রাষ্ট্রদ্রোহীর অভিযোগ’ ১৮তে পা রাখলেই মৃত্যুদণ্ড কিশোরের !

রাষ্ট্রদ্রোহীর অভিযোগ’ ১৮তে পা রাখলেই মৃত্যুদণ্ড কিশোরের !

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে এক কালোরাত্রি৷ সেই রাত শেষ হলে জহ্লাদের তলোয়ার নেমে আসবে ঘাড়ের উপরে৷ রাজপথে হয়ত সবার সামনেই লুটিয়ে পড়বে এক কিশোর রাষ্ট্রদ্রোহী৷ নাম তার মুর্তাজা৷

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে কিছু আইনি পদক্ষেপ বাকি৷ তার পরেই ১৮ বছরে পা রাখা মুর্তাজার মাথা কেটে নেওয়া হবে৷ সে রাজতন্ত্র বিরোধী বিক্ষোভকারী৷ সমকালীন বিশ্বে সবথেকে কনিষ্ঠতম এই বিদ্রোহী মুর্তাজা কুরেইরিস এখন সৌদি জেলে বন্দি৷ অভিযোগ তার যখন ১০ বছর বয়স, তখন সরকার বিরোধী সাইকেল মিছিলে অংশ নিয়েছিল৷ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই তথ্য দিয়েছে৷

২০১১ সালের কথা৷ প্রবল গণ আন্দোলন চলছিল সৌদি আরবে৷ সৌদি রাজতন্ত্র পরিচালিত নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য মুর্তাজা কুরেইরিস ও তার বন্ধুরা সাইকেল মিছিল করেছিল৷ দেশের পূর্ব প্রান্তে সেই মিছিল করার সময় সরকারের নজরে আসে তার গতিবিধি৷ তারপর থেকেই মুর্তাজার নাম ছিল পুলিশের খাতায়৷ তিন বছর এমন পর্যবেক্ষণ চলে৷ এরই মাঝে ১৩ বছর বয়স হলে গোপনে সৌদি আরব থেকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাহারিনে পালিয়ে যাওয়ার সময় পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে ধরা পড়ে মুর্তাজা৷ সৌদি আরবের ইতিহাসে সবচেয়ে কনিষ্ঠতম রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে মুর্তাজাকে নিয়ে যাওয়া হয় জেলখানায়৷

এরপর শুরু হয় বিচার৷ নাবালক হিসেবে সৌদি সরকার কোনওভাবেই এই বিদ্রোহীকে চরম শাস্তি দিতে পারেনি৷ অগত্যা জেলে রেখেই তার সাবালক হওয়ার অপেক্ষা করা হয়েছে৷ জানা গিয়েছে, চার বছর জেলে রয়েছে মুর্তাজা৷ সদ্য ১৮ বছরে পা রাখতে চলেছে সে৷ এর পরেই তাকে চরম রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত করে কোতল করার পালা৷ সেই লক্ষ্যে সরকার আইনি পদক্ষেপ শুরু করেছে৷

মুর্তাজার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে তার একটি হল সরাসরি নাশকতায় মদত দেওয়া৷ পুলিশের দাবি, মুর্তাজার বড় ভাই আলি কুরেইরিস আওয়ামিয়া শহরের থানায় পেট্রোল বোমা ছুঁড়েছিলেন৷ সেই সময় তার সঙ্গে ছিল মুর্তাজা। সেই ঘটান পরে আলিকে মেরে ফেলা হয়৷ এখন চরম শাস্তির অপেক্ষায় মুর্তাজা৷ তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার সব অভিযোগ প্রমাণ করতে মরিয়া সরকার৷

সরকারের দাবি, জেরায় সব স্বীকার করেছে মুর্তাজা৷ যদিও মুর্তাজার পরিবারের অভিযোগ, প্রবল অত্যাচার চালিয়ে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে৷ বিচারের নামে প্রহসন চালানো হয়েছে৷ মুর্তাজার কি ফাঁসি হবে ? নাকি তার শিরচ্ছেদ করা হবে প্রকাশ্যে ? ভয়ঙ্কর সেই শাস্তির পদ্ধতি নিয়ে চলছে জল্পনা৷ ততই বাড়ছে উদ্বেগ৷ মানবাধিকার সংগঠনগুলি সোচ্চার হতে শুরু করেছে৷

মতিহার বার্তা ডট কম  ০৮ জুন  ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply