রাজশাহী নগরীতে ছেলেধরা সন্দেহে ফুড কোম্পানির লোককে গনপিটুনি

রাজশাহী নগরীতে ছেলেধরা সন্দেহে ফুড কোম্পানির লোককে গনপিটুনি

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে ছেলেধরা সন্দেহে তিনজনকে গনপিটুনি দিয়েছে স্থানীয় জনতা। এ সময় তাদের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারে ব্যপক ভাংচুর চালিয়েছে উত্তেজিত জনতা। আজ রোববার দুপুর ১টার দিকে নগরীর মতিহার থানাধিন সাতবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পরে খবর পেয়ে মতিহার জোনের ডিসি মোঃ সাজিদ হোসেন, থানার ওসি মোঃ হাফিজুর রহমান ও সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং জনতার হাত থেকে আঘাপ্রাপ্তদের উদ্ধার করে মতিহার থানায় নিয়ে আসে। আঘাতপ্রাপ্তরা হলেন, রাজশাহী ফুড এন্ড বেভারেজ কোম্পানীর মালিক দেওয়ান হামিদুজ্জামান বাচ্চু (৫৫), ও তার আপন ভাই দেওয়ান বাশার(৫০), উভয়ের পিতা শহীদ দেওয়ান সিদ্দিক হোসেন।

বিক্রয় প্রতিনিধি পবা থানাধিন নওহাটা এলাকার মেহের আলীর ছেলে ইউসুফ (৩৮) ও প্রাইভেটকারের চালক শামীম হোসেন (২২)। তবে উস্কানিদাতা ফরমানকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার পরও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

উস্কানিদাতা ফরমানকে আটক করে থানায় নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

আহত দেওয়ান বাশার জানায়, শাহমখদুম থানা এলাকায় অবস্থিত রাজশাহী ফুড এন্ড বেভারেজ নামের দেওয়ান হামিদুজ্জামান বাচ্চু একটি কোম্পানী খুলেছেন। সেই কোম্পানীর প্রচারের জন্য প্লাষ্টিক ব্যাগ ভর্তি চিপস্, চিড়া, বাদাম নিয়ে বিক্রয় ও প্রচারের উদ্দেশ্যে সাতবাড়িয় এলাকায় পৌঁছায়।

এ সময় আমরা একটি বাচ্চাকে ডেকে ১ প্যাকেট চিপস্ দেই খেতে। তখনই ঘটে ঘটনা, একজন স্থানীয় ব্যক্তি ছেলে ধরা সন্দেহে হৈচৈ শুরু করে। মূহূর্তের মধ্যে শত শত স্থানীয়রা জড়ো হয়ে আমাদের কোন কথার কর্ণপাত না করেই আমাদের মারধোর শুরু করে। এ সময় উত্তেজিত জনতা আমাদের প্রাইভেট কারটিতে ভাংচুর চালায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে আমরা প্রানে রক্ষা পাই।

মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, ছেলেধরা সন্দেহে স্থানীয়রা ভদ্রলোকদের ও তাদের ড্রাইভার কর্মচারীকে পিটিয়েছে। তাদের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটিও ভাংচুর করেছে। তবে তারা ছেলে ধরা নয়। থানায় তাদের গাড়ী তল্লাশী করে দূর্গন্ধযুক্ত ভ্যাজাল চিপস্, চিড়া ও বাদাম উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইনের সহকারী পরিচালক হাসান আল মারুফ ও অপূর্ব অধিকারী খবর পেয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে তাদের খাদ্য সামগ্রী বিএসটিআই’র অনুমোদন না থাকার কারনে ভোক্তা অধিকার আইনে তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি তাদের কারখানা সিলগাল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে চরের বিখ্যাত মাদক ডিলার আক্কাসের আপন ফুপাতো ভাই, ছেলে ধরা উস্কানিদাতা ও গুজব ছড়িয়ে সাধারন মানুষের ক্ষতি সাধন করাসহ জনমনে ভীতি সৃষ্টিকারী ফরমানকে ছেড়ে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে ওই এলাকার সাধারন মানুষের মাঝে গুঞ্জন ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছে গনপিটুনির স্বীকার লোকেরা যদি মারা যেতেন তাহলে স্থানীয়দের আজ কি পরিস্থিতিতে পড়তে হতো? স্থানীয়রা জানায় চরের বিখ্যাত মাদক ডিলার আক্কাসের মাদক ব্যবসার লেনদেন ও পরিচালনা করেন এই ফরমান। ওই এলাকার মাদক ব্যবসায়ী আটক হলে থানায় ও ডিবিতে তদবির করেন ফরমান।

মতিহার বার্তা ডট কম – ২১ জুলাই  ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply