শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার!
তাজমহলে গোপন কুঠুরি, বন্ধ দরজা! সত্যিই কি লুকনো রয়েছে শাহি গুপ্তধন?

তাজমহলে গোপন কুঠুরি, বন্ধ দরজা! সত্যিই কি লুকনো রয়েছে শাহি গুপ্তধন?

তাজমহলে গোপন কুঠুরি, বন্ধ দরজা! সত্যিই কি লুকনো রয়েছে শাহি গুপ্তধন?
তাজমহলে গোপন কুঠুরি, বন্ধ দরজা! সত্যিই কি লুকনো রয়েছে শাহি গুপ্তধন?

মো.মিজানুর রহমান (টনি): ১৬০৭ সালে মীনাবাজারে প্রথম দর্শনেই নাকি ‘চুড়িওয়ালি’ আরজুমন্দ বানু বেগমের প্রেমে পড়েছিলেন যুবরাজ খুরম।

পরবর্তী কালে রাজনৈতিক কারণে বিয়ে করেন পারস্যের এক রাজপরিবারের কন্যাকে। ১৬১২ সালে খুরমের দ্বিতীয় বিয়ে হয় আরজুমন্দের সঙ্গে। তিনিই ইতিহাসে মমতাজ নামে পরিচিত।১৬২৮ সালে পঞ্চম মুঘল সম্রাট হওয়ার পরে খুরম নাম বদলে হন শাহজহান।

তার বছর তিনেক পরেই চতুর্দশ সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে প্রয়াত হন মমতাজ। তাঁরই সমাধিস্থলে শাহজাহান গড়ে তোলেন তাজমহল।তাজের স্থপতি হিসেবে তুর্কির উস্তাদ ইশার নাম ইতিহাসে পরিচিত। যদিও মুঘল জমানার শাহি নথি বলছে, তাজ পুরোপুরি দলগত প্রচেষ্টার ফসল।

সেখানে বলা হয়েছে অন্তত ৩৭ জন ‘বিভাগীয় প্রধান’ আর ২০ হাজার কারিগর ও শ্রমিকের কথা। ইশার ভূমিকা ছিল, বিভাগীয় প্রধানদের সমন্বয়ের।তাজের গম্বুজ তৈরি করতে তুরস্ক থেকে এসেছিলেন উস্তাদ ইসমাইল খান। গম্বুজ ও মিনারের মাথায় বসানো ধাতব অংশ তৈরির দায়িত্বে ছিলেন লাহৌরের কাজিম খান।

তাজের গায়ে বসানো দামি পাথরে ক্যালিগ্রাফি করেন ইরানের শিল্পী আমানত খান। উজবেকিস্তানের বুখারার মহম্মদ হানিফা ছিলেন ভিত্তি আর মূল স্থাপত্যের পাথরগুলি নিঁখুত মাপে কাটার দায়িত্বে।এমন ‘আন্তর্জাতিক উদ্যোগে’ সামিল ছিলেন তৎকালীন ভারতের শ্রেষ্ঠ মোজাইক শিল্পী দিল্লির চিরঞ্জিলালও।

প্রায় দু’দশক ধরে চলা নির্মাণের কাজের দৈনন্দিন হিসেবনিকেশ দেখাশোনা করতেন শাহজহানের বিশ্বস্ত ইরানি কর্মী মির আব্দুল করিম।তাজের জন্য রেড স্যান্ডস্টোন এসেছিল জয়পুর থেকে। রাজস্থানেরই মকরানা এবং বিদেশ থেকে আনা হয়েছিল শ্বেতপাথর (মার্বেল)। ক্যালিগ্রাফিতে ব্যাবহৃত পাথরের মধ্যে চিন থেকে জেড, তুর্কিস্তান থেকে ক্রিস্টাল, তিব্বত থেকে টার্কোয়েজ, আরাকান (মায়ানমার) থেকে হলুদ অ্যাম্বার, মিশর থেকে ক্রিয়োলাইট এসেছিল।

আফগানিস্তানের বদখ্‌শান থেকে আসে নীল লাপিস-লাজুলি।মমতাজ মহলের সমাধিসৌধ তাজমহলে নাকি বহু ঘর তৈরি করেছিলেন শাহজহান। তার মধ্যে মূল সামধিমন্দিরের তলায় থাকা ২২টি ঘর নাকি লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে গিয়েছে বহুকাল ধরেই।তাজ দর্শনের সময় প্রধান হলঘরের মার্বেলের জাফরির ভিতর দিয়ে দু’টি কবর দেখা যায়। সেগুলি আসল নয়। হলঘরে ঢোকার মুখে একটি সিঁড়ি নীচে নেমে গিয়েছে।

তার দরজা বন্ধ। আসল কবর দু’টি সেখানেই রয়েছে বলেই ইতিহাসবিদদের একাংশ বলে থাকেন।তুর্কি ও মুঘল স্থাপত্যে নকল সমাধির একাধিক উদাহরণ রয়েছে। দিল্লিতে ইলতুৎমিস এবং আগরায় আকবরের সমাধিও এমনই নিদর্শন। সেখানে মূল দেহাবশেষ রাখা লোকচক্ষুর অন্তরালে।তাজের উত্তর দিকে লাল স্যান্ডস্টোনের বড় প্ল্যাটফর্ম থেকে দু’টি সিঁড়ি নেমে গিয়েছে নীচে। সেখানে আছে ১৭টি কুঠুরি।

সেগুলি বন্ধ। এর নীচে রয়েছে একটি অলিন্দ। সেই অলিন্দ ঘুরে গিয়ে পৌঁছেছে মূল সমাধিস্থলের নীচে।ওই অলিন্দের নীচে চোরাকুঠুরির জল্পনার কথা উল্লিখিত রয়েছে ব্রিটিশ জমানার একটি নথিতে। ঘটনাচক্রে, ওই অলিন্দে আলো-বাতাস ঢোকার পথও তেমন ভাবে রাখা হয়নি।

ওই জল্পনাই সম্ভবত পরে তাজের তলায় গোপন গুপ্তধনের অস্তিত্বের দিকে মোড় নিয়েছিল।যুক্তিবাদীদের মতে, পাথরের তৈরি ঘরগুলিতে বেশি মানুষজনের ভিড় হলে তাঁদের নিশ্বাস থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইডের সংস্পর্শে এসে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় মূল কাঠামোর শ্বেতপাথরের ক্ষতি হতে পারে। সে কারণেই ওই ঘরগুলি বন্ধ করে রাখা হয়েছে।তাজের মূল ফটক এবং সমাধিসৌধের খিলানের চারপাশে কোরানের বাণীর ক্যালিগ্রাফিতে রয়েছে এক অসাধারণ বৈজ্ঞানিক নৈপুণ্য।

সাধারণ ভাবে চোখের সামনের অক্ষর বড় এবং দূরের অক্ষর ছোট দেখায়। কিন্তু এখানে অক্ষরের আকার ধীরে ধীরে নীচ থেকে উপরে বাড়ানো হয়েছে। ফলে নীচে দাঁড়িয়ে দেখলেও সব অক্ষর সমান আকৃতির লাগে।তাজের মোহমুক্ত হতে পারেননি ‘কৃপণতম সম্রাট’ হিসেবে পরিচিত মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেবও। বাবার বেহিসেবি খরচের সমালোচক হলেও নিজের স্ত্রী দিনরাজ বানু বেগমের মৃত্যুর পরে মহারাষ্ট্রের অওরঙ্গাবাদে তাজের অনুকরণে বানিয়েছিলেন ‘বিবি কা মকবরা’।

মতিহার বার্তা / এম আর টি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply