শিরোনাম :
রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ১৬ মতিহার থানার সহযোগিতায় পরিবারের কাছে ফিরল হারিয়ে যাওয়া দুই শিশু তানোরে হিমাগারে রাখা আলুতে গাছ ভারতীয় আলু মজুদের অভিযোগ কয়েকটি রুটিন মেনে চললেই মুক্তি পাবেন তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন
রাজশাহীতে ৩ কোটি টাকার সড়ক তিন মাসেই শেষ

রাজশাহীতে ৩ কোটি টাকার সড়ক তিন মাসেই শেষ

রাজশাহীতে ৩ কোটি টাকার সড়ক তিন মাসেই শেষ
রাজশাহীতে ৩ কোটি টাকার সড়ক তিন মাসেই শেষ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠের পৌরসভা কাটাখালী। ২৪ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের পৌরসভাটির জনসংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার।

সরকারি নথিপত্রে দেশের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ পৌরসভা এটি। প্রতি বর্গকিলোমিটারে বসবাস ১ হাজার ৯০০ মানুষের। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের একেবারে পেটের ভেতরে অবস্থিত কাটাখালী পৌরসভাটি পবা উপজেলার আওতাধীন।

সম্প্রতি এই পৌরসভার একটি সড়ক ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। কাটাখালী বাজার থেকে পদ্মা নদীর শ্যামপুর ঘাট পর্যন্ত দক্ষিণমুখী সড়কটির ভয়াবহ ছবি ফেসবুকে পোস্ট দেন পৌরসভার বাসিন্দারা।

ক্ষতবিক্ষত সড়কটির কারণে পৌরসভার সাতটি মহল্লার হাজার হাজার বাসিন্দা নিজেরা কীভাবে চরম দুর্ভোগ পড়েছেন-তারই বিবরণ উঠে এসেছে এসব পোস্টে।

একজন বাসিন্দা আক্ষেপ করে লিখেছেন, শুধু একটি সড়কের করুণ পরিস্থিতির কারণে এলাকার মেয়েদের বিয়ে-শাদি দিতেও কষ্ট পেতে হয় অভিভাবকদের।

ভয়ংকর এই সড়ক দেখে কেউ এদিকে বিয়ে করতে রাজি হয় না। কাটাখালীবাসীর দুঃখের দিন শেষ হবে কবে-এমন শত শত মন্তব্য এসেছে বিভিন্ন পোস্টে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কাটাখালী বাজার থেকে শ্যামপুর ঘাট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কটি দিয়ে শ্যামপুর, দেওয়ানপাড়া, বাখরাবাজ, শ্যামপুর বাখরাবাজ, কাটাখালী, চরপাড়াসহ সাতটি গ্রামের মানুষকে নিয়মিত চলাচল করতে হয়। আসা-যাওয়া করতে হয় রাজশাহীসহ বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু বালুবাহী দানব ট্রাকের দাপটে তারা সড়ক দিয়ে চলতে পারেন না। অটোরিকশা থেকে সিএনজি-কোনো যান্ত্রিক যান এই পথে যেতে চায় না। ফলে লোকজনকে বাধ্য হয়ে হেঁটেই চলতে হয়। বর্ষায় জমে হাঁটু কাদাপানি। আর গ্রীষ্মে হাঁটু পরিমাণ ধুলাবালি। মোটরসাইকেল মালিকরা কাটাখালী বাজারে গাড়ি রেখে গায়ের পোশাক খুলে তিন-চার কিলোমিটার হেঁটেই বাসাবাড়িতে পৌঁছান। বছরজুড়েই সড়কটি কাদাপানি ও ধুলায় ডুবে থাকে।

পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, গত বছর মার্চে বরখাস্ত মেয়র আব্বাস আলী প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি পাকা করেছিলেন। কিন্তু তিন মাসও টেকেনি।

পৌরসভার বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, শ্যামপুরে পদ্মায় জেলা প্রশাসনের ইজারা দেওয়া একটি বালুঘাট আছে। প্রতিদিন এই ঘাট থেকে এ সড়কপথে এক হাজারের বেশি বালু ট্রাক ও ভারী ডাম্পার চলাচল করে।

আবার এ সড়কটি পৌরসভা দুই কোটি ৪ লাখ টাকায় ইজারা দিয়েছে। ইজারাদার বালু ট্রাক থেকে টোল উত্তোলন করেন। যদিও সড়ক ইজারার ৪০ লাখ টাকা বরখাস্ত মেয়র আব্বাস আলী পৌর তহবিলে জমা করেননি।

পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর বোরহান উদ্দিন রাব্বানী ও ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইয়াসিন আলী মোল্লাহ বলেন, অন্যের লাইসেন্সে বরখাস্ত মেয়র আব্বাসই সড়কটি করেছিলেন। সাত দিন যেতে না যেতেই সড়কটি নষ্ট হতে শুরু করে। তিন মাসের ভেতরে ছাল-বাকল উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। সড়কটি পুনঃসংস্কারের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ের কাছে টাকা চেয়েছিলাম। কিন্তু মন্ত্রণালয় বলে দিয়েছে তিন বছরের আগে এই সড়কে কোনো টাকা বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। এভাবেই পৌরবাসীকে আরও তিন বছর দুর্ভোগ মাথায় নিয়েই চলতে হবে।

দুর্ভোগকবলিত দেওয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কামরুল হাসান বলেন, জেলা প্রশাসন যতদিন না শ্যামপুর বালুঘাটের ইজারা বাতিল করছে-ততদিন কাটাখালীর সাত গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ কমবে না।

শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা বেগম নুরুন নাহার বলেন, এই এলাকায় কেউ না এলে এখানকার মানুষের দুর্ভোগ বুঝতে পারবে না। সড়কটির এ বেহাল পরিস্থিতির কারণে ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে যেতে যে কী দুর্ভোগ পোহাতে হয়-তা বলে বোঝানো যাবে না। এ সড়কের কারণে অনেকেই বাজারে বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন।

দুর্ভোগকবলিত সড়কটি সম্পর্কে জানতে চাইলে কাটাখালী পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আনোয়ার সাদাত নান্নু বলেন, কীভাবে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমানো যায়, সেই চেষ্টাই করছি।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply