শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
কুকুরের মাংস খাওয়ার জন্য বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে ভারতে

কুকুরের মাংস খাওয়ার জন্য বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে ভারতে

কুকুরের মাংস খাওয়ার জন্য বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে ভারতে
কুকুরের মাংস খাওয়ার জন্য বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে ভারতে

অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি থেকে কুকুর পাচার করে ভারতের মিজোরাম ও নাগাল্যান্ড রাজ্যের জীবন্ত পশু কেনা-বেচার বাজারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।আইনে নিষেধ থাকলেও দেশের সীমান্তবর্তী জেলা রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অবাধেই কুকুর শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে ভারতের মিজো ও কুকি উপজাতির লোকজন। পাচার হওয়া এসব কুকুর বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ৬ থেকে ৭ হাজার টাকায়। বিডিমর্নিং

গত ২০ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার ২১ আনসার ব্যাটেলিয়ান জামে মসজিদ এলাকা থেকে কুকুর শিকারের কিছু ছবি-ভিডিও হাতে এসেছে।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর দুই যুবক লাঠি ও দড়ি দিয়ে বানানো বিশেষ ফাঁদে আটকে বেশ কয়েকটি কুকুরকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ধরে ফেলার পর সরু তার দিয়ে কুকুরগুলোর মুখ বেঁধে দেওয়া হয়। এছাড়া কুকুরগুলো যাতে পালিয়ে যেতে না পারে প্রতিটি কুকুরের গলায় আটকে দেওয়া হয় শুকনো বাঁশ। যুগান্তর

প্রত্যক্ষদর্শী ও দীঘিনালা উপজেলার বাসিন্দা অভি বড়ুয়া বলেন, “ভারতের মিজোরাম ও নাগাল্যান্ড রাজ্যের উপজাতিরা কুকুরের মাংস খায়। আর এই দুই রাজ্যের কুকুরের চাহিদার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পাচার হয় বাংলাদেশ থেকে।”

তিনি বলেন, “কুকুরের এ চাহিদা মেটাতে মিজোরাম থেকে আসা কুকুর শিকারিরা পাহাড়ের বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে ঘুরে কুকুর ধরে। কিছু দিন পরপরই এই শিকারীরা কুকুর ধরতে আসে। এলাকায় এদের সবাই ‘মিজো’ নামে চেনে। অত্যন্ত অমানবিকভাবে তারা কুকুর ধরলেও স্থানীয়রা কোনো বাঁধা দেয় না।

প্রাণিকল্যাণ আইন ২০১৯ অনুযায়ী, মালিকবিহীন কুকুর হত্যা বা অপসারণ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ অপরাধের জন্য ৬ মাসের জেল এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। ডেইলি ইসলাম

অভি বড়ুয়া জানান, প্রতি মাসেই খাগড়াছড়ির দীঘিনালার জামতলী বাজার, বোয়ালখালি বাজার, বাবুছড়া ও থানা বাজার থেকে কুকুর পাচার হয় ভারতে। এসব কুকুর ভারতের মিজোরামে ছাগল বা মুরগির মতোই বিক্রি হচ্ছে।

রাঙ্গামাটি পৌর এলাকার বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, বিভিন্ন সময় শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে লঞ্চে করে নদী পথে বেওয়ারিশ, এমনকি মালিকানাধীন কুকুরও শিকারিরা ধরে নিয়ে যায়। তিনি জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বরও শহরের ফিসারিঘাটে কয়েকজন লোককে একটি বড় লঞ্চে কুকুর ভর্তি করে নিয়ে যেতে দেখেছেন।

পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ দ্য নেচারের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন রিয়াদ বলেন, ভারত-বাংলাদেশের সীমানা রেখার দুই পাশেই মিজো ও পাংখোয়া উপজাতির বসবাস; এরাই কুকুর খায়।

সম্প্রতি আমরা রাঙ্গামাটি জেলার সীমান্তবর্তী শিলছড়ি এলাকায় জনসচেতনতামূলক কিছু কাজ করছিলাম। এর ঠিক পাশেই কুকি পাড়া বিজিবি ক্যাম্প। উপজাতিদের অনেকেই আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন, প্রতিবছর শীত মৌসুমে মিজোরাম ও নাগাল্যান্ডে একটি উৎসব হয়। এই উৎসবে খুব অমানবিকভাবে কুকুর হত্যা করে মাংস পুড়িয়ে খাওয়ার রীতির প্রচলন আছে।”

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে ট্রাকে করে এবং রাঙ্গামাটি শহর থেকে ইঞ্জিন চালিত বোটে করে এসব কুকুর প্রথমে রাঙ্গামাটির মাইনী বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মাইনী থেকে কাপ্তাই হৃদ হয়ে ঠেগামুখ সীমান্ত দিয়ে এসব কুকুর চলে যায় মিজোরামে।

 এমনই এক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আন্ডারওয়াটার ফটো সাংবাদিক শরিফ সারওয়ার।নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, “একটি গবেষণার কাজে প্রায় দুই মাস রাঙ্গামাটিতে ছিলাম। সেসময় কাপ্তাই হৃদের বরকল এলাকায় আমরা একটি বোট দেখতে পাই, ওই বোটে প্রায় ২০-৩০ টি কুকুর ছিলো। খুব নির্মমভাবে পা-মুখ বেঁধে এসব কুকুরকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো।”

আমি যখন সেই বোটের লোকজনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তারা জানিয়েছিল রাঙ্গামাটি শহর থেকে কুকুরগুলো মিজোরামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নদী পথে তারা প্রথমে রাঙ্গামাটির ঠেগামুখ সীমান্তে যাবে, সেখান থেকে মিজোরাম”, বলেন শরিফ সারওয়ার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙ্গামাটি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. বরুণ কুমার দত্ত বলেন, “শহর থেকে কুকুর ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের জানা নেই।”

খাগড়াছড়ি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মো. নুরুল আফসার বলেন, “এটা যদি কেউ করে থাকে তাহলে তা অমানবিক কাজ। তবে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।”

তবে সীমান্ত দিয়ে ভারতে কুকুর পাচারের কোনো তথ্য বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) কাছ নেই বলে জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সাহীদুর রহমান ওসমানী।

বিজিবি দক্ষিণ-পূর্ব রিজিয়নের কর্মকর্তা লে. কর্নেল আসাদ বলেন, “টাকার জন্য সীমান্ত এলাকার মানুষরা অনেক কিছুই করে। আমাদের ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর অনেকেও কুকুর খায়। আপনাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই করে, এ কাজ কারা করছে, কেনো করছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেবো।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply