শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার!
শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি রামেক

শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি রামেক

শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি রামেক
শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি রামেক

নিজস্ব প্রতিবেদক : শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল। রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে হাসপাতালটিতে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন। এখানে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন রোগী এবং তাদের স্বজনরা। শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেটের কারণে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা।

অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার এসব দালালদের পৃষ্ঠপোষকতা করে। আর হাসপাতাল সংলগ্ন কিছু মানুষও দালালদের সাথে সম্পৃক্ত। এছাড়া হাসপাতালের সন্নিকটে কিছু ওষুধের দোকানের মালিক দালালদের সাথে সম্পর্ক রাখেন। ২০-২৫টি দলে বিভক্ত হয়ে প্রায় এক হাজার দালাল জিম্মি করেছে রামেক হাসপাতাল। তাদের দাপটে নির্বিঘ্নে সেবা দিতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

তবে পুলিশ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ডিসেম্বরের শুরু থেকে হাসপাতাল থেকে দালাল উচ্ছেদ অভিযানে গত এক মাসে রোগী এবং তাদের স্বজনদের সাথে প্রতারণার অভিযোগে ৩০ জন দালালকে আটক করে মামলা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া দালালদের ডাটাবেজ (তালিকা) তৈরি করা হচ্ছে। অচিরেই দালালদের পূর্ণাঙ্গ তথ্য সম্বলিত তালিকা তৈরি করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রামের মোজাহার, মোল্লাপাড়ার পলি, আলীগঞ্জ নতুনপাড়ার মিঠুন, একই এলাকার আসমা বেগম, ভাটাপাড়ার রজনী আক্তার, দাশপুকুর এলাকার রিতা, লক্ষীপুর কাঁচাবাজার এলাকার মনোয়ার হোসেন জিম, মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার কলাবাগানের সোহান, মতিহার থানার ডাসমারি এলাকার শাজাহান এবং জেলার পুঠিয়া উজেলার রঘুরামপুর এলাকার আবু সাঈদসহ প্রায় ২০ জনের নেতৃত্বে রয়েছে দালালদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট।

এছাড়া রামেক হাসপাতাল সংলগ্ন লক্ষ্মীপুর, কাজিহাটা, ঘোষপাড়া, বন্ধগেট, কলাবাগান, সিপাইপাড়া এলাকার কিছু ব্যক্তির ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এছাড়া এসব ব্যক্তিদের লক্ষ্মীপুর এবং এর আশপাশে রয়েছে ওষুধের দোকান। এসব ব্যক্তি দালালদের সাথে সম্পর্ক রাখে। দালালরা হাসপাতাল থেকে প্রতারণা করে রোগী এসব ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভাগিয়ে আনেন। এছাড়া ওষুধের দোকানেও রোগীর স্বজনদের নিয়ে যায় দালালরা। এর বিনিময়ে দালালরা নির্দিষ্ট হারে কমিশন পেয়ে থাকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রামেক হাসাপতালের বর্হিবিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নেন গড়ে প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার রোগী। এছাড়া হাসপাতালে প্রতিদিন ভর্তি হন ছয় থেকে সাতশ’ রোগী। এসব রোগী এবং তাদের স্বজনদের টার্গেট করে দালালচক্রের সদস্যরা। বর্হিবিভাগে রোগী এবং স্বজনরা টিকিট কাটার সময় থেকেই তাদের ওপর নজরদারি শুরু করা হয়। এরপর নির্দিষ্ট চিকিৎসকের কক্ষ থেকে রোগী বের হলেই ব্যবস্থাপত্র দেখতে এবং আরও ভালো ডাক্তার দেখানোর কথা বলে প্রতারণার প্রক্রিয়া শুরু করে।

সোমবার সকালে সরেজমিন গিয়ে এমনই চিত্র দেখা যায়। রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর উপজেলার তালতলা গ্রামের ছাদ্দাম হাওলাদারের স্ত্রী লাবন্য লতা নামে একজন নারী প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় লাবন্য লতা রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানায় প্রসাদ দাস নামে একজন দালালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। প্রসাদ রাজশাহীর মহানগরীর কাজিহাটা এলাকার লক্ষণ দাসের ছেলে।

মামলার এজাহারে লাবন্য উল্লেখ করেন, গত ১ জানুয়ারি বিকালে তিনি শাহাজাদপুর থেকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মহানগরীর পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আসেন। এরপর সেখানে প্রসাদ দাসসহ আরও ৭-৮ জন দালালের খপ্পরে পড়েন। তাকে পপুলার থেকে ভালো একটি ক্লিনিকে চিকিৎসার কথা বলে পাশেই চন্ডীপুর এলাকার একটি বাসায় একজন ভুয়া নারী চিকিৎসকের বাসায় নিয়ে যায়। এরপর ভিজিটসহ বিভিন্ন ধরনের টেস্টের কথা বলে তার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয় প্রসাদসহ দালালচক্রের সদস্যরা।

এ বিষয়ে মহানগরীর রাজপাড়া থানার। অফিসার ইনচার্জ ওসি মাজাহারুল ইসলাম বলেন, রোগীদের সাথে এ ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। প্রতারিতরা দালালদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চান না। এবারই প্রথম একজন নারী মামলা করলেন। প্রসাদসহ এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত অন্য দালালদের আটকের চেষ্টা চলছে। ওসি আরও বলেন, রামেক হাসপাতালকে দ্রুত সময়ের মধ্যেই দালালমুক্ত করা হবে।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানি জানান, হাসপাতাল দালালমুক্ত করার জন্য আরও আনসার সদস্য বাড়ানো হচ্ছে। হাসপাতালের প্রত্যেক গেটে আনসার সদস্যরা থাকবেন। এছাড়া পুলিশ সদস্যরাও সক্রিয় থাকবেন। আশা করছি, আর এক মাসের মধ্যে হাসপাতাল পুরোপুরি দালালমুক্ত হবে।

মতিহার বার্তা ডট কম: ১১ জানুয়ারী ২০২১

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply