ধর্ম ডেস্ক: নানা কারণে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্কের মান সারা বছর ওঠানামা করে। তবে মাহে রমজানে মুমিন বান্দারা মহান আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক নবায়ন ও পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পায়। তাই রমজান হলো রহমতের মাস, আল্লাহর সান্নিধ্যে ফিরে আসার মাস। আর আল্লাহর সান্নিধ্যে ফিরে আসার অন্যতম শর্ত হলো তাকওয়া ও তাওবা।
গোটা রমজান তাকওয়া ও তাওবার চাদরে মোড়া। মুসলিম উম্মাহর ক্ষমাপ্রাপ্তির বিশেষ উপলক্ষ পবিত্র রমজান।রমজান মাসে মুসলিম উম্মাহ সত্যনিষ্ঠ অন্তরে বিনয়ী চিত্তে প্রতিপালকের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। তাই সচেতন অন্তরে তাওবা করতে তারা উজ্জীবিত হয়ে থাকে।
আর আল্লাহ বান্দার তাওবা কবুল করেন—এমন দৃঢ়বিশ্বাস নিয়েই তাওবা করতে হয়। আদম সন্তান ভুল করবে, অন্যায় করবে, এটা মনুষ্য প্রকৃতি। আদম (আ.) আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা ভুলে গিয়েছিলেন। অতঃপর অনুতপ্ত হওয়ায় আল্লাহ ক্ষমা করেছিলেন।
অন্যদিকে শয়তান উদ্ধত আচরণ ও অবাধ্যতার জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেনি বিধায় অভিশপ্ত হয়েছে। গোনাহের কাজে জড়িত হওয়ার পর তাওবার গুরুত্ব সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যদি তোমরা পাপ না করতে তাহলে আল্লাহ তাআলা এমন কাউকে বানাতেন, যারা পাপ করত এবং আল্লাহ তাদের মাফ করে দিতেন। (মুসলিম, হাদিস : ৬৮৫৬)
একনিষ্ঠভাবে তাওবার মাধ্যমে ছোট-বড় সব রকম গোনাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। রমজানে এ কাজ করা খুব সহজ। এ জন্যই রমজান মাসের গুরুত্ব অপরিসীম।
আর প্রবৃত্তি সর্বদা মানুষকে আরাম-আয়েশি জীবন, বেশি খাদ্যের প্রতি আকৃষ্ট করা, যৌনতা, অশ্লীলতা, ধন-সম্পদের প্রতি অতিশয় লোভ, ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা, পরচর্চা, অপ্রয়োজনীয় কথা বলা, মিথ্যা বলা, স্বেচ্ছাচারিতা, আল্লাহর বিধি-বিধান সম্পর্কে উদাসীনতা, সালাত থেকে দূরে থাকায় অনুপ্রেরণা দিয়ে থাকে।
এ ধরনের প্রকৃতি গ্রহণে মানুষের অদৃশ্য শত্রু শয়তান কুমন্ত্রণা দেয় এবং মানুষকে আল্লাহর অবাধ্য হতে প্রভাবিত করে। পবিত্র রমজানে আল্লাহ শয়তানকে শিকলবন্দি করে দেন, যাতে বান্দারা উপরোক্ত নিন্দনীয় প্রকৃতি ও প্রবৃত্তি পরিত্যাগ করে পরকালমুখী হতে পারে। রাসুলুল্লাহ বলেছেন, রমজান মাস এলে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, আসমানের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়। (বুখারি, হাদিস : ৩২৭৭)
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.