শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার!
নওগাঁয় ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর বন্যার পানিতে ভাসছে শতাধিক গ্রামের মানুষ

নওগাঁয় ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর বন্যার পানিতে ভাসছে শতাধিক গ্রামের মানুষ

নওগাঁয় ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর বন্যার পানিতে ভাসছে শতাধিক গ্রামের মানুষ
নওগাঁয় ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর বন্যার পানিতে ভাসছে শতাধিক গ্রামের মানুষ

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙনের ফলে পানিতে ভাসছে শতাধিক গ্রামের মানুষ।

সেই সঙ্গে পানিতে ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার বিঘা জমির আউশ-আমন ধানের খেত। তবে বৃষ্টি না থাকায় নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এর ফলে নতুন করে ভাঙনের হাত থেকে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের।

গত বুধবার রাণীনগরের ছোট যমুনা নদীর নান্দাইবাড়ি ও কৃষ্ণপুর নামক স্থানের বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে পানির চাপে ভেঙে গেছে নান্দাইবাড়ি নামক স্থানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ফলে আত্রাই-নাটোর ও নওগাঁর সঙ্গে বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া, নান্দাইবাড়ি, কৃষ্ণপুর, মালঞ্চিসহ ওই এলাহার প্রায় আটটি গ্রামের বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

অপরদিকে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার আত্রাই উপজেলার কাশিয়াবাড়ি-কালীগঞ্জ সড়কের বলরামচক নামক স্থানে, আত্রাই-সিংড়া সড়কের জগদাস নামক স্থানে ও পাশাপাশি শিকারপুর নামক স্থানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের মধ্যে সাতটি ইউনিয়নের প্রায় ৮০টি গ্রাম বন্যায় তলিয়ে গেছে। এছাড়া, আত্রাই-বান্দাইখাড়া সড়কের নন্দলালী নামক স্থানে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের অংশটুকু আগে থেকে বন্ধ করে দেওয়ায় রক্ষা পেয়েছে ওই এলাকার গ্রামবাসী।

গত বৃহস্পতিবার ভাঙ্গা স্থানগুলো স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আমিরুল হক ভূঞাসহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দুই উপজেলার ভাঙন এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষদেরকে ত্রাণ সহায়তা হিসেবে সাংসদ আনোয়ার হোসেন হেলাল চাল বিতরণ করেছেন। সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসানের পক্ষ থেকেও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে।

অপরদিকে মান্দা উপজেলায় বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের সাতটি গ্রাম। এ ইউনিয়নের নুরুল্লাবাদ ও পারনুরুল্লাবাদ এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ৪০০ পরিবার ও ফকিন্নি নদীর তীরবর্তী এলাকায় আরও অন্তত ৬০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া, প্রসাদপুর ইউনিয়নের বাইবুল্যা ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কয়লাবাড়ী এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫০০ পরিবার। এছাড়া, দীর্ঘদিন ধরে নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধ সংস্কার না করার কারণে বেশ কিছু অংশ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল বলেন, ‘শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ছোট যমুনা নদীর লিটন ব্রীজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার, জোতবাজার পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৮সেন্টিমিটার ও রেলস্টেশন পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি কমতে শুরু করায় নতুন করে আর কোথাও ভেঙে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। সবার সহযোগিতা নিয়ে ভেঙে যাওয়া অংশে জিওব্যাগ ও বালির বস্তা দিয়ে বন্ধ করার কাজ চলমান রয়েছে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আমিরুল হক ভূঞা বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) স্থানীয় বাসিন্দা, জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ভেঙে যাওয়া অংশগুলো বন্ধ করার কাজ চলমান রয়েছে। আমরা আশাবাদী নদীতে পানি কমতে শুরু করায় আর তেমন ভয়ের কোনো কারণ নেই। এলাকার মানুষদের রক্ষা করতে সরকারের পক্ষ থেকে সকল ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তিতে ভেঙ্গে যাওয়া অংশগুলো স্থায়ীভাবে মেরামত করার প্রতি সুদৃষ্টি দিতে সরকারের পক্ষ থেকে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সাংসদ আলহাজ্ব মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগে কারও হাত নেই। তবে পূর্ব থেকে প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিতে হবে। তবেই দুর্যোগে ক্ষতি হবে কম। বন্যাও একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বন্যা নামক এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাঁধ ভেঙে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আত্রাই উপজেলা। ভেঙে যাওয়া অংশগুলো বন্ধ করতে স্থানীয়দের সঙ্গে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), স্থানীয় ও উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া, সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।’

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply