে টান দেয়। আসলে এটি খুব দুঃখজনক ঘটনা। আমরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে আসছি, কিন্তু সন্ত্রাসীরা এই আদালতে পুলিশের সামনেই তাদের পেশিশক্তি দেখানোর চেষ্টা করেছে।’

আমজাদ হোসেন স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক সারওয়ার কামাল জাগো নিউজকে বলেন, ‘শুধু আজ সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা নয়, গত ২২টি বছর ধরে এই নেজাম ও তার পালিত গুন্ডারা সাতকানিয়ায় ত্রাশ চালিয়ে আসছে। আমজাদ হোসেন হত্যার প্রতিবাদ করায় আমরা বছরের পর বছর বাড়ি যেতে পারি নাই। এলাকার অনেক বৃদ্ধ মানুষ পর্যন্ত নির্যাতনের শিকার হয়ে আমাদের কাছে ছুটে আসতো।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) নোবেল চাকমা জাগো নিউজকে বলেন, ‘আজ বড় একটি মামলার রায় ছিল। বিষয়টি দেখার কথা জেলা পুলিশের, কিন্তু তাদের কোনো কর্মকর্তা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। সাংবাদিকদের নাজেহাল হওয়ার খবর পেয়ে আমরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এদিকে, চাঞ্চল্যকর আমজাদ হোসেন চেয়ারম্যান হত্যা মামলায় আজ ১০ আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে আরও পাঁচ আসামির। বেকসুর খালাস দেয়া হয় চারজনকে।

রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক একেএম মোজাম্মেল হক এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সাতকানিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নেজামুদ্দিন, মানিক, তারেক, ফরোখ আহমদ, বসির আহমেদ, ইদ্রীস, জাহেদ, রাসেদ, জিল্লুর রহমান ও জসিমউদ্দিন। তাদের বাড়ি সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া এলাকায়।

যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন- রফিক, মোর্শেদ, হারুন, আয়ুব ও ইদ্রিস। খালাস পেয়েছেন- আবু তাহের, আবদুল মালেক, খায়ের আহমেদ, মোস্তাক আহমেদ। জাগো নিউজ

মতিহার বার্তা ডট কম: ১৩ ডিসেম্বর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply