অনলাইন ডেস্ক: পাহাড়ি ঢলে ধনু নদের পানি বেড়ে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের বাঁধগুলো ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। হাওরের খালিয়াজুরী উপজেলার ৫৫ কিলোমিটারের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ সাত কিলোমিটার বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। সোমবার (১৮ এপ্রিল) সকাল থেকে ধনু নদের পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল থেকে বাঁধের চার স্থান ধসে গেছে।
পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় হাওরবাসী। জমিতে এখনো অধিকাংশই কাঁচা ধান। যদিও কৃষি বিভাগ জানাচ্ছে অর্ধেক কাটা হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবে হাওরের চিত্র ভিন্ন। কৃষকরা বলছেন, মাত্র ২৫ ভাগ ধান কেটেছেন তারা। তার ওপর কাঁচা, আধাপাকা। কৃষক মকবুল মোল্লাসহ অনেকেই বলেন, কাঁচার কারণে ধানে ৮/১০ মণের স্থলে ৩/৪ মণ পাচ্ছেন। এদিকে বাঁধ মেরামতে গত ২ এপ্রিল থেকেই দিনরাত এক করে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসী।
একদিকে ফসল রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা, অন্যদিকে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় কাঁচা ধান কাটছেন কৃষকরা। বছরজুড়ে কী খেয়ে বেঁচে থাকবেন–এমন দুশ্চিন্তায় দিনরাত কাটছে হাওরবাসীর। চলছে একপ্রকার নীরব হাহাকার।
এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক এফ এম মোবারক আলী জানান, হাওরের ধান ৬০ ভাগ কাটা শেষ, যা কৃষকের তথ্যের সঙ্গে মিল নেই। তবে সকালে মদন উপজেলার ফতেপুর তলার হাওরের বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই বাঁধের মধ্যে ১২০০ হেক্টর ফসল থাকলেও শতকরা ৫ ভাগ ডুবেছে। কৃষকরা বলছেন, কাঁচা ধান ৫ ভাগ কাটতে পারলেও বাকি সব তলিয়ে গেছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে আরও জানা যায়, এ বছর জেলায় বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৮ হেক্টর জমিতে।
এর মধ্যে হাওরেই আবাদ হয়েছে ৪১ হাজার হেক্টর জমি। কির্তনখোলা বাঁধ পরিদর্শনকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত বলেন, ‘এখন হাওরের ৩৬৫ কিলোমিটার ডুবন্ত বাঁধের সবটাই ঝুঁকিপূর্ণ। ধনুসহ সব নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুতগতিতে।
বাঁধের সমান সমান পানির লেভেল।বৃষ্টি হলেই উপচে হাওরে ঢুকবে পানি। এ ছাড়া আমরা আজ ১৬ দিন ধরে বাঁধগুলো টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। এখন আর কটা দিন পেলে হয়তো সম্পূর্ণ ধান কেটে ফেলতে পারত কৃষক।’ ধনুর নদের পানি বিপজ্জনকভাবে বাড়ছে বলেও জানান তিনি।
মতিহার বার্তা / এম আর টি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.