অনলাইন ডেস্ক: কুড়িগ্রামে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
শনিবার (২৮ আগস্ট) বিকেল ৩টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৩৪ এবং ব্রহ্মপুত্র নদ চিলমারী পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ।
বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় লোকজন বিপাকে পড়েছে। বন্যায় ১০ হাজার ৯৫ হেক্টর রোপা আমন, বীজতলা ও শাক-সবজি তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার গ্রামীণ সড়কগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় মানুষ ঘরে বন্দি হয়ে আছে।
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তার ইউনিয়নে দেড় হাজার বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে চর গুজিমারিতে ৪ শতাধিক, দাগারকুটিতে ৪ শতাধিক, গাবুরজানে ৩ শতাধিক, বাবুরচরে ২ শতাধিক এবং নয়াডারায় ২ শতাধিক পরিবার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদের উজানে ভারতের কয়েক রাজ্যে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন ও ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার মহু বাদশা জানান, তার আশপাশের এলাকায় ৪২০টি পরিবারের বাড়িঘরে পানি ওঠা শুরু করেছে। এর মধ্যে বালাডোবায় ৬৫টি, উত্তর বালাডোবায় ২৫টি, ফকিরের চরে ৬০টি, মশালের চরে ৭০টি, সরকারপাড়া, আল-আমিনের বাজার ও ব্যাপরী পাড়ায় ২ শতাধিক বাড়িঘরে পানি উঠেছে। বসতবাড়িতে পানি ওঠায় লোকজনের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
সদরের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চর বড়াইবাড়ি এলাকার মেম্বার আব্দুল আলীম জানান, তার ওয়ার্ডে শতাধিক বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। চর বড়াইবাড়ি সাবেক চৌধুরীর হাট এলাকায় বাড়িঘরে পানি ওঠায় লোকজন অন্যত্র চলে যাচ্ছে। শনিবার মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে শামসুল আলম পার্শ্ববর্তী আব্দুস সামাদের উঁচু বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। একই এলাকার মৃত ফজলের ছেলে সিরাজুল শামসুল সর্দারের বাড়িতে রফিকুলের মা জয়নালের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এদের বাড়িঘরে গলা পর্যন্ত পানি উঠেছে।
কুড়িগ্রাম খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক জানান, নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় ১০ হাজার ৯৫ হেক্টর জমি তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে রোপা আমন ৯ হাজার ৯৪৫ হেক্টর, শাক-সবজি ১৩০ হেক্টর এবং বীজতলা ২০ হেক্টর।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.