পাকশী রেলওয়ে হাসপাতাল সংস্কার কাজে ২ কোটি টাকা অপচয়” শেষের আগেই ফাটল

পাকশী রেলওয়ে হাসপাতাল সংস্কার কাজে ২ কোটি টাকা অপচয়” শেষের আগেই ফাটল

মতিহার বার্তা ডেস্ক : একশ বছরের পুরনো হাসপাতাল ভবন নতুনভাবে নির্মাণ না করে সংস্কারের নামে প্রায় দুই কোটি টাকা অপচয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী রেলওয়ে হাসপাতাল ভবন সংস্কারে প্রায় দুই কোটি টাকা খরচ করার বিষয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

সংস্কারকাজের মান নিয়ে রয়েছে অভিযোগ। কারণ এরই মধ্যে ভবনটির অনেক স্থানে পলেস্তারায় ফাটল দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছেন, এ টাকায় নতুন ভবনই করা যেত। পুরনো হাসপাতাল ভবন দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার না করায় কোথাও চুনকাম বা কোথাও পলেস্তারা উঠে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই ভবনে চিকিৎসক, নার্সদের কক্ষ, অস্ত্রোপচার কক্ষ, ড্রেসিং রুম, দুটি ওয়ার্ড (পুরুষ ও নারী) মিলিয়ে ছোট-বড় ২৩টি কক্ষ রয়েছে। ভবনটি সংস্কারের জন্য গত বছরের মাঝামাঝি পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের রাজশাহীর প্রধান প্রকৌশলীর এক কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় ধরে দরপত্র আহ্বান করেন। কাজ পান পাবনার স্থানীয় ঠিকাদার আনোয়ারুল আলম বাবু। হাসপাতালটি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণ ও রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় অফিস স্থাপনের পর রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিকিৎসার জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল।

১৯৬০ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত হাসপাতালটি জমজমাট ছিল। এখানে সব সময় রোগী ভর্তি থাকত। কিন্তু ধীরে ধীরে এর ঐতিহ্য হারিয়ে যায়।

হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পুরনো হাসপাতাল ভবনের দেয়ালের পলেস্তারা, চুনকাম, রং দেওয়া ও টাইলস লাগানোর কাজ হয়েছে। সম্প্রতি কাজ শেষ করেছেন ঠিকাদার। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারায় ফাটল দেখা দিয়েছে। সংস্কারে তেমন ফল হয়নি। প্রায় আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে হাসপাতাল ভবন। সংস্কার কাজের টাকায় ভালো মানের নতুন একটি ভবনই করা যেতো।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী (ডিএন-২) হাবিবুর রহমান বলেন, সংস্কারকাজ সম্ভবত শেষ হয়েছে। কিন্তু বিল এখনো কিছু বাকি আছে। তবে কী পরিমাণ বাকি আছে বলতে পারব না। সংস্কার কাজে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি-না সেটিও বলতে পারব না বলে জানান তিনি।

তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী রমজান আলী জানান, ঠিকাদার কিভাবে কাজ করেছে, সেটি বলতে পারব না। কারণ আমি চলে আসার পরে বেশিরভাগ কাজ হয়েছে। তাই অনিয়ম হয়েছে কি-না জানা নেই। তবে টেন্ডারে কোনো অনিয়ম হয়নি বা অর্থ লুটের আশায় এটি করা হয়নি।

সদ্যবিদায়ী প্রধান প্রকৌশলী আফজাল হোসেন জানান, একতলা ভবন সংস্কারের জন্য এত টাকা ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু যেহেতু কাজটি টেন্ডারের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে, তাই সেটি আমাদের বাস্তবায়ন করতে হয়েছে। সংস্কারে কোনো অনিয়ম হয়নি বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আনোয়ারুল আলম বাবু বলেন, টেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ পেয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে সংস্কারকাজ সম্পন্ন করেছি।

মতিহার বার্তা ডট কম  ২৯ আগস্ট  ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply