অনলাইন ডেস্ক: কোনো গাড়ি ৮০ বছরের, আবার কোনোটি ৭০ বছরের পুরোনো। বিভিন্ন নামিদামি মডেলের এমন পুরোনো ১৬টি গাড়ি নিয়ে বাংলাদেশ ভ্রমণে এসেছেন ইউরোপের একদল পর্যটক।

কয়েকটি জেলা ঘুরে তিন দিন পর বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ তারা পৌঁছান উত্তরের জেলা পাবনায়।ভারত, ভুটান শেষে বাংলাদেশ ভ্রমণ করছেন বিদেশি এই পর্যটক দল।

ভ্রমণকালে তারা বাংলাদেশের মানুষ, প্রকৃতি, শিল্প, সংস্কৃতি, খাবারের সাথে পরিচিত হচ্ছেন। এদেশের রূপ, রস, গন্ধে আর আথিতেয়তায় মুগ্ধ তারা।

বুধবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের অদূরে বাংলাবাজার রূপকথা ইকো রিসোর্টে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে বাহারি রং আর নামিদামি মডেলের গাড়ি। আলাপকালে জানা গেলো, এক নম্বর লেখা গাড়িটির বয়স ৮৮ বছর। আর দুই নম্বর লেখা গাড়িটির বয়স ৭০ বছরের ওপরে। বয়স অনুসারে গাড়িগুলোকে এভাবে সাজানো। অথচ দেখে বোঝার উপায় নেই গাড়িগুলো এত বছরের পুরোনো।

এমনই নানা ডিজাইন আর বাহারি রঙের দীর্ঘ বছরের পুরোনো ১৪টি গাড়ি ও দুটি মোটরবাইক নিয়ে তিনটি দেশ ভ্রমণে বের হয়েছেন ইউরোপের একদল পর্যটক। এই দলে রয়েছেন মোট ৪৩ জন। যাদের সবার বয়সও কমবেশি ৬০ বছর। বেলজিয়াম, পর্তুগাল, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউকেসহ অন্তত নয়টি দেশের নাগরিক নিজেদের খরচে করছেন এই ভ্রমণ।

পর্যটক দলের কো-অর্ডিনেটর ও দ্য জার্নি ওয়ালেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউর রহমান জানান, গত ২১ অক্টোবর থেকে ভারত ভ্রমণ শুরু করেন তারা। তারপর ভুটান ভ্রমণ শেষে গত ৬ নভেম্বর সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ভ্রমণে আসেন এই পর্যটক দল। তারপর কয়েকটি জেলা ঘুরে বুধবার পাবনায় আসেন তারা। নিজেদের প্রিয় ও পুরোনো গাড়ি নিজেরাই চালিয়ে তারা ভ্রমণ করছেন। গাড়িগুলো খুব যত্ন করেন তারা। এছাড়াও তাদের সাথে রয়েছেন নয়জন সাপোর্টিং স্টাফসহ গাড়ি মেরামতের সকল সরঞ্জাম। যেকোনো সমস্যায় তাৎক্ষণিক মেরামত করা সম্ভব। যে কারণে এখনও গাড়িগুলো চলছে।

মতিউর রহমান জানান, গাড়িগুলো ব্রাসেলস থেকে প্রথমে জাহাজের মাধ্যমে কলকাতা পোর্টে আনা হয়। সেখানকার এজেন্ট গাড়িগুলো খালাস করে প্রয়োজনীয় দেখভালের পর নির্ধারিত হোটেলে নিয়ে যায়। তারপর নিজেরাই গাড়ি চালিয়ে ভ্রমণে বের হন পর্যটক দল। আর ভ্রমণের পথে পথেই মানুষ, প্রকৃতি, শিল্প, সংস্কৃতি, খাবারের সাথে পরিচিত হন তারা।

আলাপ হয় পর্যটক দলের মধ্যে বেলজিয়াম, পর্তুগাল ও জার্মানির কয়েকজনের সাথে। প্রতিক্রিয়ায় তারা জানান, ভারত, ভুটান ভ্রমণ শেষে বাংলাদেশে এসে মুগ্ধ তারা। এদেশের মানুষ, প্রকৃতিতে সবুজের সমারোহ, সংস্কৃতি ও আথিতেয়থায় খুশি হয়েছেন। যাদের অনেকেই বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করলেও, বাংলাদেশে প্রথম এসেছেন। ইউরোপের শিল্প-সংস্কৃতির সাথে বাংলাদেশের শিল্প সংস্কৃতির বিস্তর ফারাক রয়েছে। এখানকার মানুষ খুব বন্ধুবৎসল। এদেশের খাবারও মজাদার।

উল্লেখ্য, পাবনার রূপকথা ইকো রিসোর্টে বুধবার রাত্রিযাপন শেষ বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে যশোরের উদ্দেশে রওনা হবেন তারা। আগামী ১১ নভেম্বর বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে গিয়ে শেষ হবে তাদের এই ভ্রমণ।