এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: গত মাসেই চেন্নাইয়ে পুলিশ ফাঁস করে দিয়েছিল এক ‘কাপল সোয়াপ’ পার্টি। বস্তুত, গত কয়েক বছর ধরে ভারতে ‘ওয়াইফ সোয়াপিং’, অর্থাত্, বউ অদল বদল করে যৌনতায় মেতে ওঠার প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। কখনও দেখা গিয়েছে, পদোন্নতির জন্য কেউ নিজের স্ত্রীকে বসের সঙ্গে যৌনতায় বাধ্য করছেন, কখনও বা নিছকই যৌন আনন্দের প্রয়োজনে স্ত্রী অদল-বদল করছেন।
এর পাশাপাশি, আবার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে কেন্দ্র করে ঘটে চলে একের পর এক অপরাধ। কিন্তু, আজও পৃথিবীতে এমন এক জনগোষ্ঠীআছে, যারা স্রেফ আতিথ্যের খাতিরে, অতিথিদের তাদের বউকে সঙ্গে যৌনতা করতে দেয়।
আমাদের বাড়িতে অতিথি এলে আমরা নানাভাবে তার যত্নআত্তির চেষ্টা করি। ভাল খাবার, থাকার ব্যবস্থা। কিন্তু, তাই বলে ঘরের বউয়ের সঙ্গে অতিথিকে যৌনতায় মেতে উঠতে দেওয়া? শুধু ভারত কেন, পশ্চিমী বিশ্বের নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতেও এটা অত্যন্ত অস্বাভাবিক বলে গন্য হবে। কিন্তু, সেই প্রাচীন কাল থেকেই এই ঐতিহ্য বজায় রেখে চলেছে নামিবিয়ার হিম্বা উপজাতি। মূলত নামিব মরুভূমিতেই বসবাস করে এই আধা-যাযাবর উপজাতি। যৌনতা নিয়ে তাদের রীতিনীতি খুবই অদ্ভুত।
সম্প্রতি আফ্রিকান হিস্ট্রি টিভিতে এই হিম্বা উপজাতির যৌনতা সংক্রান্ত রীতিনীতিগুলি নিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে। সেই তথ্যচিত্র অনুযায়ী, হিম্বা উপজাতির স্বামীরা যৌন মিলনের তাদের স্ত্রীদের অতিথিদের হাতে তুলে দেয়। এটাকে সর্বোচ্চ মানের আতিথেয়তা বলে বিবেচনা করে তারা। অতিথিদের “উষ্ণ অভ্যর্থনা” জানানোর প্রথা বলে মনে করা হয়। আর তাদের মধ্যে কোনও যৌন ঈর্ষাও নেই। কাজেই, স্ত্রী অন্য কারও সঙ্গে পরকিয়ায় লিপ্ত সন্দেহে তাকে আঘাত করার মতো অপরাধও ঘটে না। প্রচলিত বিবাহের সম্পর্কে বর্তমানে যা অত্যন্ত সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অতিথিদের সঙ্গে যৌনতা করতে পাঠানো হয় ঘরের বউদের
হিম্বা সমাজে আসলে মহিলাদের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। উপজাতির পুরুষদের তুলনায় তারাই বেশি শ্রম সাপেক্ষ কাজগুলি করেন। গবাদি পশুর দেখাশোনা করা, লাল মাটির ঘরগুলি পরিষ্কার করা, রান্না করা, শিশুদের দেখাশোনা করা – সবই তারাই করে থাকেন। পুরুষদের সাধারণত দুজন করে স্ত্রী থাকে। কিন্তু, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, বা সেই সম্পর্ক থেকে সন্তানের জন্মের মতো বিষয়গুলিকে তারা খুব একটা বড় করে দেখে না। বরং, অন্য স্ত্রীর গর্ভে আসা পুরুষের সন্তানকেও স্বামী, বাবা হিসেবে মানুষ করছেন, এটা আকছার দেখা যায়। তাই হিম্বা সমাজে প্রত্যেক শিশুরই একজন জৈবিক বাবার পাশাপাশি একজন করে ‘সামাজিক বাবা’ও থাকে, যে তাদের বড় করার দায়িত্ব নেয়। এই গোষ্ঠীর জেনেটিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৭০ শতাংশের বেশি হিম্বা পুরুষরা, অন্য পুরুষের ঔরসজাত অন্তত একটি সন্তানকে লালন-পালন করে।
হিম্বা সমাজে মহিলাদের গুরুত্ব বেশি
তথ্য়চিত্রটিতে আরও বলা হয়েছে, হিম্বা উপজাতির মধ্যে, স্ত্রী অদলবদলের সংস্কৃতি বহু শতাব্দী ধরে চলে আসছে। এমনকি মানুষ যখন সভ্য হয়নি, তখন থেকেই এই রীতি প্রচলিত। তবে, এই প্রাচীন জীবনধারা আর কতদিন টিকবে, সেই নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর কারণ, পশ্চিমী প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে নামিবিয়ায়। তবে, নামিবিয়ার বাকি সমাজ থেকে তুলনামূলকভাবে বিচ্ছিন্ন হিম্বারা। আনুমানিক ৫০,০০০ হিম্বা মানুষ এখনও ঐতিহ্য মেনেই জীবন কাটান। হাজার হাজার বছর ধরে তাঁরা এই জীবনধারা বজায় রেখেছেন। কিন্তু, হিম্বাদের নতুন প্রজন্ম, তাদের যৌনতার রীতি, পোশাক ইত্যাদি নিয়ে লজ্জিত। হিম্বা যুবকরা জানিয়েছেন, গ্রামের বাইরে তারা যখন তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেন, তাদের লোকে অদ্ভুত বলে মনে করে। চিড়িয়াখানার পশু দেখার মতো, তাদের দিকে বারবার তাকায়। পশ্চিমী পোশাক পরলে, তবেই তাদের বাইরের লোকজন গুরুত্ব দেয়।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.