স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে মাদক নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় ক্ষুব্ধ হয়ে জাতীয় দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার সাংবাদিক ইফতেখার আলম বিশালের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে মাথা ও পিঠে রক্তাক্ত যখম করে কয়েকজন মাদককারবারি ও তাদের সহযোগীরা। এ ঘটনায় প্রধাণ দুইজন আসামিকে গ্রেফতারও করে চন্দ্রিমা থানা পুলিশ।
এখন মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ফন্দি আটছে মাদক বারবারি ও তার সহযোগীরা। মিথ্যা মামলাসহ হত্যার হুমকি প্রদান করা হচ্ছে তাদের পক্ষ থেকে। এঘটনায় ভুক্তভোগী ইফতেখার আলম বিশাল চন্দ্রিমা থানায় নিরাপত্তা সার্থে একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। সাংবাদিক বিশাল জানান, গত ২৪ জুলাই হেরোইনসহ মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এর হাতে গ্রেফতার হয় ওয়াকিল আহম্মেদ কালু (৩৪)।
পরে দীর্ঘ ২ মাস জেল থেকে মুক্তি পেয়ে জামিনে আসে কালু। তারপর থেকেই সাংবাদিক বিশালকে হত্যার সড়যন্ত্র করে কালু ও শ্যামলী।
সাংবাদিক বিশাল বলেন, কালু ও শ্যামলী জেলে থাকলেও বাকি আসামি ও তাদের আত্মীয় স্বজনরা আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান করছে। মামলা তুলে না নিলে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়া হবে। এছাড়াও হত্যার হুমকি দেয় হামলাকারীরা। পরে নিজের নিরাপত্তা সার্থে গত ২২ নভেম্বর চন্দ্রিমা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করি।
ঘটনা সুত্রে জানা যায়, পেছন থেকে সন্ত্রাসীদের অতর্কিত হামলায় সাংবাদিক বিশাল জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। রামেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরেন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. এমরান আলী বলেন, ১৮ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে শিরোইল কলোনি এলাকায় বিশাল নামের এক সাংবাদিকের ওপর অতর্কিত হামলা করে কয়েকজন সন্ত্রাসী। পরে দুপুর ১টার দিকে সাংবাদিক বিশাল ও তার পরিবার থানায় এসে সাতজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এক নম্বর আসামি মো. ওয়াকিল আহম্মেদ কালুসহ (৩৮) আরেক আসামি শ্যামলীকে (৪০) সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয়।
মামলার এজহারে বিশাল উল্লেখ করেছেন, বৃহস্পতিবার ১৮ নভেম্বর সকালে বালু ঘাটের ব্যবসায়িক সহযোগীদের টাকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল যোগে রওয়ানা হচ্ছিলাম। ওই সময় আমার বাড়ির সামনেই পেছন থেকে কয়েকজন সন্ত্রাসী হামলা চালায়। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করলে আমি জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। এসময় আমার প্যান্টের পকেটে থাকা বালু ঘাটের ব্যবসার ৬৬ হাজার ৫০০ টাকা ও গলায় থাকা আট আনি স্বর্ণের চেইন (যার মূল্য ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা) ছিনিয়ে নেয় তারা।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক বিশাল বলেন, কালু ও তার স্ত্রী শ্যামলী দীর্ঘদিন যাবৎ মাদকের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কিছুদিন আগেই হেরোইনসহ মহানগর ডিবি পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী শ্যামলীও পলাতক। পালানোর পরও শ্যামলী আড়ালে থেকে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যান। পরে তার স্বামীকে হাইকোর্ট থেকে জামিনে বের করে পুনরায় মাদকের রমরমা ব্যবসা শুরু করেন।
তিনি বলেন, পুলিশ ও ডিবি দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের আটকের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার আমি সংবাদ প্রকাশ করি। তারা দীর্ঘদিন ধরেই আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। মূলত তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় তারা ক্ষুদ্ধ হয়ে আজ সকালে কয়েকজন ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালান ও নগদ অর্থসহ সোনার চেন ছিনিয়ে নেন। এর পূর্বেও তারা আমাকে মারধর করেন। এখনো তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা জিডি চন্দ্রিমা থানায় রয়েছে।
ওসি মো. এমরান আলী বলেন, সাংবাদিক বিশালের ওপর হামলাকারীদের প্রধান দুই আসামি জেল হাজতে রয়েছে। পরে তাকে হত্যার হুমকি প্রদান করা হচ্ছে মর্মে ২২ জুলাই থানায় একটি সাধরণ ডায়েরী করেন তিনি। জিডিটি তদন্তের জন্য এসআই ফরুক হোসেনকে দায়ীত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.