রাজশাহী চারঘাটে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পেরে গৃহবধুর আত্নহত্যা

রাজশাহী চারঘাটে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পেরে গৃহবধুর আত্নহত্যা

চারঘাট প্রতিনিধি: রাজশাহীর চারঘাটে এনজিওর ও সুদের কিস্তির টাকা শোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করছে আসমা বেগম(৪২) নামে এক গৃহবধু। তিনি উপজেলার তালবাড়িয়া গ্রামের আইয়ুব আলীর স্ত্রী।এনজিও এবং সুদের টাকা দিতে না পারায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানা গেছে।

স্বজনরা জানান, আসমা বেগম কয়েকটি এনজিও এবং সুদ ব্যাবসায়ীর কাছে খেলাপি ছিল। কিস্তির টাকা দিতে না পারায় পাওনাদাররা ও এনজিও কর্মীরা আসমাকে নানা ভাবে হেনস্তা করছিল। তিনি উপায়ান্তর না পেয়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানান তারা।

জানা যায়,আসমা বেগম আশা,ব্র্যাক,গার্ক,দি­শা,সচেতন সহ প্রায় ৮টি এনজিও থেকে লোন নিয়েছিলেন। তিনি সুদের মহাজনদের কাছে থেকেও উচ্চ সুদে টাকা নিয়েছেন। উপজেলার কাঁকরামারী বাজারের তিনজন সুদের ব্যাবসায়ী কাছে থেকে ও একই গ্রামের একজন মহিলা সুদ ব্যবসায়ীর নিকট থেকে উচ্চ সুদে টাকা নিয়েছিলেন।

আরও জানা যায়, অতিরিক্ত ঋন ও সুদ ব্যবসায়ীর চাপের কারনে মৃত এই গৃহবধু দীর্ঘ ৮ মাস পলাতক ছিলেন। এর পরে গ্রামে ফিরে আসা তার ৭ দিন না হতেই সুদ ব্যবসায়ী ও এনজিও কর্মীরা তার বাড়ি গিয়ে টাকার জন্য চাপ ও হুমকি দিতে থাকে। আর এ কারনেই তিনি শেষ পর্যন্ত আত্নহত্যা পথ বেছে নিয়েছেন বলে স্বজনরা জানায়।

এদিকে সরেজমিনে ঐ এলাকায় গেলে এলাকাবাসী জানান, উপজেলার কাঁকরামারী বাজার কেন্দ্রীক সুদের রমরমা ব্যবসা জমে উঠেছে।

শুধু দিনমজুররা নয় অনেক চাকুরীজীবী ও ব্যবসায়ীও তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে চেক বন্ধক রেখে শতকরা ১৫ থেকে ২০ টাকা সাপ্তাহিক, মাসিক সুদের লাভের টাকা পরিশোধ করার শর্তে এই মহাজনদের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে থাকে।

এমনও অভিযোগ আছে ঋণগ্রহীতা কোনো ব্যক্তি মারা গেলেও মহাজনের সুদের টাকা না নিয়ে তাদের কর্মীরা ফিরেন না।

সুদের টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে তাদের পরিবারের অন্য সদস্যদের উপরেও নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন চারঘাট উপজেলা শাখার সভাপতি সাইফুল ইসলাম বাদশা বলেন, এনজিও ও মহাজনদের সুদের টাকা বিনিয়োগের কোন নীতিমালা নেই।

তাই তারা ইচ্ছা মত সুদ গ্রহণ করে চলেছে। ফলে এনজিও ও মহাজনী ঋণে গ্রামীণ অর্থনীতির পারিবারিক ব্যবস্থার উপর কঠিন ভাবে আঘাত হেনেছে।

উপজেলার কাঁকরামারী বাজারটা সুদের বাজারে পরিণত হয়েছে। ভবিষৎ এ এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আরো অনেক আসমা বেগমের এমন পরিণতি হবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে চারঘাট মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সমিত কুমার কুন্ডু বলেন, ঐ গৃহবধু জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলো বলে তার পরিবার জানিয়েছে। এ বিষয়ে একটা অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মতিহার বার্তা ডট কম – ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply