শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার!
 বাঘার দৃষ্টিনন্দন স্থান ঐতিহাসিক দীঘি ও শাহী মসজিদ মন কাড়ে পর্যটকদের

 বাঘার দৃষ্টিনন্দন স্থান ঐতিহাসিক দীঘি ও শাহী মসজিদ মন কাড়ে পর্যটকদের

 বাঘার দৃষ্টিনন্দন স্থান ঐতিহাসিক দীঘি ও শাহী মসজিদ মন কাড়ে পর্যটকদের
 বাঘার দৃষ্টিনন্দন স্থান ঐতিহাসিক দীঘি ও শাহী মসজিদ মন কাড়ে পর্যটকদের

ইলিয়াস আহম্মেদ (বাঘা প্রতিনিধি): ভ্রমন পিপাসুদের মন প্রায় ছুটে যেতে চায় প্রাকৃতিক সুন্দর্যমন্ডিত কোন না কোন স্থানে। তেমনি একটি বিখ্যাত ঐতিহাসিক স্থান রাজশাহীর বাঘায় অবস্থিত ৫০০বছরের সুবিশাল দীঘি ও শাহী মসজিদ। বিস্তৃর্ণ এলাকার প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থীর ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠে। সরকারী পৃষ্টপৌষকতায় পর্যটন কর্পোরেশনের আওতায় নিলে বাঘা হয়ে উঠতে পারে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। সরকার প্রতি বছর এখান থেকে অনেক টাকার রাজস্ব পেতে পারে।

সুত্রে জানা গেছে, রাজশাহী শহর থেকে ৪৮ কিঃ মিঃ দক্ষিন পুর্বে উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত প্রাচীন এই নিদর্শন। হযরত শাহদৌলা (রহঃ)ও তাঁর পুত্র হযরত শাহ আব্দুল হামিদ দানিশ মন্দ (রহঃ) এর স্মৃতি বিজড়িত রওজা শরীফ। ৫০০ বছরের ঐতিহাসিক শাহী মসজিদ ও ৫২ বিঘা জমি জুড়ে দর্শনীয় বিখ্যাত সুবিশাল দীঘি। জনশ্রুতি আছে, কোন এক সময়ে অতিথি আপ্যায়নের জন্য মানুষ দীঘির কিনারে গেলে ডেকসি,থালাবাসন প্রভৃতি পানির নিচ থেকে ভেসে উঠত। সে গুলো নিয়ে অতিথি আপ্যায়ন শেষে অবার দীঘিতে রেখে যেতো ।

একদা কোন এক ব্যক্তি ওই সব জিনিষ ফেরত না দেয়ার ফলে ভেসে উঠা বন্দ হয়ে যায়। কথিত আছে, পানির উছিলায় বিভিন্ন বালা মুছিবত দুর হয় ফলে হাজার হাজার মানুষ দীঘিতে এসে গোসল করে এবং দীঘি থেকে পানি নিয়ে যায়। এক সময় শীত মৌসুমে এই দীঘিতে অসংখ্য অতিথি পাখির আগমন ও কলতানে এলাকা মুখরিত হয়ে উঠতো। বাংলার স্বাধীন সুলতান আলাউদ্দীন হুসাইন শাহর পুত্র নাসির উদ্দীন নসরত শাহ (রহঃ) হিজরী ৯৩০ অর্থাৎ ১৫২৩/২৪ খ্রীঃ বাঘা শাহী মসজিদ নির্মানের সময় জনকল্যানার্থে দীঘি খনন করেন। দীঘির চার পাশে সারি বদ্ধ অসংখ্য নারিকেল গাছ। পূর্ব পার্শে একটি মাজার,কেন্দ্রীয় গোরস্থান ও আম্র কানন। উত্তরে দৃষ্টিনন্দিত প্রকৃতি ঘেরা বিল। উত্তর পশ্চিম কোনে যাদুঘর। তার পাশেই ইসলামী একাডেমি ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা এর সংলগ্নে রয়েছে একটি মহল পুকুর। পশ্চিম তীরে ঐতিহাসিক শাহী মসজিদ ও মাজার। দক্ষিনে ফাজিল মাদ্রাসা । এর পাশের্ব রয়েছে রেষ্টহাউজ ও হাজার বছরের ঐতিহাসিক তেঁতুল গাছ।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, এখানে এক সময় এশিয়া মহাদেশের এক মাত্র ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এখান থেকে সামান্য দক্ষিনে গেলে দেখা যাবে বয়ে চলেছে প্রমত্তা পদ্মা।

উল্লেখ্য শাহী মসজিদটি সম্পুর্ণ প্রাচিরে ঘেরা এবং উত্তর-দক্ষিন বেষ্টনি প্রাচীরে একটি করে প্রবেশদ্বার রয়েছে। মসজিদটির আয়তন উত্তর দক্ষিনে ৭৫ ফিট ৮ ইঞ্চি, পূর্ব পশ্চিমে ৪২ ফুট ২ ইঞ্চি এবং দেয়ালগুলো ৭ ফুট ৬ ইঞ্চি প্রসস্থ। মসজিদের ভিতরের মেহরাব গুলোতে রয়েছে অতি সুন্দর কারুকার্য। অত্যান্ত আকর্ষনীয় এ মসজিদটি আয়তাকার বহুগম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ। ইতোপূর্বে ত্রিবেনীতে জাফর খান গাজীর মসজিদ এবং গৌড়ের তাঁতীপাড়া মসজিদের তিন ধরনের ভুমি পরিকল্পনা দেখা গেছে। টেরাকোটা অর্থাৎ পোড়া মাটির অলংকরণে সম্ভবত এই মসজিদটি অদ্বিতীয়। মসজিদের বাইরে এবং ভেতরে দেয়াল, খিলান, প্যানেল সর্বত্র টেরাকোটা নকসা দেখা যাবে। প্রতিটি মেহরাব একটি ফ্রেমে আবদ্ধ। ফ্রেমের উপর ও পাশে নানা ধরনের নকসা রয়েছে। মেহরাবের খিলান গুলো বহু পত্র বিশিষ্ট দেয়ালের একঘেঁয়েমি দূর করার জন্য বিভিন্ন প্যানেল সৃষ্টি করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের ৫০ টাকার নোটে এ মসজিদের ছবি মুদ্রিত রয়েছে।

ঐতিহাসিক এই স্থানে প্রতিদিন শত শত পর্যটকের দল ছুটে আসে। হাজার হাজার দর্শনার্থীর ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠে যা ভ্রমন পিপাসুদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। পর্যটন কর্পোরেশনের আওতায় বাঘায় পর্যটন মটেলসহ কিছু উদ্দ্যোগ নিলে দেশ বিদেশের হাজার হাজার পর্যটকদের কাছে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এবং সরকার এ পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করে দেশের অনেক টাকা রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করতে পারে ।

জানা যায়, বর্তমান মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ইতি পুর্বে বাঘায় এক জনসভায় ঐতিহাসিক শাহী মসজিদ, দীঘি ও মাজার এলাকাকে পর্যটন শিল্পের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া গত ২৪ জানুয়ারী (২০১৪) পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব শাহরিয়ার আলম বাঘা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অচিরেই এই স্থানকে পর্যটন কর্পোরেশনের আওতায় আনার ঘোষনা দেন। আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাপিয়া সুলতানা জানান, দেশ বিদেশ থেকে অনেক পর্যটক এখানে আসেন। বাঘার এই ঐতিহাসিক দীঘি ও শাহী মসজিদ এলাকাকে পর্যটন কর্পোরেশনের আওতায় এনে দেশের অন্যতম আকর্ষনীয় এবং দর্শনীয় স্থান হিসেবে গড়ে তুলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সরকারের অনেক রাজস্ব বৃদ্ধি পেতে পারে।

উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. লায়েব উদ্দীন লাভলু বালেন, পর্যটন কর্পোরেশনের আওতায় বাঘায় মটেলসহ কিছু উদ্দ্যোগ নিলে দেশ বিদেশের হাজার হাজার পর্যটকদের কাছে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে আমাদের বাঘা।

মতিহার বার্তা / এম জি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply