রাজশাহীতে ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র আশুরা উদযাপন

রাজশাহীতে ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র আশুরা উদযাপন

 নিজস্ব প্রতিবেদক: যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আজ মঙ্গলবার রাজশাহীতে পবিত্র আশুরা উদযাপন করছে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। সারাবিশ্বের মুসলমানদের কাছে আশুরার দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময়।

সারাদেশে ইসলাম ধর্মমতে, মহান আল্লাহ এই দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এই দিনেই পৃথিবী ধ্বংস হবে। বাংলাদেশে এটি সরকারি ছুটির দিন।

ইসলামের ইতিহাসে বিষাদময় কারবালাসহ নানা ঘটনার স্মরণে আরবি সনের হিজরি বছরের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখ পবিত্র আশুরা পালিত হয়।

মহররম অর্থ অধিক সম্মানিত। মহররম মাসের দশম দিনকে আশুরা বলা হয়। আশুরার দিনে বিশ্বে সংঘটিত অলৌকিক অনেক গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ঘটনার কারণে মুসলমানদের কাছে ১০ মহররম বিশেষভাবে মহিমান্বিত। শোকের প্রতীক হিসেবে বিশ্বজুড়ে মুসলমান সম্প্রদায় বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করেন।

আশুরা উপলক্ষে যথাযথ মর্যাদায় বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আজ নানা কর্মসূচি পালন করছে। এ উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী নগরীর শিরোইল কলোনী চার নম্বর রোড থেকে একটি শোক র‌্যালী বের হয়। র‌্যালিটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক দিয়ে হযরত তুরকান শাহ (র.) ও শাহ মখদুম (র.) এ মাজারে গিয়ে পৌঁছে। সেখানে তাদের রওজা মোবারকে মোনাজাত শেষে র‌্যালিটি আবার খাতুনে জান্নাত (রা.) এর দরবারে এসে শেষ হয়। শোক র‌্যালীতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয় তারা। এটি বের করে দরবারে মা খাতুনে জান্নাত (রা. আ.), তরিকায়ে নকশাবন্দী নামের একটি সংগঠন।নারী ও শিশুরাও মিছিলে যোগ দেয়।

আশুরা উপলক্ষে বাদ মাগরিব ৫ম জিকির, মিলাদ মাহফিল ও বার্ষিক ওরশ মোবারক অনুষ্ঠিত হবে। এর মাধ্যমেই আশুরা উদযাপনের পর্ব শেষ হবে।

উল্লেখ্য, ইসলাম ধর্মমতে, আশুরার দিনে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করা হয়েছিল। আশুরার দিন আল্লাহ পৃথিবীর প্রথম মানব হযরত আদম (আ.) কে সৃষ্টি করেছেন। এই দিনে আল্লাহ নবীদেরকে স্ব স্ব শত্রুর হাত থেকে আশ্রয় প্রদান করেছেন। এই দিন হযরত নুহ (আ.) এর প্লাবন শেষ হয় এবং নুহ (আ.) এর জাহাজ তুরস্কের ‘জুদি’ নামক পর্বতে গিয়ে থামে। আশুরার দিন হযরত ইব্রাহিম (আ.) জালিম বাদশাহ নমরুদের অগ্নিকুণ্ড থেকে নিরাপদে মুক্তি পেয়েছিলেন। এই দিন হযরত ইউনুস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। আশুরার দিনে হযরত আইয়ুব (আ.) দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।

আশুরার দিন হযরত সুলাইমান (আ.) তার হারানো রাজত্ব ফিরে পান। এইদিনে হযরত ইয়াকুব (আ.) হারানো ছেলে হযরত ইউসুফ (আ.) কে ৪০ বছর পর ফিরে পেয়েছিলেন। এইদিনে হযরত ঈসা (আ.) জন্মগ্রহণ করেন এবং এইদিনেই তাকে দুনিয়া থেকে আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়।

সর্বশেষ ৬৮০ খ্রিষ্টাব্দে এই দিনে ফোরাত নদীর তীরে ঐতিহাসিক কারবালা প্রান্তরে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা.) সপরিবারে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেন।    

মতিহার বার্তা ডট কম – ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply