মতিহার বার্তা ডেস্ক : ঈদের আগে দেশে বড় ধরনের অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের এক শীর্ষ নেতা, গণপূর্ত বিভাগের এক ঠিকাদার ও যুবলীগের অপর এক কর্মীকে হত্যার ছক কষেছিল সন্ত্রাসীরা।
দুবাই প্রবাসী বাংলাদেশি শীর্ষ সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন সেখানে বসে গণপূর্তসহ বিভিন্ন দফতর থেকে নিয়িমিত চাঁদা নিয়ে আসছিল। সম্প্রতি চাঁদা বন্ধ করে দিলে তারা এ হত্যার পরিকল্পনা করে। রানা মোল্লা নামে যুবলীগের এক কর্মীকে হত্যার মধ্যদিয়ে শীর্ষ নেতাদের হুশিয়ার করতে চেয়েছিল তারা।
মিশন সফল করতে আন্ডার ওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীরা ঢাকার প্রফেশনাল কিলারদের ভাড়া করে। পুরো বিষয়ে মোবাইল অ্যাপস বোটিমের (ইমো-হোয়াটসআপের মতো অ্যাপস) মাধ্যমে যোগাযোগ ও নির্দেশনা দিতে থাকে। তবে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) চৌকস দলের কাছে তাদের সেই পরিকল্পনা ধরা পড়েছে।
প্রায় ২ মাস নজরে রাখার পর শুক্রবার ঢাকার খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভারি অস্ত্রসহ ৩ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি একে ২২ রাইফেল, ৪টি বিদেশি পিস্তল, ১টি বিদেশি রিভলভার ও ৪৭ রাউন্ড বিভিন্ন অস্ত্রের গুলি উদ্ধার করে।
গ্রেফতাররা হল- খান মো. ফয়সাল, মো. জিয়াউল আবেদীন ওরফে জুয়েল ও মো. জাহেদ আল আবেদীন ওরফে রুবেল। এদের মধ্যে জুয়েল ও রুবেল দুই ভাই। তাদের আরেক ভাই লিয়ন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। ডিবি পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের খিলগাঁও জোনাল টিমের এডিসি শাহিদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, সন্ত্রাসী এ গোষ্ঠীটির ওপর আগে থেকে নজর রেখেছিল ডিবি। ২ মাস আগে তাদের নতুন পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে আরও সতর্ক অবস্থান নেয়া হয়। একইসঙ্গে তাদের যোগাযোগ থেকে শুরু করে সব কার্যক্রম মনিটরিং করা হয়।
এরপর ডিবির খিলগাঁও জোনাল টিম অভিযানে নামে। একপর্যায়ে শুক্রবার তাদের বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ডিবির এ কর্মকতা আরও বলেন, রানা মোল্লা নামে একজনকে হত্যা করে তারা যুবলীগের শীর্ষ নেতাকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি।
ডিবি পুলিশের এ চৌকস কর্মকর্তা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, সাধারণত একে ২২ রাইফেল জঙ্গিদের কাছে থাকে, তারা এটা কিভাবে পেল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে এ ঘটনায় গ্রেফতার তিন আসামিসহ দশজনকে আসামি করে খিলগাঁও থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করেছেন ডিবি পুলিশের এসআই আশরাফুল আলম।
এ মামলায় গ্রেফতার আসামিদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ৪ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির ইন্সপেক্টর শফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
তারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তাদের তথ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে টার্গেট করার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। আমরা সব ধরনের তথ্য যাচাই-বাছাই করছি। দুবাইয়ে বসবাসরত আন্ডার ওয়ার্ল্ডের মাফিয়াদের সঙ্গে ঢাকার কাদের সম্পর্ক রয়েছে সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মতিহার বার্তা ডট কম ৩০ জুলাই ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.