অনলাইন ডেস্ক : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোয় অগ্নিকাণ্ডে আগুন নেভাতে গিয়ে প্রাণ হারানো দুই ফায়ারফাইটারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে রাঙামাটিতে। শেষকৃত্যের আগে তাদের দুজনকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় ফায়ার সাভির্সের তরফ থেকে।
সোমবার (৬ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় তাদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এর আগে সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাদের মরদেহ নিয়ে আসা হয়। নিহত মিঠু দেওয়ান ও নিপন চাকমা দুজনই পার্বত্য জেলা রাঙামাটির সন্তান।
দুজনের মরদেহ রাঙামাটিতে আনার পর প্রথমেই তাদের নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। মিঠু দেওয়ানের মরদেহ শহরের ট্রাইবাল আদাম এলাকায় এবং নিপন চাকমার মরদেহ কলেজ গেট সুদীপ্তা দেওয়ান সড়কের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। মরদেহ বাড়িতে পৌঁছলে স্বজনদের কান্নায় পুরো এলাকা স্তব্ধ হয়ে পড়ে। সহকর্মী ও প্রতিবেশীরা নীরবে চোখের জলে এই ফায়ারফাইটারদের শেষ বিদায় জানান।
পরবর্তী সময়ে দুজনের মরদেহ ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। এ সময় তাদের দুজনকে গার্ড অব অনার দেয়া হয় ফায়ার সার্ভিসের তরফ থেকে।
এ সময় জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দুই ফায়ারফাইটারকে ফুল দিয়ে সম্মান প্রদর্শন করেন। এ ছাড়া শেষকৃত্যের জন্য পরিবারের হাতে জেলা প্রশাসন থেকে ১০ হাজার টাকা ও ফায়ার সার্ভিস থেকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
এরপর দুপুর ১২টায় তাদের মরদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। ব্রাহ্মণটিলা শ্মশানে মিঠু দেওয়ানের ও আসামবস্তি শ্মশানে নিপন চাকমার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
মিঠু দেওয়ানের ভাই টিটু দেওয়ান বলেন, মিঠু ১২ দিন ছুটি ভোগ করে শনিবার দুপুরে শহরের ট্রাইবাল আদাম এলাকার বাসা থেকে কুমিরায় কর্মস্থলে যোগ দেয়। সেদিন রাতেই সীতাকুণ্ডে আগুন নেভাতে গিয়ে কনটেইনার বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই মারা যায় মিঠু।
রাঙামাটি ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা জানান, গত নভেম্বরে নিপন চাকমা রাঙামাটি থেকে বদলি হয়ে সীতাকুণ্ড স্টেশনে যোগদান করেন। তিনি একজন দক্ষ কর্মী ছিলেন। তিনি এভাবে চলে যাবেন, সেটা মেনে নিতে পারছেন না তারা। ফায়ার সার্ভিস একজন দক্ষ কর্মী হারাল আর হারালাম প্রিয় সহযোদ্ধাকে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা বেদনাদায়ক, এ পেশাটাই এমন চ্যালেঞ্জের। সবসময়ই আমাদের ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হয়। কনটেইনারে দাহ্য পদার্থ ছিল এটা জানা থাকলে হয়তো এত প্রাণহানি হতো না।’
মতিহার বার্তা/এমআরটি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.