রাজশাহী তানোর উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ইউএনও’র

রাজশাহী তানোর উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ইউএনও’র

 মতিহার বার্তা ডেস্ক: রাজশাহীর তানোর উপজেলা চেয়ারম্যানের নামে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

গত ২৭ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু জেলা প্রশাসক হামিদুল হকের কাছে চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিময়ম তুলে ধরেন। এরপর থেকেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বদলি করতে নিজের অনুসারীদের মাঠে নামিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না।

তবে উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দায় রশীদ ময়না দাবি করেন, অর্থ-বছর শেষ হওয়ার আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার পছন্দের লোকের নামে সরকারি বরাদ্দের অর্থ ডিডি করে রেখেছেন। তার কাছে কোনো টাকা রাখা হয়নি। অথচ নির্বাহী কর্মকর্তা তার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। এখন তিনি ভুলও স্বীকার করছেন বলে দাবি করেন।

জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, তিনি (ইউএনও) প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতে গেলে উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বাধা প্রদান করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান নিজেই সিন্ডিকেট করে গত কয়েক বছরে সরকারি গুদামে ধান, চাল এবং গম সরবরাহ করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ইউএনও প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে চাল কেনার উদ্যোগ নিলে উপজেলা চেয়ারম্যান বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালান।

এছাড়াও উপজেলা রাজস্ব উন্নয়ন তহবিল থেকে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বিভিন্ন রাস্তা মেরামতের নামে কাজ না করে ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা ছাড় করার জন্য ইউএনওর ওপর বিভিন্নভাবে চাপপ্রয়োগ করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। কিন্তু ইউএনও রাজি না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালান চেয়ারম্যান। এছাড়া একই অর্থ বছরে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য ১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। সেই টাকা উত্তোলন করে বিতরণ না করে নিজের কাছে গচ্ছিত রেখেছেন চেয়ারম্যান। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-বাড়ি এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেরামতের জন্য বরাদ্দ আসে ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। সেই টাকাও উত্তোলন করেছেন চেয়ারম্যান ময়না। নিজের কাছে গচ্ছিত রেখেছেন। কিন্তু বিতরণ করেননি।

জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো চিঠিতে আরও উল্লেখ করেন, উপজেলা পরিষদের কম্পিউটার অপারেটর তৌফিকুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর থানায় মোটরসাইকেল ছিনতাই মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। মামলাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান ময়না তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে দিচ্ছেন না। বরং তৌফিকুল ইসলামের বিভিন্ন অপকর্মে সহায়তা করছেন। এর ফলে সরকারি অফিসের শৃঙ্খলা ভঙ্গ হচ্ছে এবং উপজেলা প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিন।

উপজেলা চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপারে ইউএনও নাসরিন বানু বলেন, শিক্ষা বৃত্তি ও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আসা বরাদ্দের টাকা উত্তোলন হলেও বিতরণ হয়নি। এছাড়া অন্য অনিয়মসহ চেয়ারম্যানের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানিয়েছি। এখন এসব ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই ব্যবস্থা নেবেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, ‘আমার কাছে কোনো সরকারি টাকা গচ্ছিত নেই। উনি এটা প্রমাণ করতে পারবেন না। এছাড়া তৌফিকুল ইসলাম নামের কম্পিউটার অপারেটরের ব্যাপারে আমি খোঁজ নিচ্ছি। দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার বিরুদ্ধে ইউএনও যেসব অভিযোগ করছেন তা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এখন তিনিই (ইউএনও) তার সহকর্মীদের ধরেছেন বিষয়টি মীমাংসার জন্য।

মতিহার বার্তা ডট কম – ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply