বাঘা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় ঐতিহাসিক শাহী মসজিদ ও হযরত শাহদৌলা মাজারের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য শতাধিক দোকান সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারী) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এই কার্যক্রম চালানো হয়। এ সময় সেখানে উচ্ছেদকৃত ব্যবসায়ীরা পুনর্বাসনের দাবি জানান।
জানা যায়, বাঘায় ঐতিহাসিক শাহী মসজিদ ও হযরত শাহদৌলার মাজার গেটে ও আশেপাশে হরের রকমের শতাধিক দোকান বসানো হয়েছিল। এই দোকান বসানোর কারণে সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছিল। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবগত করা হলে তার নির্দেশে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দোকান সরিয়ে দেওয়া হয়।
এর আগে উপজেলা প্রশাসন তিনদিন সময় দিয়ে মাইকিং করেন। মাইকিং শোনার পর অনেকে নিজ নিজ দোকান সরিয়ে নেয়। কিন্তু কিছু ব্যবসায়ী দোকান সরিয়ে না নেওয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া সুলতানা ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তোহরাব হোসেনের উপস্থিতিতেে এদিন সকালে সকল দোকান সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে উচ্ছেদ করার পর ব্যবসায়ীরা নিরুপায় হয়ে পড়বেন বলে তারা দায়িত্বপ্রাপ্তকারীদের কাছে পুনর্বাসনের দাবি করেন।
এ বিষয়ে দোকানদার প্রিন্স ভূঁইয়া বলেন, আমি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে মাজার এলাকায় দোকান দিয়েছিলাম। আমার ৫ সদস্যের পরিবার। দোকান সরিয়ে দেওয়ায় নিরুপায় হয়ে পড়েছি। এদিকে ঋণের সাপ্তাহিক কিস্তি দিতে হবে। আমার মতো আরো প্রায় শতাধিক দোকনদারের একই অবস্থা।
বাঘা মাজারের মতোয়ালী রইশ উদ্দিন বলেন, বাইরে থেকে মানুষ এসে বিড়ম্বনায় পড়েন। বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হলে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সকল দোকান সরিয়ে দেন।
এ বিষয়ে বাঘা পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করার পাশাপাশি তাদের আলাদা কোন স্থানে পুনর্বাসন করা প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া সুলতানা বলেন, আমার কাছে ব্যবসায়ীরা পুনর্বাসনের দাবি করেছেন। আমি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর শাহরিয়ার আলম এমপির সাথে কথা বলে পরবর্তীতে এসব ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করবো।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক বলেন, বাঘা শাহী মসজিদ ও হযরত শাহদৌলা মাজার একটি পবিত্রস্থান। এর আশেপাশে কিছু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে দোকান বসানোর কারণে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। এই পরিবেশ যেনো আর নষ্ট না হয়, এ বিষয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারী জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে জেলা সমন্বয় সভায় দোকান উচ্ছেদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সেই মোতাবেক দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, বাঘা শাহী মসজিদ ও হযরত শাহদৌলা মাজারের কিছু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে দখল করে দোকান বসিয়েছিলেন। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছিলাম। আমার নির্দেশে তিনি ফোর্স নিয়ে দোকান উচ্ছেদ করেন দেন।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.