শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার!
রামেক হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের সাথে চিকিৎসকদের দুর্ববহার নিত্যদিনের ঘটনা, প্রতিকার মিলছে না

রামেক হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের সাথে চিকিৎসকদের দুর্ববহার নিত্যদিনের ঘটনা, প্রতিকার মিলছে না

রামেক হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের সাথে চিকিৎসকদের দুর্ববহার নিত্যদিনের ঘটনা, প্রতিকার মিলছে না
রামেক হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের সাথে চিকিৎসকদের দুর্ববহার নিত্যদিনের ঘটনা, প্রতিকার মিলছে না

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে চিকিৎসকদের দুর্ব্যবহার নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোগীর স্বজনের সাথে চিকিৎসকরা দুর্ব্যবহার করেন- এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তার পরেও এ অবস্থার কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। মিলছে না কোনো প্রতিকার। এখন আবার যোগ হয়েছে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসকদের দুর্ব্যবহার। তবে হাতে গোনা কিছু চিকিৎসক আছেন যারা রোগী ও স্বজনদের প্রতি সহানুভুতিশীল ও ভালো ব্যবহার করেন। আর বেশিরভাগ চিকিৎসকই দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে ইতোপূর্বে সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে কর্মসূচিও পালিত হয়েছে।

রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের (২২নং ওয়ার্ড) ভুক্তভোগীরা জানান, করোনা রোগী ও তার স্বজনরা রোগীর সমস্যা নিয়ে কখা বলতে গেলে অধিকাংশ সময়ই স্বজনদের সাথে ধমক দিয়ে কথা বলেন। আবার কখনো কথা শুনেই তাড়িয়ে দিচ্ছেন। এ নিয়ে হতাশা বাড়ছে ভুক্তভোগীদের মাঝে। তারা বলছেন, করোনা ইউনিটের ডাক্তাররা নিজেদের ভাবছেন দামি মানুষ। আর ভুক্তভোগীরা গরু-ছাগল। তা না হলে জনগনের টাকায় যাদের বেতন। কোন সাহসে ধমক দিয়ে কখা বলেন তারা। এসব ডাক্তারের মধ্যে কেউ কেউ এমন আছেন যেনো তিনি ডাক্তার নন, মাস্তান।

করোনা ইউনিটে ভর্তি এক রোগীর স্বজন জানান, গত সোমবার রাত ১০টার দিকে তার রোগীর বিষয়ে পরামর্শ নিতে এক ডাক্তারের চেম্বারে যান। তিনি তখন কয়েকজন ওষুধ কোম্পানির লোকজন নিয়ে দরজা লাগিয়ে আলাপ করছিলেন। এ সময় তিনি খুবই আচারণ করেন।

রোগীর স্বজন চেম্বারের দরজায় টোকা দিতেই উচ্চ স্বরে ডাক্তার বলেন এই কে? উত্তরে রোগীর স্বজন বলেন, স্যার আমি রোগীর লোক। ডাক্তার তখন বলেন- কি সমস্যা। স্বজন বলেন, স্যার শুনছি ৬৫ হাজার টাকা দামের একটা ইনজেকশান দিলে করোনা রোগী সুস্থ হয়ে যাবে। ডাক্তার বলেন, আপনার রোগীর অক্সিজেন কত লিটার চলছে? স্বজন জানান, স্যার ৪ লিটার। ওই ইনজেকশন সবার জন্য না। আপনার রোগীর লাগবেনা বলেই কথা শেষ করলেন। আর বললেন এখান থেকে যান।

ডাক্তারের আচরণে হতাশ, হতভম্ব, ক্ষুদ্ধ রোগীর স্বজন বলেন, হাসি মুখে কথা বলাটাও ইবাদত। তাছাড়া ডাক্তার যদি রোগীর সমস্যা শুনে হাসি মুখে পরমর্শ দেন, তাহলে তো রোগীর মন ভালো থাকে। তাহলে একটা শিক্ষিত মানুষ জেগে ঘুমায় কি ভাবে? এনিয়ে রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
ওই ওয়ার্ডের ফ্লোরে থাকা একজন রোগীর স্বজন অভিযোগ করে বলেন, রাউন্ডে পাতলা শরীরের একজন ডাক্তার আসেন। তিনি আবার সমস্যাই শুনতে চান না। বলার চেষ্টা করলে রেগে যান। বলেন এক কথা রোজ বলেন কেন? ওষুধ যা লিখা আছে চলবে। প্রাণঘাতি করোনা রোগীদের সাথে এই ধরনের আচরণ না করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

এদিকে প্রায় একমাস থেকে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর একজন স্বজন বলেন, মূমুর্ষ রোগী নিয়ে আসা রোগীর স্বজনরা একবার নার্সের রুমে একবার ডাক্তারের রুমে দৌড়াচ্ছেন। তাদের অবস্থা দেখে অনেক রোগীর স্বজনরা এগিয়ে আসছেন। কেউ বয় ডেকে অক্সিজেন নিয়ে আসছেন আবার কেউ তার নিজ রোগীর জন্য কেনা অক্সিমিটার দিয়ে পালস্ চেক করছেন। ততক্ষণে রোগীর দেহ নিথর। ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে পুরো শরীর। এরপর রোগীর স্বজনদের কান্নাকাটি শুনে ছুটে আসছেন নার্স। পরিস্থিতি বুঝে ডাকছেন ডাক্তারকে। ডাক্তার যখন আসছেন ৩০/৪০ মিনিট অতিবাহিত হয়ে গেছে। ততক্ষণে রোগী মারা গেছেন। ডাক্তার এসে আক্সিমিটার দিয়ে পালস্ চেক করে যা বলছেন, তা হলো, আমরা সব চিকিৎসা দিয়েছি। রোগীর অবস্থা নাজুক। আপনারা অপেক্ষা করুন। ডাক্তার তার চেম্বারে প্রবেশ করার পর নার্স বলছেন ট্রলি নিয়ে আসেন। রোগী মারা গেছেন। শুধু অবহেলা আর অবহেলা। নার্সকে ডাকলে বলে বয়, আয়া ডাকুন। ডাক্তারকে ডাকলে বলে নার্স ডাকুন এই হচ্ছে করোনা ইউনিটের বর্তমান পরিস্থিতি।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ২টা রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধিন পঞ্চবটি এলাকার বাসিন্দা মাখন নামের এক ব্যক্তিকে মূমুর্ষ আবস্থায় নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। কিন্তু ডাকাডাকি করেও ৪০ মিনিটের মধ্যে কোন নার্স বা ডাক্তার আসেননি। এমনিক তার মুখে অক্সিজেনও লাগানো হয়নি। রোগিটি অবহেলায় আর বিনা চিকিৎসায় ছটপট করতে করতে তার দেহ নিথর হয়ে গেল। পরে স্বজনদের কান্নাকাটির আওয়াজ শুনে নার্স এসে বললেন, রোগী মারা গেছে। ওয়ার্ডেও বাইরে যান। তার মানে কান্নার অনুমতিও নেই।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী যখন ওয়ার্ডে ভিজিটে যান তখনই শুধু ডাক্তারদের তৎপরতা দৃশ্যমান হয়। তারপর পরিচালক চলে গেলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দেখা মেলাও ভাগ্যের বিষয়।

তবে এসব অভিযোগ সম্পর্কে ডাক্তারদের সাফ জবাব, স্বজনদের সাথে তারা দুর্ব্যবহার করেন না। এ অভিযোগ সঠিক নয়।

তবে জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানীর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply