শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার!
গলৌটি কবাবের সঙ্গে রোলের সন্ধি

গলৌটি কবাবের সঙ্গে রোলের সন্ধি

গলৌটি কবাবের সঙ্গে রোলের সন্ধি
গলৌটি কবাবের সঙ্গে রোলের সন্ধি

ফারহানা জেরিন: কলকাতা শহরে রোলের রকমফের আছেই। সে তালিকায় যোগ হল গালৌটি কবাব রোল। আনন্দবাজার অনলাইনের পাতায় রইল প্রথম ঝলক।

পরোটার সঙ্গে লেপ্টে থাকা ডিম। তার উপর শসা, পেঁয়াজ, কাসুন্দি, লাল-হলুদ সস্, বিটনুন আর লেবুর রস ছড়িয়ে কাগজে মুড়িয়ে হাতে তুলে নিলেই আর নিজেকে সামলানো যায় না। কামড় বসাতেই হয় এগরোলে। বাঙালির সান্ধ্যভোজন রোল ছাড়া অসম্পূর্ণ। তবে কলকাতার রোলের ইতিহাস কিন্তু বহু পুরনো। ইংরেজ-শাসিত কলকাতায় প্রথম রোলের জন্ম দিয়েছিল ‘নিজাম’। ইউরোপীয় সৈন্যদের মুখরোচক খাবার পরিবেশনের উদ্দেশ্যেই ‘নিজাম’-এ প্রথম তৈরি হয় কাঠি রোল। ময়দার লেচি বানিয়ে, গোল করে বেলে, তেলে হালকা ভেজে তার মধ্যে দেওয়া হত মাংস। আর পরোটার বাইরে তেল শুষে নিতে জড়িয়ে দেওয়া হত ব্লটিং পেপার। ইতিহাস বলছে, এ ভাবে কবাব খাওয়ার একটি অভিনব পদ্ধতি তৈরি করা হয়েছিল। তার পর থেকে রোজই নুন-লেবু-মশলা মাখানো সেঁকা মাংস পরোটায় ভরে বিক্রি হতে লাগল। সেই থেকে কলকাতার সঙ্গে রোলের বন্ধুত্বের শুরু। অল্প দিনেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই খাবার। মাংসের কারণে রোলের দাম ছিল তুলনায় বেশি। পরে, ধীরে ধীরে অবশ্য রোলের সঙ্গে নাম জুড়েছে ডিম, মাছের। কলকাতায় খুঁজলে ভেটকি রোল, চিংড়ির রোলও পাওয়া যাবে। তবে এ বার বাঙালির স্বাদবদলের পালা। মাংসের রোল তো কলকাতা আগেই চেখে দেখেছে। এ বার রোলের সঙ্গে সন্ধি করেছে গালৌটি কবাব। সৌজন্যে ‘অওধ ১৫৯০’। কলকাতায় এক দশক পার করে গালৌটি কবাব রোলের জন্ম দিল অওধি বিরিয়ানির অন্যতম এই ঠিকানা।

তিলোত্তমার বুকে একচিলতে লখনউয়ের পরিবেশ। সঙ্গে নবাবি ধাঁচের ভোজন। লখনউয়ের বিরিয়ানি তো আছেই, তবে অনেকেই এখানে এসে প্রথমে খোঁজ করেন মটন গালৌটি কবাবের। আলো-আঁধারি আবহে রাজকীয় পরিবেশে নবাবি খানা খেতে মন্দ লাগে না। রাজকীয় খাবারের পাশাপাশি এই ঠিকানায় এবার থেকে রোলেরও স্বাদ পাবেন ভোজনরসিকেরা। ‘অওধ ১৫৯০’ খাবারদাবার নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ভালবাসে। দোকানের মেনুকার্ড দেখলেই তা বোঝা যায়। কবাবের সঙ্গে হঠাৎ রোলের এই যুগলবন্দি কেন? ভাবনার উৎস কী? আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে এ প্রসঙ্গে প্রথম কথা বললেন ‘অওধ ১৫৯০’-এর অন্যতম কর্ণধার শিলাদিত্য চৌধুরী। তাঁর দাবি, ‘‘বছর দশেক আগে ‘অওধ ১৫৯০’ যখন শুরু করেছিলাম, তখন খাবারদাবার নিয়ে নানা পরিকল্পনা ছিল। অওধি খাবার মানেই তখন চিকেন বিরিয়ানি, মটন বিরিয়ানি, মটন রেজ়ালা, চিকেন রেজ়ালা। আমরা প্রথম এগুলির বাইরে গিয়ে নানা স্বাদের অওধি খাবারের সঙ্গে আলাপ করিয়েছিলাম কলকাতার। তখনই এ শহরে গালৌটি কবাবের জন্ম। দেখতে দেখতে দশ বছর পার করে এসেছি। এ বার মনে হল, মানুষকে নতুন কিছু খাওয়ানো যাক। গালৌটি কবাব রোল তৈরির ভাবনা সেখান থেকেই এসেছে।’

গালৌটি কাবাব এমনিতেও ছোট ব্যাসের পরোটার সঙ্গে খাওয়াই রীতি। কিন্তু ভোজনরসিক হলেও গরমের মরশুমে বাঙালি ভাজাভুজি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে। এমন চৈত্রের গরমে গালৌটি কবাব কি সহজে আপন করে নেবে তিলোত্তমা? শিলাদিত্য আশা, ‘‘নেবে। রোল খুব একটা স্বাস্থ্যকর খাবার নয়। কিন্তু তেল চপচপে রোলের সঙ্গে এই রোলের ফারাক আছে। একেবারে সামান্য সাদা তেল (আধ কাপ) দিয়ে মোট দশটা পরোটা সেঁকে নেওয়া হয়। গরমে এই রোল খেলে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। প্রতিটি রোলে দু’টি করে গালৌটি কবাব পাওয়া যাবে। নতুন একটা স্বাদ পাবেন তিলোত্তমার বাসিন্দারা।’’

শুধু স্বাদে নয়, রোলের পরিবেশনেও কিন্তু চমক রয়েছে। রোল মানেই কাগজের পরত খুলে ধাপে ধাপে কামড় বসানো। তবে এ ক্ষেত্রে বিষয়টি খানিক আলাদা। একটি বাক্সে দু’টি রোল থাকছে। সাধারণত রোলের যে আকার হয়, এটা তার চেয়ে ছোট। সে কারণেই দু’টি করে থাকছে। দাম ১৯৯। শুরুর দিন থেকে রোজই প্রা ২০০-২৫০ বাক্স বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্ণধার। কলকাতা এবং দিল্লিতে ‘অওধ ১৫৯০’-এর সব শাখাতেই পাওয়া যাচ্ছে এই রোল। অনলাইনের মাধ্যমেও অর্ডার করার সুবিধা রয়েছে।

কলকাতার মতো এত ধরনের খাবার আর কোনও শহরে পাওয়া যায় না। ঝালমুড়ি থেকে বিদেশি খাবার— সবই মেলে কলকাতায়। রোল নিয়েই কেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা? শিলাদিত্যের কথায়, ‘‘গোটা দেশে যত কাঠি রোল বিক্রি হয়, কলকাতায় তার পাঁচ গুণ বেশি বিক্রি। সে কারণেই কলকাতাকে নতুন স্বাদের এক রোল খাওয়াতে চেয়েছি। কলকাতা ছাড়াও আমাদের দিল্লির অওধেও এই রোল থাকছে।’’ কলকাতার মানুষের রোলের প্রতি যখন এত ভালবাসা, তখন এই রোলের হাত ধরেই কতটা লক্ষ্মীলাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে? ‘অওধ ১৫৯০’-র কর্ণধারের জবাব, ‘‘এখনও সেটা বুঝতে পারছি না। সবে শুরু করেছি। অবশ্য পরিকল্পনামাফিক এগোলে আশা করছি সারা বছরের যা আয়, তার ১০-১৫ শতাংশ আসবে এই রোল থেকে।’’

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply