জঘন্য ফিল্ডিং ও অতি জঘন্য কিপিংয়ে লজ্জার হার ভারতের”

জঘন্য ফিল্ডিং ও অতি জঘন্য কিপিংয়ে লজ্জার হার ভারতের”

মতিহার বার্তা ডেস্ক : হাতে ৩৫৮ রানের পুঁজি৷ মোহালিতে রোহিত-ধাওয়ানদের বিধ্বংসী ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছিল বুঝি অনায়াসে সিরিজ জয় নিশ্চিত করবে টিম ইন্ডিয়া ৷ তবে ম্যাচের চিত্রটা যে অন্যরকমভাবে লেখা ছিল তা বোঝা যায় ম্যাচের শেষে৷

ঘাড়ের উপর বিশাল রানের বোঝা নিয়ে পালটা ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া মাত্র ১২ রানের মধ্যে দু’জন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বসে৷ তার পরেও ১৩ বল বাকি থাকতে অজিরা ৬ উইকেটে ৩৫৯ রান তুলে ম্যাচ জিতে যায় টপ অর্ডারে খোওয়াজা ও মিডল অর্ডারে হ্যান্ডসকম্ব, ম্যাক্সওয়েল, টার্নারের মিলিত প্রচেষ্টায়৷ মোহালির ৪ উইকেটে ম্যাচ জয়ে অস্ট্রেলিয়া পাঁচ ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজে ২-২ সমতা ফেরায়৷ ফলে কোটলায় সিরিজের শেষ ওয়ান ডে কার্যত ফাইনাল ম্যাচের রূপ নেয়৷

অবশ্য ম্যাচ হারের জন্য অজি ব্যাটসম্যানদের যতটা কৃতিত্ব দেওয়া যায়, ঠিক ততটাই দোষ দেওয়া যায় ভারতীয় ফিল্ডারদের৷ জঘন্য গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ের উদাহরণ দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে বেশ কিছু বাড়তি রান উপহার দেওয়া ছাড়াও এক ঝাঁক ক্যাচ ফেলে ভারতীয় ফিল্ডাররা৷ উইকেটের পিছনে গ্লাভস হাতে ঋষভ পন্ত ছিলেন দেখার অযোগ্য৷ এমন টেকনিক নিয়ে অন্তর্জাতিক পর্যায়ে ঋষভের কিপিংয়ের সুযোগ পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক৷

দুই ওপেনারের দুরন্ত ব্যাটিংয়ে ভর করে রানের পাহাড়ে চড়ে ভারত৷ রোহিত-ধাওয়ানের ১৯৩ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপ অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়৷ তবে অল্পের জন্য এদিন ব্যক্তিগত শতরান হাতছাড়া করেন রোহিত৷ ৭টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৯২ বলে ৯৫ রান করে আউট হন তিনি৷

ধাওয়ান অবশ্য কোনও ভুল করেননি৷ ১৪৩ রানের মেগা ইনিংস খেলেন গব্বর৷ ১১৫ বলের ইনিংসে ১৮টি বাউন্ডারি ও তিনটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি৷ ওয়ান ডে কেরিয়ারে এটিই ধাওয়ানের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস৷

লোকেশ রাহুল প্রথম একাদশে ফিরে ২৬ রানের যোগদান রাখেন৷ বিরাট কোহলি আউট হন ৭ রান করে৷ ঋষভ ২৪ বলে ৩৬ ও বিজয় শঙ্কর ১৫ বলে ২৬ রানের কার্য়করী যোগদান রাখেন৷ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৭০ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট নেন প্যাট কামিন্স৷ ঝাই রিচার্ডসন নিয়েছেন ৮৫ রানে ৩ উইকেট৷

অস্ট্রেলিয়া শুরুতেই অ্যারন ফিঞ্চ (০) ও শন মার্শের (৬) উইকেট হারিয়ে বসে৷ ফিঞ্চকে ভুবনেশ্বর ও মার্শকে বুমরাহ বোল্ড করেন৷ পিটার হ্যান্ডসকম্বকে সঙ্গে নিয়ে উসমান খোওয়াজা তৃতীয় উইকেটের জুটিতে ১৯২ রান যোগ করেন৷ উপর্যুপরি দ্বিতীয় শতরানের হাতছানি উপেক্ষা করে খোওয়াজা আউট হন ৯১ রান করে৷ হ্যান্ডসকম্ব ওয়ান ডে কেরিয়ারের প্রথম শতরান করেন মোহালিতে৷ ৮টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ১০৫ বলে ১১৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি৷

ম্যাক্সওয়েল ১৩ বলে ২৪ রানের ঝোড়ো যোগদান রাখেন৷ অ্যালেক্স ক্যারি ১৫ বলে ২১ রান করে আউট হন৷ অ্যাস্টন টার্নার ৪৩ বলে ৮৪ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন৷ তিনি ৫টি চার ও ৬টি ছক্কা মারেন৷ যদিও বার দু’য়েক ভারতীয় ফিল্ডারদের হাত থেকে জীবনদান পান তিনি৷

চাপের মুখে মিসফিল্ডে রান গলিয়েছেন রোহিত শর্মা, কোদার যাদব, লোকেশ রাহুল, জসপ্রীত বুমরাহরা৷ ক্যাচ ছেড়েছেন কেদার, ধাওয়ান, ঋষভ৷ বাই রান ও ওভার থ্রো দেওয়া ছাড়াও দু’টি সহজ স্ট্যাম্প আউটের সুযোগ হাতছাড়া করেন পন্ত৷ এতটাই খারাপ কিপিং করেন তিনি, যে মোহালির গ্যালারিতে ধোনি ধোনি কোরাস শোনা যায়৷বুমরাহ শেষমেশ তিনটি উইকেট পেলেও আখেরে লাভ কিছুই হয়নি৷ সাড়ে তিনশোর বেশি রান তুলেও ম্যাচ হারতে হয় ভারতকে৷

পরিচিত পরিবেশ-পরিস্থিতিতে টস জয়ের সুবিধা ছিল ভারতের কাছে৷ স্কোর বোর্ডে বিশাল রানের রসদ ছিল৷ তা সত্ত্বেও ঘরের মাঠে এমন হার লজ্জার বটে৷

অন্যদিকে প্রতিকূলতাকে জয় করে দুরন্ত ক্রিকেট উপহার দেয় অস্ট্রেলিয়া৷এটাই তাদের সব থ্কে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড৷সব মিলিয়ে ওয়ান ডে ক্রিকেটে পঞ্চম বৃহত্তম রান চেস৷এমন স্মরণীয় জয়ের নায়ক হিসাবে ম্যাচের সেরার পুরস্কার হাতে তোলেন টার্নার৷

মতিহার বার্তা ডট কম ১০ মার্চ ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply