নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর চরশ্যামপুর ও চরখিদিরপুর বালুমহাল চালু ও শ্রমিকদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। রোববার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত নগরের তালাইমারি ট্রাফিক মোড়ে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। রাজশাহীর বালু ব্যবসায়ীরা, শ্রমিক ও এলাকাবাসী পৃথকভাবে ব্যানার নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, গত বুধবার হটাৎ জেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ইজারা নেয়া বৈধ তালাইমারী বালুমহালটি বন্ধ করে দেয়। এ সময় সেখান থেকে আটজন শ্রমিককে ধরে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।
এছাড়াও এ বালুমহাল বন্ধ করার কারণে প্রায় এক হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। সোমবারের মধ্যে শ্রমিকদের মুক্তি ও বালুমহাল চালু করা না হলে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করার ঘোষণা দেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তরিকুল আলম পল্টু, পবার হরিপুর ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান বাদল, হাসান আলী, মোঃ জনি ইসলাম, বালু ব্যবসায়ী মাহাফুজুর রহমান, বাবোর আলী, মাসাদুল ইসলাম স্বপন, আব্দুর সাত্তার, জহির উদ্দিন কেতু, মাসুদ রানা, সাইফুল ইসলাম, খায়রুল বাশার, আবুল হোসেন, বুলবুল হোসেন, শাহাবুল সরকার টুটুল প্রমুখ।
মানববন্ধনে রাসিকের ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তরিকুল আলম পল্টু বলেন, সরকার বেকার সমস্যা সমাধানের জন্য নানামুখি কর্মসূচী বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে। ঠিক সে সময় রাজশাহী জেলা প্রশাসক একটি অন্যয় আদেশ জারি করে বিপুল সংখক গরীব শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের বেকার করে দিয়েছেন। একই সঙ্গে আটজন শ্রমিককে ধরে নিয়ে গিয়ে সাজা দিয়ে তাদের হয়রানি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এ আদেশ দ্রুত প্রত্যাহার করে বালুমহালটি চালুর দাবি জানান এই জনপ্রতিনিধি।
উল্লেখ্য, ‘চলতি বছর দরপত্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ‘মেসার্স আমিন টেডার্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান পদ্মা নদীর চরশ্যামপুর ও চরখিদিরপুর মৌজার ১২০ একরের বালুুমহাল দুই কোটি দুই লাখ টাকায় ইজারা নেয়। দরপত্রের নিয়ম অনুযায়ী ইজারার অর্থ জেলা প্রশাসনে পরিশোধ করা হয়। গত ১৪ এপ্রিল জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা লাল নিশান টাঙ্গিয়ে দিয়ে চিহ্নিত করে এই বালুমহালটি বুঝিয়ে দেয়া হয়।
এরপর থেকে জেলা প্রশাসনের বুঝিয়ে দেয়া লাল নিশানের ভিতর চরশ্যামপুর মৌজা থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল। এছাড়াও বালু পরিবহনের জন্য কাজলা মৌজায় তালাইমারি সড়ক ব্যবহারের জন্য সিটি করপোরেশন থেকে টোল ইজারা নেয়া হয়। বালুমহালটি চালু হওয়ার পর এখানে কর্মসংস্থান হয় প্রায় শতাধিক বালু ব্যবসায়ীসহ হাজার খানেক শ্রমিকের।
গত বুধবার দুপুরের হটাৎ করে ইজারা নেয়া এই বৈধ বালুমহালের বালু উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসনের পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে সেখান থেকে বালু উত্তোলনে নিয়োজিত আটজন শ্রমিককে আটক করে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।
এর প্রতিবাদে গত ২৫ জুলাই রাজশাহীর বালু ব্যবসায়ীরা সংবাদ সম্মেলন করে শ্রমিকদের মুক্তি ও বৈধ বালুমহাল বন্ধের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান।
মতিহার বার্তা ডট কম ২৮ জুলাই ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.