রাজশাহীতে শিক্ষকের গায়ের মাংস কেটে নেয়ার হুমকি, অধ্যক্ষ রিপনের

রাজশাহীতে শিক্ষকের গায়ের মাংস কেটে নেয়ার হুমকি, অধ্যক্ষ রিপনের

অধ্যক্ষ জহুরুল আলম রিপন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে শিক্ষকের বুকের উপর পা তুলে চাঁদা চাইলেন, সেই ধর্ষক অধ্যক্ষ জহুরুল আলম রিপন। প্রতিশোধ নিতেই এমন পথ বেছে নিয়ে বলে জানায় ভুক্তভোগী শিক্ষক মোঃ রায়হানুল ইসলাম।

গত (১৫ আগস্ট) বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠ কাপাশিয়া এলাকায় অবস্থিত মহানগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউট প্রাঙ্গণের বঙ্গবন্ধু কর্ণার রুমে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গতকাল রোববার বিচারের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর একটি অভিযোগ জমা দিয়েছে ওই শিক্ষক। এছাড়াও নগরীর কাটাখালী থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছেন তিনি। কাটাখালী থানায় সাধারন ডায়েরী নং- ৭৪১, তাং-১৮-০৮-২০১৯।

ভুক্তভোগী শিক্ষক মোঃ রায়হানুল ইসলাম জানায়, অধ্যক্ষ মোঃ জহুরুল আলম রিপন। গত (৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮) নিজেকে বাঁচাতে তিনি একটি স্থানীয় চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট-এ সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সে সময় আমি তার সাথে ছিলাম।

পরবর্তিতে কলেজের এক শিক্ষিকাকে ধর্ষণ চেষ্টা ও কয়েকজন ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ রিপনের বিচার ও শাস্তির দাবিতে পুরো কলেজ এবং স্থানীয় কাউন্সিলরসহ কাপাসিয়া এলাকার স্থানীয়রা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে মানববন্ধ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করে।

মাসব্যাপি চলা এ আন্দেলনে বিষয়টি রাজশাহীর সকল স্থানীয় পত্রিকা ও যুগান্তর, ইত্তেফাক, প্রথম আলো, কালের কন্ঠ, দৈনিক খোলাকাগজ সহ একাধিক জাতীয় পত্রিকায় নিয়মিত সংবাদটি প্রকাশিত হয়।

এছাড়াও একাধিক অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এটি রাজশাহীর কয়েকটি আলোচিত সংবাদের একটি। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ জহুরুল আলম রিপনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অপহরণ ও ধর্ষণ চেষ্টা মামলা করেন এক ছাত্রী।

যাহা বর্তমানে চলমান রয়েছে। উক্ত ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই তিনি ১৫ আগস্ট বুকের উপর পা তুলে আকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মিথ্যা করে বলে তোর নিকট ৭৫ হাজার টাকা পাবো। টাকা না নিয়ে কলেজে আসবিনা।

নইলে হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়া হবে এবং শরীরের মাংশ কেটে টাকা পরিশোধ করে নেওয়া হবে বলেও হুমকি দেন অধ্যক্ষ। তিনি আরো বলেন, টাকা না দেওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানে আসবি না। একই কায়দায় অধ্যক্ষ রিপন আরো কয়েকজন শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছেন।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ জহুরুল আলম রিপনের মুঠো ফোনে ফোন দেওয়া হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কোন বক্তব্য দিতে চাচ্ছি না। আপনার যা ইচ্ছা লিখতে পারেন।

জানতে চাইলে পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদ নেওয়াজ বলেন, শিক্ষকের দেওয়া অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কাটাখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জিল্লুর রহমান বলেন, ভূক্তভোগী শিক্ষকের দেয়া সাধারন ডায়েরীটি থানায় নথিভূক্ত করা হয়েছে। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ ককরা হবে।

উল্লেখ্য, গত (৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮) নিজ অফিস কক্ষেই এক ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা চালান অধ্যক্ষ। এ নিয়ে ৩১জন শিক্ষক কর্মচারী অধ্যক্ষের অপসারন ও অপকর্মের বিষয়ে সভাপতি ও পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন। পরে এক ছাত্রী ২০১৮ সালে (৮ মার্চ) নারী ও শিশু নির্যতন দমন আইন ৭/৯(৪)(খ) অপহরন ও ধর্ষন চেষ্টার মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলায় (৯ই মার্চ) গ্রেফতার হন অধ্যক্ষ। ১৩ই মার্চ ২০১৮ বরখাস্ত হন। এ মামলায় কারাবাসও করেন তিনি। মামলা মাথায় নিয়ে ২১ মার্চ ২০১৯ পূর্নবহাল হন কলেজে।

মতিহার বার্তা ডট কম – ১৮ আগস্ট ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply